অ্যাজমা হাসপাতালের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে প্রতারণা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে চিকিৎসক সহ ৭প্রতারক গ্রেফতার:

বৃহস্পতিবার বিকালে অ্যাজমা হাসপাতালের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার নিশ্চিন্তা বাজারে প্রতারণা করে কমপক্ষে ১৫ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে আটক করে ডাক্তার সহ ৭প্রতারককে এক বছর করে কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)আব্দুল্লাহেল বাকী এ আদেশ দেন।

দন্ডপ্রাপ্তরা হলো কথিত ওই অ্যাজমা হাসপাতালের ব্যবস্থাপক সুলতান মাহমুদ, কর্মকর্তা ফারুক হোসেন,ডাক্তার রাশেদা বেগম, সুপারভাইজার নাসিমা এজাজ, কোষাধ্যক্ষ রোখসানা বেগম,ওষুধ সরবরাহকারী মাসুদ রেজা ও শহিদুল ইসলাম।

জানা গেছে,বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বড়িয়াহাট এলাকার অ্যাজমা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান একরাম হোসেন জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার নিশ্চিন্তা বাজারে মাস্টার প্লাজায় এ্যাজমা হাসপাতাল চালু করে। সেখানে জেলার ৩২টি ইউনিয়ন ও ২৮৮টি ওয়ার্ডে চাকুরি দেয়ার নাম করে এলাকার সহজ সরল নারীদের কাছ থেকে প্রায় ১০লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ছাড়া ৫টি উপজেলায় কর্মকর্তা পদে চাকুরি দিয়ে লোভনীয় বেতন দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেয় আরো ৫ লাখ টাকা। কথিত ওই অ্যাজমা হাসপাতালে প্রতি মাসে প্রায় ৬হাজার রোগী সরবরাহ করার শর্তে ৩২টি ইউনিয়নে ৩২জন সুপারভাইজার ও প্রতিটি ওয়ার্ডে ২শ’৮৮ জন সেবিকার নির্দিষ্ট হারে বেতনের নিশ্চয়তা দেয়া হয়। সে অনুযায়ী নিয়োগ পেয়ে বৃহস্পতিবার সুপারভাইজার ও সেবিকারা স্ব-স্ব এলাকা থেকে রোগী নিয়ে নিশ্চিন্তা বাজারের ওই অ্যাজমা হাসপাতালে আসেন।

ইতোমধ্যে এ চক্রের প্রতারনার অভিযোগ পেয়ে ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহেল বাকী, জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক নুর মোহাম্মদ সহ পুলিশ নিয়ে নিশ্চিন্তা বাজারের ওই হাসপাতালে এসে কর্তৃপক্ষের কাছে বৈধ কাগজপত্র দেখতে চান। তারা কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হলে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কথিত ওই হাসপাতালের ব্যবস্থাপক সুলতান মাহমুদ সহ উল্লেখিত ৭জন আটক করে প্রত্যেককে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। ওই সময় হাসপাতাল থেকে বেশ কিছু ওষুধ জব্দ করা হয়েছে।

কালাই উপজেলার মোলামগাড়ী বাজারের মহব্বত আলী অভিযোগ করেন, অ্যাজমা হাসপাতাল চালু করার কথা বলে অ্যাজমা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান একরাম হোসেন ২০১৩ সালেও এলাকার ২শতাধিক মানুষের কাছ থেকে অন্তত পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার কাছে ওই হাসপাতালের নামে এখনও সাইনবোডর্, ব্যানার সহ বেশ কিছু জিনিষপত্র আছে।ক্ষেতলালের আলমপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের শ্যামপুর গ্রামের সালমা বেগম জানান, প্রতি মাসে ২০জন রোগী সরবরাহ করার শর্তে অ্যাজমা হাসপাতালে তিনি সেবিকার চাকুরি পেয়েছেন। এ জন্য মাসে তাকে তিন হাজার টাকা বেতন দেওয়ার কথা। জামানত হিসেবে তাঁর কাছ থেকে এক হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।একই অভিযোগ করে ক্ষেতলালের শালবন এলাকার আলাউদ্দিন আলী জানান,বটতলী বাজারে অফিস করার কথা বলে অ্যাজমা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান একরাম হোসেন ২০১৩ সালে তার কাছ থেকেও নয় হাজার টাকা নিয়ে ব্যানার আর সাইনবোর্ড দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই