জেনে রাখুন ইন্টারনাল ব্লিডিং এর উপসর্গগুলোকে

ইন্টারনাল ব্লিডিং শরীরের অভ্যন্তরে সংঘটিত হয় যা বাহ্যিকভাবে দেখা যায়না। পড়ে গেলে বা আঘাত পেলে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। যেহেতু ইন্টারনাল ব্লিডিং এর তেমন কোন তাৎপর্যপূর্ণ লক্ষণ প্রকাশ পায়না তাই বেশিরভাগ সময়ে অবহেলিতই থেকে যায়। সাধারণত ইন্টারনাল ব্লিডিং কম পরিমাণে হয়। কখনো কখনো এই রক্তক্ষরণ দ্রুত ও তীব্র হতে পারে এবং ফোলা সৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে ওই অংশের ত্বক বিবর্ণ হয়ে যায়। যদি এই ধরণের ব্লিডিং একসঙ্গে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হয় তাহলে চেতনা হ্রাস পেতে পারে। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের প্রধান কিছু লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নিই চলুন।

১। দুর্বলতা বা অবসাদ

যদি আপনি পড়ে যাওয়া বা আঘাত পাওয়ার কিছুদিন পর অনেক বেশি দুর্বল বা ক্লান্ত অনুভব করেন তাহলে আপনার ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া জরুরী। কারণ এটি ইন্টারনাল ব্লিডিং বা ইন্টারনাল ইনজুরির লক্ষণ হতে পারে।

২। চেতনা কমে যাওয়া

শরীরের যেকোন স্থানে ব্লিডিং হলে তা শরীরের স্বাভাবিক কাজে প্রভাব ফেলে এবং মস্তিস্কের কাজের উপর ও প্রভাব ফেলে। তাই চেতনা, মনোযোগ কমে যায় এবং এর সাথে সাথে মারাত্মক দুর্বলতা দেখা দেয়।

৩। ঝাপসা দৃষ্টি বা ডাবল ভিসন

মস্তিষ্কে আঘাতের ফলে যদি ইন্টারনাল ব্লিডিং হয় তাহলে দৃষ্টি শক্তির পরিবর্তন সৃষ্টি করতে পারে। যার ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া, দ্বৈত দৃষ্টির সমস্যা, চোখে ব্যথা হওয়া এবং চোখের পাতা ঝুঁকে পড়ার সমস্যা হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা সৃষ্টি হতেও দেখা যায়।

৪। খিঁচুনি

মস্তিষ্কে আঘাতের কারণে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের আর একটি লক্ষণ হচ্ছে খিঁচুনি হওয়া। যদি এই ধরণের কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

৫। তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব

বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হলে তন্দ্রালু ভাব দেখা যায় এবং তারা অনেক অলস বা অবসন্ন অনুভব করে। কারণ অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হলে হরমোনের কাজের পরিবর্তন হয় এবং বিভিন্ন অঙ্গে গ্লুকোজের সরবরাহেও পরিবর্তন হয়। তাই সঠিক কারণ জানতে চিকিৎসকের সাথে কথা বলাটা জরুরী।

৬। নিম্ন রক্তচাপ

অনেকেই জানেন না যে নিম্ন রক্তচাপ ইন্টারনাল ব্লিডিং এর ইঙ্গিত প্রদান করে। কারণ ইন্টারনাল ব্লিডিং এর ফলে রক্তনালী সমুহের মধ্যে রক্ত প্রবাহ প্রভাবিত হতে পারে। তাই যদি প্রায়ই আপনার মাথা ঘুরায় বা দাড়িয়ে থাকলে অচেতন হয়ে যান, তাহলে এই উপসর্গগুলো ইন্টারনাল ইনজুরিরই ইঙ্গিত প্রদান করে।

৭। কালো মল

সর্বশেষ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণটি হচ্ছে অন্ত্রে ইন্টারনাল ব্লিডিং হলে কালো বর্ণের মল নির্গত হয়। মলে রক্তের উপস্থিতির জন্যই এমন হয়। তাই এমন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা করানো ও চিকিৎসা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এছাড়াও ইন্টারনাল ব্লিডিং এর কারণে বমির সাথে বা কফের সাথে রক্ত আসতে পারে, ইউরিনের সাথে রক্ত যেতে পারে, জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে এবং পেটে ও বুকে ব্যথা হতে পারে। দুর্ভাগ্যবশত বেশিরভাগ ইন্টারনাল ব্লিডিং এর উপসর্গগুলো অন্য শারীরিক সমস্যার উপসর্গের মতো হওয়ায় সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য ডায়াগনোসিস করা অত্যন্ত জরুরী। তাই অবেহেলা না করে ডাক্তারের কাছে যান এবং পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিন।



মন্তব্য চালু নেই