টেকনাফে ভয়াবহ লোডশেডিং, জনদূর্ভোগ চরমে

ফয়েজুল ইসলাম রানা, টেকনাফ: টেকনাফে ইদানিং লোডশেডিংয়ের প্রকট আকার ধারণ করেছে। দিন দিন অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে সরকারের। স্থানীয় লোকজন জানায়, সারা বাংলাদেশে লোডশেডিং এর মাত্রা শূণ্যের কোটায় চলে আসলেও কিন্তু টেকনাফে তা দিন দিন অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। উন্নতির কোন লক্ষণ নেই। টেকনাফ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এর ব্যাপারে যেমনি কোন মাথা ব্যাথা নেই তেমনি কোন প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।

স্থানীয়রা জানায়, টেকনাফ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি দিন দিন গ্রাহকের সংখ্যা বাড়াচ্ছে। কিন্তু চাহিদার ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে টেকনাফে বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ২২হাজার। এদের বিদ্যুতের প্রয়োজন রয়েছে প্রায় ১০ মেগাওয়াটের কাছাকাছি। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২.৫মেগাওয়াট। তাও বন্টনের ক্ষেত্রে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈষম্য নীতি। টেকনাফে ৪টি ফিডারে ভাগ করা হয়েছে।

ফিডার গুলো হচ্ছে, পৌর ফিডার, সী-বীচ ফিডার, সাবরাং ফিডার ও হ্নীলা ফিডার। প্রশাসন ও সরকারের উর্ধতন ব্যক্তিদেরকে দেখানোর জন্য পৌর ফিডারে বিদ্যুতায়ন করে রাখে। বাকী ফিডারে ঘন্টার পর ঘন্টা, দিনের পর দিন এমন কি রাতের পর রাত আসলেও বিদ্যুতায়ন করে না বলে স্ব-স্ব ফিডারের লোকজন ক্ষোবের সাথে জানায়। এ ছাড়া জরুরী গুরুত্বপূর্ণ জনকল্যাণার্থে ব্যবহৃত টেলিফোন বা মোবাইল নাম্বার যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, থানা ও এ্যাম্বুলেন্সের মোবাইল নাম্বার সবসময় সচ্ছল থাকার কথা। এমন কি রিসিভ ও করতে হয়। কিন্তু টেকনাফের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জরুরী মোবাইল ও ফোন নাম্বার যথাক্রমে ০১৭৬৯৪০১০৫২ ও ০৩৪২৬৭৫০১৫ ঘন্টার পর ঘন্টা কল করার পরও রিসিভ করেনা। যদিও বা ভাগ্যে জুটে রিসিভ করা হলে কখন বিদ্যুৎ আসবে সঠিক কথা বলে না এবং মিথ্যার বড় ঝুলি নিয়ে বসে।

এর ব্যতিক্রম হলে অশ্লিল ভাষায় গ্রাহকদেরকে গাল মন্দ করে বসে। গ্রাহকেরা ক্ষোভের সাথে জানায়, আমাদের টাকার উপর বেতন নিয়ে চাকুরী করে আমাদেরকে শাসায়। এটা কোন দেশের আইন। সূত্রে জানায়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি একটি বেসরকারী সংস্থা। সকল গ্রাহকের সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে সরকার থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করে ব্যবসা করছে। এ প্রতিষ্ঠান সকল বিদ্যুৎ গ্রাহকের টাকা দিয়ে পরিচালিত। এর লভ্যাংশের টাকা দিয়ে সকল পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা কর্মচারীর বেতন হয়।

অথচ এ কর্মকর্তা কর্মচারীগণ গ্রাহকদের সঞ্চয়ের টাকা থেকে বেতন নিয়ে পল্লী বিদ্যুতের নামে ব্রিটিশের নীল চাষ করেছে। জেলার মধ্যে পিডিবি ও ডেসা লোডশেডিং ছাড়ায় গ্রামাঞ্চল সহ বিদ্যুতায়ন করতে পারলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এর ব্যতিক্রম কেন এলাকার লোকজন জানতে চাই। এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈষম্য নীতি থাকা উ”িত নহে। কিন্তু টেকনাফে বৈষম্য নীতি অবলম্বন করে শুধু মাত্র পৌর ফিডারে বিদ্যুতায়ন করে বাকী ফিডারে ঘন্টার পর ঘন্টা অন্ধকারে রাখে।

এছাড়া আবার কোন কোন ক্ষেত্রে এলাকার সাংসদের টেকনাফে অবস্থানের কথা বলে দিবা-রাত্রী ৩টি ফিডার বিদ্যুৎ বন্ধ রাখে। এ ব্যাপারে টেকনাফে অবস্থানরত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার বলাই মিত্রের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানায়, কক্সবাজার জেলা আমাদেরকে প্রয়োজন মাফিক বিদ্যুৎ দিচ্ছেনা বিধায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। অন্য ফিডারে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ বন্ধ ও সিডিউল রাখা হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।

এলাকার সচেতন মহল জানায়, আমরা মনে করতাম মাইনেরেটি লোকজন সরকারের লোকজন। কিন্তু না টেকনাফের ডিজিএম এ সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার পথে। তিনি যদি সত্যকার সরকারের ভাবমুর্তি উজ্জল করার মনোভাব থাকত নিশ্চয় টেকনাফের বিদ্যুতের সমস্যা গুলো সমাধানের ব্যবস্থা নিতেন। কিন্তু তিনি উপজেলা প্রশাসনকে তাপ-বিদ্যুৎ দিয়ে মুখ বন্ধ রেখে এলাকার ২২হাজার গ্রাহকদেরকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে সরকারের ভাবমুর্তি বিনষ্ট করে চলেছে।

এলাকার সচেতন মহলের দাবী বর্তমান টেকনাফ পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম টেকনাফে যতদিন অবস্থান করবেন ততই দিন এলাকার বিদ্যুতের উন্নয়ন হবে না বরং অবনতি হবে। তাই তাকে অবিলম্বে বদলী করা হউক। না হয় এলাকার ২২হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই