১০ কাউন্সিলরের অপসারনের আবেদন

ঝালকাঠি পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ মন্ত্রনালয়ের

ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র আফজাল হোসেনকে অপসারনের দাবীতে ১০ কাউন্সিলরের আনিত অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে জেলা প্রশাসকে তদন্ত পূর্বক মতামত সহ প্রতিবেদন প্রদানের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় নির্দেশ দিয়েছে। সোমবার ঝালকাঠি জেলা প্রশাসককে প্রেরীত জরুরী ফ্যাক্স বার্তায় মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-১ শাখার উপসচিব মোঃ খলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত ফ্যাক্স বার্তায় নির্দেশ ক্রমে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বরাবরে ফ্যাক্স বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর -১ শাখার ৪৬.০৬৩.০২৭.০১.০০.০০৭.২০১৩-৮৩ নং স্মারকে প্রেরীত পত্রে উল্লেখৈ করা হয় বিভিন্ন অভিযোগে মেয়র আফজাল হোসেনকে অপসারনের দাবীতে ১০ কাউন্সিলরের ৩০ নভেম্বর ২০১৪ তারিখ আনিত অনাস্থা আবেদন করা হয়েছে। সূত্রে বর্নিত বিষয়ে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ৩৮ ধারা অনুযায়ী কাক্রম গ্রহন পূর্বক মতামত সহ প্রতিবেদন প্রেরনের জন্য নির্দেশ ক্রমে অনুরোধ করেন। জেলা প্রশাসককে প্রেরিত পত্রের অনুলিপি প্যানেল মেয়র-৩ কাউন্সিলর লতিফা হেলেন গং কেও প্রদান করা হয়েছে।
১০ কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় সচিব ও স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-১ শাখার উপসচিব বরাবর গত ৮ ডিসেম্বর ৭টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ঝালকাঠি পৌর মেয়র আফজাল হোসেনকে অপসারনে লিখিত আবেদন জানান। ১০ কাউন্সিলর মেয়র আফজালের বিরুদ্ধে গত ৩০ নভেম্বর অপসারন আবেদন প্রদানে একমত হওয়ার পর লিখিত অপসারন ও অনাস্থা আবেদনের অনুলিপি বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের নিকটেও প্রদান করা হয়েছে।
কাউন্সিলররা অভিযোগে উল্লেখ করেছে, পৌর মেয়র আফজাল হোসেন ঝালকাঠি পৌরসভার ১০ নির্বাচিত কাউন্সিলরকে উপেক্ষা করে অসৎ উদ্দেশ্যে ২০১৪ সালের ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার গরীব-অসহায় মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ চাল নামমাত্র বিতরন করে সিংহভাগ চাল আত্মসাৎ করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১০ কাউন্সিলরের বিগত ১৫ মাসের সম্মানী ভাতা প্রদানে বাধা প্রদান করে গুরুত্বর অসৎ আচারন করে আসছেন। বিগত ১৫ মাসে পৌরপরিষদের মাসিক সভায় অংশ গ্রহন না করে দুই কাউন্সিলরকে হাতে রেখে খেয়াল খুশী মতো মুলতবি সভা করে পৌরপরিষদ কে অকার্যকর করে রেখেছেন। মেয়র আফজাল পৌরপরিষদের সিদ্ধান্ত বা মতামতকে তোয়াক্কা না করে বেআইনী ভাবে পৌরসভার তহবিল থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন।
পৌর বিধি ও আইন লংঘন করে পৌরপরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়াই ক্ষমতার অপব্যবহার করে দরপত্র কমিটি, ইজারা টোল ইত্যাদি আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তিনি ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের বাজেট প্রনয়নের জন্য পৌরপরিষদের কোন বিশেষ সভা না করে একক সিদ্ধান্ত বলে সম্পূর্ন বেআইনী ভাবে নিজের খেয়াল-খুশী মতো বাজেট প্রনয়ন করেছেন। এছাড়া মেয়র আফজাল ‘আর্থিক সাহায্য প্রদানের নামে’ দীর্ঘ পনের মাসে বৈধ পৌরপরিষদের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে লাখ লাখ টাকা প্রদানের নামে আত্মসাৎ করে আসছেন। তাই এসব অসদাচরন, ক্ষমতার অপব্যবহার, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারীতার ও বেআইনী কর্মকান্ডের কারনে মেয়র আফজাল কে অপসারনের জন্য ১০ কাউন্সিলর সর্বসম্মত ভাবে অনাস্থা প্রস্থাব গ্রহন করায় এ ব্যাপাওে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী করেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ঝালকাঠি পৌর কার্যালয়ে মেয়র আফজাল হোসেন গ্রুপ ও ১০ কাউন্সিলর গ্রুপের মধ্যে সহিংস ঘটনা ও মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা সহ শহরে ঝাড়– মিছিল করা হয়। এ ঘটনার জন্য মেয়র আফজাল তাকে হত্যা চেষ্টার নেপথ্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর নির্দেশ দিয়েছেন বলে সরাসরি অভিযোগ তোলেন। ১৫ জানুয়ারী ঝালকাঠি আদালত থেকে মেয়র ও তার সমর্থকরা জামিন লাভের পর নিজের নিরাপত্তা ও পৌরকাউন্সিলরদের অবৈধ প্রবেশ রোধে থানায় জিডি সহ প্রশাসনের উর্ধতন মহলে লিখিত আবেদন করেন।#
আজমীর হোসেন তালুকদার, ঝালকাঠি।



মন্তব্য চালু নেই