জেনে নিন, বিশ্বের সর্বোচ্চ মূল্যের ১০টি বাইকের কথা (ছবি সহ)

যদি বলি, একটি বাইকের দাম ৮ কোটি টাকা, আপনি কিনবেন? এই টাকায় ঢাকা শহরে একটি বাড়ি হয়ে যায়। তাই বলে যে এত টাকায় মোটরসাইকেল বা বাইক বিক্রি হয় না, তা কিন্তু নয়। থাক, বাংলাদেশের কথা নাইবা বলি। কিন্তু বিশ্বে এমন অনেক ধনাঢ্য পরিবার বা ব্যক্তি আছে, যারা অর্থের চেয়ে প্যাশন ও ফ্যাশনকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তাদের কথা মাথায় রেখে বিশ্বের বড় বড় বাইক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান চড়া মূল্যের পণ্য বাজারে আনে। এবার আপনাদের জানিয়ে দিচ্ছি, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সর্বোচ্চ মূল্যের ১০টি বাইকের কথা।

00

১০। নেইম্যান মারকাস লিমিটেড এডিশন ফাইটার
বাইকটির দাম ১ লাখ ১০ হাজার ডলার। কনফেডারেট মোটর করপোরেশন এটির প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। স্টিল দিয়ে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেন দেখতে হয় নজরকাড়া। সত্যি দৃষ্টিগ্রাহী করে নিঁখুতভাবে তৈরি করা হয়েছে বাইকটি। রাস্তায় নিয়ে বের হলে মেজাজ ফুরেফুরে হয়ে যায়। তবে অল্পতেই যাদের বুক ধড়ফড় করে ওঠে, তাদের জন্য অবশ্য বাইকটি বিপদের কারণ হতে পারে। এটি চালাতে চাই শক্ত হৃদয়।

99

৯। কভেন্ট্রি ঈগল
কভেন্ট্রি ঈগল উড়ন্ত ঈগল নামে বেশি পরিচিত। এটি রয়েল ঈগল কোম্পানির তৈরি। প্রায় শতাব্দীকাল আগে থেকে এই জাতের বাইক বাজারে আছে। কিন্তু এখনো ‘রাস্তার রাজা’ নামেই টিকে আছে। এই বাইকের নির্দিষ্ট শ্রেণির ক্রেতা আছে। তারা অন্তত বিশ্বাস করে ‘ওল্ড ইজ গোল্ড’। সর্বোপরি এর দামই একে গোল্ডের মর্যাদায় রেখেছে। কভেন্ট্রি ঈগল কেনা যায় ১ লাখ ২০ হাজার ডলার দিয়ে। এক ডলার সমান ৮০ টাকা ধরলে দাম প্রায় কোটি টাকা (৯৬ লাখ টাকা)।

88

৮। হারলে ডেভিডসন রকার
হারলে ডেভিডসন মোটরসাইকেলের পাশাপাশি হারলে ডেভিডসন রকার মোটরসাইকেলটি আজো বাজারে সমহিমায় টিকে আছে। জার্মানির বিখ্যাত হাউস অব থান্ডার কোম্পানির এই বাইক এখন হারলে ডেভিডসন কোম্পানির দখলে। মোটরসাইকেলটির উৎপাদন রহস্য আজো জানা যায়নি। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এটি ৩৭ ডিগ্রি কোণে বাঁক নিয়ে চলতে পারে। দাম কোটির ঘরে। টাকার হিসাবে ১ কোটি ৪ লাখের মতো, যদি ১ ডলার সমান ৮০টাকা ধরা হয়।

77

৭। হিলডেব্র্যান্ড অ্যান্ড উল্ফমুলার
বিশ্বের প্রথম ইঞ্জিনচালিত মোটরসাইকেল। অনন্য হওয়ার জন্য আর কিছু দরকার পড়ে কি! বাইকপ্রেমীদের কাছে হিলডেব্র্যান্ড ও উল্ফমুলার অমূল্য রতন। বাইকটি এখন ব্যক্তিগত মালিকানায় সংরক্ষিত আছে। দুই সিলিন্ডারবিশিষ্ট চার স্ট্রোকের মোটরবাইকটি শুধু জন্ম ইতিহাসের কারণেই অমূল্য সম্পদে পরিণত হয়েছে। সবশেষ নিলামে এটি বিক্রি হয় ১ কোটি ২০ লাখ টাকায়।

66

৬। হাবলেস হারলে ডেভিডসন
ব্যয়বহুল মোটরসাইকেলের বাজারে হাবলেস হারলে একটি উজ্জ্বল নাম। এর মূল কাঠামো হারলে ডেভিডসনের আদলে তৈরি। হাবলেস হারলের ডিজাইন একদমই স্বতন্ত্র, যে কারণে অন্য মোটরসাইকেলের সঙ্গে তুলনা না করাই ভালো। দেখতে অসাধারণ, চালানোর মজাও আলাদা। তাই দামও সেই রকম চড়া, ১ কোটি ২৪ লাখের মতো।

55

৫। ইকোস ইএফ টিআই এক্সএক্স
দাম ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার কাছাকাছি। একটি মোটরসাইকেলের দাম এত টাকা! না, এখানেই শেষ নয়। এর চেয়ে অনেক বেশি দামের বাইক আছে। তবে ইকোস ইএফ টিআই এক্সএক্স মডেলের মোটরসাইকেলের দাম বেশি হওয়ার কারণ এর দৃষ্টিনন্দনতা। দেখতে খুবই সুন্দর। আর সৌন্দর্যের আরেক নাম তো সম্পদ। এর ইঞ্জিন অ্যালুমিনিয়ামের এবং তা ২২৫ অশ্বশক্তিবিশিষ্ট। বিশ্বের দ্রুতগতির মোটরসাইকেলগুলোর মধ্যে এটি একটি, যা ঘণ্টায় ২৫০ মাইল পথ পাড়ি দিতে পারে।

44

৪। দ্য লিজেন্ডারি ব্রিটিশ ক্লাসিক ব্ল্যাক
এটি কিনতে দাম পড়বে ৩ কোটি ২০ লাখের মতো টাকা। হাতে আছে? যদি থাকে তাহলে চড়তে পারেন বিরল মডেলের এই বাইকে। ২৫০ সিসির দুই সিলিন্ডারের এই মোটরসাইকেল আপনাকে হাওয়ায় ভাসিয়ে নিয়ে বেড়াবে। যুক্তরাজ্যে তৈরি হওয়া এই বাইক চালাতে অনেকে মুখিয়ে থাকে। কিন্তু সাধ্য আছে আর কত জনেরইবা। বিশ্বে চতুর্থ সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রি হয় এটি। আর একটি মজার বিষয় হলো- গতির রাজা হলেও বিক্রির সময় এর গতি কমিয়ে দেওয়া হয়, যেন দুর্ঘটনা না ঘটে।

33

৩। গোল্ড প্লেডেট কাস্টম চপার
আগে মূল্যটা শুনুন, তারপর ঠিক করুন গোল্ড প্লেডেট কাস্টম চপার কিনবেন কি না। দাম ৪ কোটি টাকা প্রায়। এটি দেখতে এতই সুন্দর যে, রাস্তায় নামাতে মন চাইবে না। মনে হবে শো পিচের মতো ঘরে সাজিয়ে রাখি। সোনার প্রলেপ দেওয়া ধাতব পাতের তৈরি এই মোটরবাইকটির জেল্লায় আপনার চোখে ধাঁধাঁ লেগে যাবে। মনে হবে পুরোটাই সোনারপাতের তৈরি। যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে মোটরসাইকেল প্রদর্শনীতে এটি দেখা যায়।

22

২। আল্ট্রা রেয়ার পরকুপাইন
প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা দাম! এত টাকায় মোটরসাইকেল কেনা ধনী সুখীর শখের খোরাক হতে পারে আর কি! যদিও টাকা থাকলেই তা কেনা সম্ভব নয়। কারণ পরকুপাইন গোত্রের বেশ কিছু বাইক থাকলেও আল্ট্রা রেয়ার পরকুপাইন তো একটিই আছে। যার স্থান হয়েছিল জাদুঘরে। কিন্তু জাদুঘরও আজ দোকানের মতো হয়ে গেছে। যখন তখন নিলাম হাঁকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় আল্ট্রা রেয়ার পরকুপাইন তৈরি করা হয়। যে কারণে এর ঐতিহাসিক মূল্যও কম নয়।

11

১। ওয়ান মিলিয়ন হারলে ডেভিডসন
১ মিলিয়ন ডলার দাম হওয়ায় হারলে ডেভিডসন মোটরসাইকেলটির নামের আগে ওয়ান মিলিয়ন যোগ করে এখন ডাকা হয় ওয়ান মিলিয়ন হারলে ডেভিডসন নামে। ১ ডলার সমান ৮০ টাকা ধরলে এটি কিনতে গুনে গুনে ৮ কোটি টাকা ছাড়তে হবে, যেনতেন বিষয় নয় কিন্তু। পাহাড় সমান অর্থ থাকতে হবে, সেই সঙ্গে মোটরসাইকেলের প্রতি চড়া উন্মাদনা, তাহলেই কেবল ৮ কোটি টাকার চকচকে বাইকটি আপনার হতে পারে। পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল এই মোটরসাইকেল দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। আর চড়লে মনে হবে বাতাসের ডানায় বসে ভেসে যাচ্ছি।

লেখক : আবু সাঈদ নয়ন, শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা কলেজ।



মন্তব্য চালু নেই