‘ডব্লিউইএফে রামপাল ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন তোলার পেছনে ড. ইউনূসের হাত’

সুইজারল্যান্ডে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) সম্মেলনে রামপাল ইস্যু নিয়ে পরিবেশবাদীদের প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার পেছনে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের হাত দেখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইউনূস ও তার মতাদর্শের লোকজন টাকা দিয়ে পরিবেশবাদীদের দ্বারা এই প্রশ্ন উত্থাপন করিয়েছেন বলে ধারণা প্রধানমন্ত্রীর। তবে প্রধানমন্ত্রীর কড়া জবাবে পরিবেশবাদীরা এই ইস্যু নিয়ে তেমন পাত্তা পাননি বলে জানান শেখ হাসিনা।খবর ঢাকাটাইমসের।

সুইজারল্যান্ড সফর শেষে শনিবার সকালে দেশে ফেরার পর গণভবনে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা যান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন বলে নিশ্চিত করেছেন সেখানে উপস্থিত একাধিক নেতা।

প্রথমবারের মতো ধনী ও ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের সংগঠন হিসেবে পরিচিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সাধারণ সভায় যোগ দিতে গত ১৫ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে যান প্রধানমন্ত্রী। ১৭ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ডাভোসে ডব্লিউইএফের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পরিবেশবাদী আল গোর রামপাল প্রসঙ্গ তুলে আনেন। অনুষ্ঠানে আল গোর বলেন, গত বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত সৌরশক্তির প্যানেল স্থাপনকারী দেশ ছিল। কিন্তু এখন সেই গতি ধীর হয়ে গেছে। এখন সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল সুন্দরবনে পরিবেশ দূষণকারী একটি নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। হাজার হাজার মানুষ এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে।

তবে জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে রামপাল ঘুরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের পরিবেশ-প্রকৃতিসহ যেকোনো ইস্যুতে তার চেয়ে বেশি আর কেউ চিন্তিত থাকেন বলে তিনি মনে করেন না। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার সরকার দেশের ক্ষতি হবে এমন কোনো পদক্ষেপ কখনোই নিতে পারে না। আমি দেশের প্রধানমন্ত্রী। দেশের প্রতি আমার মায়া এবং দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। দেশের সামান্যতম ক্ষতি হবে এমন কোনো কাজ আমি হতে দেব না।’

সাক্ষাৎকালে যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল রামপাল নিয়ে আল গোরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ তোলেন। তখন শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইউনূস সাহেবদের অনেক টাকা, টাকা খরচ করে তারা এসব বলাইছে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমিও বিশ্ব নেতাদের, পরিবেশবাদীদের চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলে এসেছি আপনারা পরিবেশবাদীরা বাংলাদেশে আসেন-আমরা ঘুরে ঘুরে সব দেখাব। পৃথিবীর যেকোনো পরিবেশবাদী আসতে পারেন।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগে তো এসব সম্মেলনে বাংলাদেশ দাওয়াত পেত না। এখন বাংলাদেশের আর্তসামাজিক উন্নয়ন দেখে বিদেশিরা অভিভূত। তাই তারা বাংলাদেশের ব্যাপারে আগের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করেছে।’

গণভবনে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রায় ১০ মিনিট তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এসময় দলীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা।

এসময় কেন্দ্রীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রী ও তার বোন শেখ রেহানার বরফের দেশ সুইজারল্যান্ডে বরফ খেলায় অংশ নেয়া এবং ছবি তোলার বিষয়টি নিয়ে প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বরফের দেশে গেলাম তাই ছবি তুললাম’। তিনি বলেন, ‘অ..নে..ক.. ঠান্ডা। মাইনাস থেকে প্লাসে আসলাম।’

এসময় আগামী ২৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান নিয়ে কথা বলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করে শেখ হাসিনা বলেন, অনুষ্ঠানে সবাইকে একটু একটু বক্তব্য রাখতে দিও। আর অনুষ্ঠানের খরচ সাবেক ছাত্র নেতাদের কাছ থেকে নিও।



মন্তব্য চালু নেই