জেনে নিন খুশকির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো

ড্যানড্রাফ বা খুশকি মোটেই ভালোলাগার কোন বিষয় নয়। কারণ খুশকি বেশি হলে কাঁধের উপরে সাদা স্তর পড়ে যা খুবই অস্বস্তিকর এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে স্কিন ইনফেকশন বলে যা ত্বক, চুল এবং পুরো শরীরের জন্যই ক্ষতিকর। খুশকি আছে এমন ১০০ জনের মধ্যে ৫০ জন মানুষ মুখের ত্বকের সংক্রমনে ভুগে থাকে। আসুন তাহলে খুশকির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো জেনে নেয়া যাক।

১। যন্ত্রণাদায়ক
সময়ের সাথে সাথে খুশকি খুবই যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠতে পারে। এমন অবস্থা হয় যে আপনি মাথা চুলকানো থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারেন না। যা খুবই অস্বস্তিকর হয়ে উঠে। যদি আপনার শুষ্ক ত্বক হয় তাহলে খুশকির আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আপনাকে সচেতন হতে হবে। গরমের সময়ে ত্বক তৈলাক্ত রাখুন। খুশকির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বন্ধের জন্য ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

২। ব্রণ
ডা. মুকেশ বাত্রার মতে, শুষ্ক ত্বকের স্তর ত্বকের ছিদ্র গুলোকে বন্ধ করে দিতে পারে। যদি আপনার ত্বক ব্রণ উঠার জন্য উপযোগী হয় তাহলে খুশকি এই সমস্যাটাকে অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। আপনার চুল যেন মুখের উপরে এসে না পরে সেদিকে খেয়াল রাখুন। খুশকি মুখের ব্রণকে ছড়িয়ে দেয়। ফলে ঘাড়ে, চুলের সীমানায়, বুক ও পিঠের উপরের অংশে ছড়িয়ে যায়।

৩। মাথা চুলকানো
খুশকি হলে মাথার তালুতে অনেক বেশি মরা চামড়া তৈরি হয়। এর জন্য মাথার তালুতে অনেক বেশি চুলকানি হয়। যদি ঘরোয়া উপায়ে খুশকি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হয় তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

৪। পিঠের ব্রণ
ডারমাটোলজিস্ট ডা. এস এস টারসি এর মতে খুশকি পিঠের ব্রণ হওয়ার একটি কারণ। তাই পিঠের ব্রণ ভালো হওয়ার একটি ভালো পন্থা হচ্ছে এর অন্তর্নিহিত কারণ অর্থাৎ খুশকি দূর করার ব্যবস্থা নেয়া।

৫। চুল পরা
যদিও খুশকি সরাসরি চুল পড়ার সাথে সম্পর্ক যুক্ত নয়, তথাপি অবিরাম চুলকানির ফলে এটি হতে পারে। ট্রাইকোলজিস্ট ডা. অপূর্ব শাহ বলেন, “চুল পড়া এবং খুশকি উভয়েরই অন্তর্নিহিত কারণ হচ্ছে ডারমাটাইটিস(এক ধরণের মাথার তালুর ত্বকের সমস্যা)”।

৬। সোরিয়াসিস
খুশকির কারণে সোরিয়াসিস হতে পারে। সোরিয়াসিস হচ্ছে ত্বকের এমন একটি অবস্থা যে ত্বকের কোথাও কোথাও মোটা হয়ে লাল হয়ে যায়। এটি মাথার তালুতে, কানের পেছনের দিকে হতে দেখা যায়।

৭। চোখের সংক্রমণ
ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ ডারমাটোলজিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় যে, “ব্লেফারাইটিস চোখের একটি সাধারণ সংক্রমণ যা খুশকির কারণে হয়ে থাকে”। এই ধরণের সংক্রমণের ফলে চোখের পাতায় চুলকায় ও লাল হয়ে যায় ও যন্ত্রণার সৃষ্টি করে এবং চোখের পাপড়িতে খুশকির মত আঁশ হতে দেখা যায়।

৮। তেলতেলে চুল
আপনি যখন খুশকির সমস্যায় ভোগেন তখন মাথার তালুতে অতিরিক্ত তেল উৎপন্ন হয়। এর ফলে চুল তেল চিটচিটে হয়ে যায়। তাই নিয়মিত চুল ধুয়ে ফেলা উচিৎ।

৯। অ্যাজমা
খুশকির সবচেয়ে খারাপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে অ্যাজমা। খুশকি যখন পাউডারের মত ঝরতে থাকে তখন তা ফুসফুসের সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে। আপনি হয়তো এটা লক্ষ রাখতে পারেননা যে শ্বাস গ্রহণের সময় এটি আপনার ফুসফুসে প্রবেশ করে এবং অ্যাজমার লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে।
চিকিৎসা জগতে খুশকির কারণ ও প্রতিকার এখনো অজানা রয়ে গেছে। যদিও খুশকি দূর করার জন্য বিভিন্ন উপায় কার্যকরী প্রমানিত হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে খুশকির কোন চিকিৎসা করা হয়না। যদি আইব্রুতে, কপালে, নাকের পাশে ও থুতনিতে দেখা যায় তাহলে চিকিৎসা শুরু করা যায়।



মন্তব্য চালু নেই