ঠাণ্ডা মাথায় নিজের সন্তানদের খুন করেছেন যেসব পিতা!

একটি মানুষের জীবনের প্রথম আদর্শ হলো তার বাবা। কিন্তু বিধাতা যেমন সবাইকে এক রকম করে তৈরি করেন না, তেমনি সব পিতাও একরকম হয় না। হ্যাঁ, এমনও মানুষ আছেন যারা একেবারে ঠাণ্ডা মাথায় একের পর এক সন্তানকে খুন করে গেছেন, খুন করেছেন নিজের প্রিয়তমা স্ত্রীকেও। দুর্বল হৃদয়ের মানুষ না হলে জেনে নিন এইসব পাষণ্ড খুনি পিতাদের কথা। তবে হ্যাঁ, দুর্বল মনের মানুষেরা ভুলেও এই লেখাটি পড়তে যাবেন না।

১) রক্তাক্ত ডিসেম্বর

১৯২৯ সালের ডিসেম্বরে দরিদ্র চার্লি লসন নিজের স্ত্রী ও সাত সন্তানকে ক্রিসমাসের পোশাক কিনে দেন। এরপর ক্রিসমাসের সকালে তিনি শটগান নিয়ে খুন করে যান একের পর এক। নতুন পোশাক পরা অবস্থায় খুন হন তারা, কেবল ১৬ বছর বয়সী এক পুত্র সন্তান বেঁচে যায়। এরপর তিনি মৃতদেহগুলোকে একসাথে জড়ো করে ঠেস দিয়ে রাখেন পাথরের ওপর। এরপর ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন চার্লি। অনেকে মনে করেন এই খুনি পিতা নিজের কন্যাসন্তান, মারি-এর সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন। মারি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যাবার পর সব জানাজানি হয়ে যাবার ভয়ে তিনি এই ভয়াবহ খুনগুলো করেন।

২) শীতল দুঃস্বপ্ন

১৯৫৯ সালে সবচেয়ে ছোট দুই বাচ্চাকে ঘুম পাড়িয়ে নিজের ঘরে যান ডক্টর হ্যারল্ড পেরেলসন। হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেন নিজের স্ত্রী-কে। এরপর একইভাবে ১৮ বছর বয়সী কন্যাকে মারতে গেলে সে পালিয়ে বাঁচে। চিৎকার শুনে ছোট বাচ্চারা জেগে গেলে ডক্টর পেরেলসন তাদের বলেন এটা ছিলো দুঃস্বপ্ন। এরপর তিনি এক গ্লাস এসিড পান করে আত্মহত্যা করেন। ধারণা করা হয় আর্থিক সমস্যায় পড়ে মানসিক চাপ থেকে এই কাজ করেন তিনি।

৩) শেষ ক্রিসমাস

১৯৮৪ সালে রোনাল্ড জিন সিমনস গুলি করে, শ্বাস রোধ করে এবং পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেন নিজের স্ত্রী ও সন্তানদের। এরপর তাদেরই খোঁড়া এক গর্তে ফেলে দেন এসব মৃতদেহ। এরপর তিনি লুকিয়ে থাকেন আরো ৭ জন আত্মীয়কে খুন করার উদ্দেশ্যে। ক্রিসমাস যাপনের জন্য এই বাড়িতে এলে এক এক করে সবাইকে খুন করেন তিনি। এরপর তিনি একটি বাড়ে গিয়ে কিছু সময় কাটান। বার থেকে বাড়িতে ফিরে তিনি বিয়ার পান করতে করতে টিভি দেখেন। এ সময়ে তার চারপাশে সাজানো ছিলো তার পরিবারের মানুষের মৃতদেহ। এখানেই শেষ নয়। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার আগে আরো তিনজনকে গুলি করেন তিনি। এর মাঝে ছিলো এমন এক নারী যার থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন তিনি। ১৯৯০ সালে লিথাল ইনজেকশন প্রয়োগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। তার মৃতদেহ নিয়ে যাবার মতো কোনো স্বজন ছিলো না। তাকে একটি চিহ্নহীন কবরে সমাহিত করা হয়।

৪) মোস্ট ওয়ান্টেড

১৯৭১ সালের ঘটনা। জন লিস্ট নামের এই ধর্মান্ধ পিতা নিজের সন্তানদের নিয়ে ভয়ে ছিলেন। তিনি ভাবতেন তারা এই পৃথিবীতে সৎভাবে বাঁচতে পারবে না, শয়তানের প্ররোচনায় কোনো না কোনো খারাপ কাজ করে ফেলবে। মৃত্যু হলেই বরং তারা স্বর্গে যেতে পারবে। এই বিশ্বাস থেকে তিনি মেরে ফেলেন তার দুই সন্তান, স্ত্রী এবং নিজের মা-কে। এরপর তিনি নিজের পুত্রের ফুটবল খেলা দেখতে যান। তাকে বাসায় নিয়ে এসে কমপক্ষে ১০ বার গুলি করেন তার শরীরে। এরপর পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য সব পারিবারিক ছবি থেকে নিজের চেহারা ছিঁড়ে ফেলে পালিয়ে যান তিনি। পুলিশ এসব মৃতদেহ উদ্ধার করে এক মাস পর। জন লিস্টের কোনো ছবি না থাকায় তাকে খুঁজে বের করা যায় ১৯৮৯ সালে। তিনি রবার্ট ক্লার্ক ছদ্মনামে আত্মগোপন করে ছিলেন এতোদিন।

৫) রক্তপিপাসু

২০০৪ সাল। মার্কাস ওয়েসন এর বাড়িতে তলব করা হয় পুলিশকে। এ বাড়ির দৃশ্য দেখে আত্মা শুকিয়ে যায় তাদের। এ পরিবারের নয়জন সদস্যকে একটি ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাদের চোখে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘরে সাজানো ছিলো কয়েকটি অ্যান্টিক কফিন। খুন হওয়া মানুষের মধ্যে কারও বয়স ছিলো ২ বছরেরও কম। ১৮ টি সন্তান ছিলো ওয়েসন এর। পরিবারে একটি গোপন কাল্ট বা ধর্ম চালু করেছিলো সে। নিজের কন্যা এবং ভাগনীদের বিয়ে করতো সে। ওয়েসনকে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে সে দাবি করে, সে এবং তার পরিবার হলো ভ্যাম্পায়ার।

তথ্য সূত্র-
5-scariest-killer-dads-youd-never-want-to-meet- firsttoknow.com



মন্তব্য চালু নেই