জেলা পরিষদ অকার্যকর : টিআইবি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বলছে প্রশাসনিক জটিলতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে বাংলাদেশের জেলা পরিষদগুলো অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

আজ সংস্থাটির একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে যে জেলা পরিষদ গঠন করা হয়েছিল সেখানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকাই এটি অকার্যকর হওয়ার অন্যতম কারণ।

এদিকে সরকার বলছে নির্বাচনের কোন প্রস্তুতি আপাতত সরকারের নেই।

স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের দিয়ে পরিচালনার লক্ষ্য নিয়ে তৈরি হয়েছিল জেলা পরিষদ।

“প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে জেলা পরিষদকে স্থবির করে রাখা হয়েছে। “

ড: ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি

একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের ৫জন নারী সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠনের কথাও বলা রয়েছে আইনে ।

কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশের তিনটি পার্বত্য জেলা ছাড়া বাকি ৬১ টি জেলা পরিষদ চলছে সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক দ্বারা।

কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান তাদের জেলার উন্নয়ন কাজ পরিচালনা প্রসঙ্গে বলছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে সমন্বয় করে উন্নয়ন প্রকল্প শুরু করতে তাদেরকে বেশ কিছু সমস্যায় পরতে হচ্ছে।

“এখন যাদের দিয়ে পরিষদ চালানো হচ্ছে তারা অনেক সম্মানিত ও দক্ষ।”

স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহ কামাল

তিনি বলছিলেন “ সব প্রকল্পের তালিকাগুলো সংসদ সদস্যের কাছ থেকে নিয়ে আসতে হয়, অনুমোদন করতে হয় উপজেলা চেয়ারম্যানদের বৈঠকে। এখানে উপজেলা চেয়ারম্যানরা তাদের এলাকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চান। এক্ষেত্রে সমন্বয় করতে খুব বেগ পেতে হয়”।

বাংলাদেশের জেলা পরিষদগুলো অকার্যকর হয়ে পরার কারণ এবং একে কার্যকর করার জন্য কিছু সুপারিশ নিয়ে আজ এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।

সংস্থাটির নির্বাহী প্রধান ইফতেখারুজ্জামান বলছিলেন নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা পরিষদ পরিচালিত হলে সেটি আরও শক্তিশালী হবে।

মি. ইফতেখারুজ্জামান বলছিলেন “ প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে জেলা পরিষদকে স্থবির করে রাখা হয়েছে। এক দিকে সরকারি কর্মকর্তারা তাদের ক্ষমতার বলয়ের জনগণের অংশীদারিত্বের বিষয়টি মানতে চাননা”।

২০১১ সালে জেলা পরিষদে নির্বাচন না দিয়ে- ৬১ টি জেলায় সরকার প্রশাসক নিয়োগ দিলো সে নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হয়।

সেময় পরবর্তী ছয়মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এমন খবর প্রকাশিত হয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে। কিন্তু এই নিয়োগের তিন বছর পরেও এখনো কোন নির্বাচন দেওয়া হয়নি।

স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহ কামাল বলছিলেন জেলা পরিষদ নির্বাচন দেওয়ার সিদ্ধান্ত সরকার এখন নেই।

তিনি বলেন, “ সরকারের জেলা পরিষদ নির্বাচন দেওয়ার কোন ভাবনা এখন নেই। আমরা মনে করি এখন যাদের দিয়ে পরিষদ চালানো হচ্ছে তারা অনেক সম্মানিত ও দক্ষ”।

টিআইবির এই প্রতিবেদনটি বলা হয়েছে জেলা পরিষদ আইন যেটি রয়েছে সেটিরও সীমাবদ্ধতা দূর করার জন্য কিছু সংশোধন করতে হবে। এর মধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে- জেলা পরিষদের কাজে হস্তক্ষেপ বন্ধ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই