টিভি সিরিয়ালের যে বিষয়গুলো আপনার নজরে অবশ্যই পড়তে বাধ্য

টেলিভিশনে বিভিন্ন মেগা ধারাবাহিক দেখেন নিশ্চয়ই। সন্ধে থেকে রাত, পছন্দের সিরিয়াল দেখার জন্য বাড়িতে টিভি-র রিমোট নিয়ে রীতিমতো লড়াই চলে।

একই সময়ে আলাদা আলাদা চ্যানেলে পছন্দের ধারাবাহিক। কোনটা ছেড়ে কোনটা দেখবেন। আগের দিন রাতে সবকটা দেখা না হলে পরের দিনের রিপিট। আর যাঁরা এই মেগা ধারাবাহিকগুলি দেখেন, কিছু বিষয় তাঁদের নিশ্চয়ই নজর এড়ায় না। প্রিয় ধারাবাহিকে চোখ রাখার সময়ে আপনারও চোখে পড়েছে—

১. পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, সিরিয়ালের নায়িকা বা মহিলা চরিত্ররা রান্নাঘরে থাকুন বা ঠাকুরঘরে। অথবা বেডরুমের নায়কের সঙ্গে রোম্যান্স করুন। সাজগোজ হবে দুর্গাপুজোয় ঠাকুর দেখতে যাওয়ার মতো।

২. ধারাবাহিকের নায়ক বা পুরুষ চরিত্রদের আয়ের উৎস শুধু মুখেই শুনবেন। ধারাবাহিকে কোনও সময়ে তাঁদের কাজের জায়গায় দেখতে পাবেন না। ধারাবাহিকের পুরুষ চরিত্ররা যত বড় ব্যবসায়ী বা চাকুরীজীবী হোন না কেন, গল্পের চাহিদা মেনে সমস্ত পারিবারিক কলহের সময়ে অবধারিতভাবে তাঁরা সেখানে উপস্থিত থাকবেন।

৩. ধারাবাহিকের নায়ক-নায়িকা বিবাহিত হলে তাঁদের বিবাহিত জীবন যতই সুখের হোক, অবধারিতভাবে তৃতীয় কোনও নারী বা পুরুষ এসে তাঁদের জীবনে অশান্তি তৈরি করবেন। এরকমটা অবশ্য একাধিকবার হবে। বারবার স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভাঙবে এবং জোড়া লাগবে। এবং তত ধারাবাহিকের এপিসোড বাড়বে।

৪. ধরুন, খুব উত্তেজনার একটা মুহূর্ত। শ্বাশুড়ি রেগে গিয়ে বৌমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘‘অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে দেরি হল কেন?’’ বৌমা সেই উত্তর দেওয়ার আগে অবশ্য পরিবারের ননদ, ভাসুর, জা, দেওর, শ্বশুরমশাই, বাড়ির কাজের লোক— সবার মুখ একবার ক্যামেরায় ধরা হবে। পিছনে চড়া সুরে বাজনা বাজবে। এর পরে বৌমা আমতা আমতা করে উত্তর দেবেন, কিন্তু বিরতির পরে!

৫. উত্তর বা দক্ষিণ কলকাতা নয়। যৌথ পরিবার এখন সবথেকে বেশি দেখা যায় মেগা ধারাবাহিকে। এবং পরিবারের আত্মীয়, অনাত্মীয়দেরও সবসময়ে মূল পরিবারের সঙ্গেই দেখতে পাবেন। এর পরে ধারাবাহিকে চরিত্রের সংখ্যা এমন ভাবে বাড়তে থাকবে, ফ্যামিলি ট্রি তৈরি করলে মুঘল সাম্রাজ্যও লজ্জা পাবে।

৬. ধারাবাহিকের আরও একটি ঈর্ষণীয় বিষয় হল কাজের লোক বা পরিচারক। সাধারণ মানুষ যখন বাড়ির কাজের লোকের নানা চাহিদা, আবদার এবং ছুটির আবেদন নিয়ে ট্রেনে বাসে গজগজ করছেন, তখন ধারাবাহিকের পরিচারক, পরিচারিকারা বছরের পর বছর একই বাড়িতে দিব্যি কাজ করে যান। না ছুটি, না মাইনে বাড়ানোর দাবি। হাসি মুখে সবসময়ে পরিবারের সঙ্গে থাকেন তাঁরা।

৭. হালফিলের প্রবণতা হল, নায়ক উচ্চশিক্ষিত এবং আধুনিক হবেন। আর নায়িকা হবেন কোনও গ্রাম্য চরিত্র। পড়াশোনা বলতে ‘ক’ লিখতে কলম ভাঙার অবস্থা। কিন্তু কোনওভাবে তাঁদের প্রেম বা বিয়ে হবে। এর পরে শহরে এসে যাবতীয় প্রতিকূলতা জয় করে নায়িকা ন্যূনতম এমএ, এমএসসি পাশ করবেন। আর এত পড়াশোনা করতে নায়িকার অন্তত কয়েকবছর সময় লাগবেই। ততদিনে ধারাবাহিকের ৫০০ পর্ব অন্তত নিশ্চিত।



মন্তব্য চালু নেই