জেনে নিন অন্তঃস্বত্বা অবস্থায় রোজা রাখার নিয়ম

সন্তানকে সুস্থভাবে পৃথিবীতে আনার জন্য মাকে অনেক কষ্ট করতে হয়। এই কষ্ট যেন জটিল কোনো সমস্যা না হয়, সেই দিকে খেয়াল রাখা উচিত। এই সময়ে একজন অন্তঃস্বত্বা মায়ের জন্য দরকার পরিবারের সব সদস্যের বাড়তি মনোযোগ। গর্ভকালীন সময়ে অনেক মা রোজা রাখেন। রোজা রাখলে খেয়াল রাখবেন, সন্তান ঠিকমতো নড়াচড়া করছে কি না, রক্তে চিনির পরিমাণ খুব বেশি কি না। এমনিতে তাঁদের নিয়মিত উচ্চরক্তচাপ, রক্তে চিনির পরিমাণ মাপতে হবে।

ঢাকার বারডেম হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রোনা লায়লা বলেন, ‘গর্ভবতী মায়েরা রোজা রাখতে পারবেন। তবে রক্তচাপ হঠাৎ করে বারবার কমে গেলে, বেশি পরিমাণে ইনসুলিন নিতে হলে, অতিরিক্ত পরিশ্রম হলে রোজা রাখা ঝুঁকিপূর্ণ। তবে রক্তচাপ, রক্তে চিনির পরিমাণ ঠিক থাকলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ বার সন্তান নড়াচড়া করলে (এই হিসাব একজন মায়ের ঘুমানোর সময়টা বাদ দিয়ে) রোজা রাখা যাবে। আর ইফতারের সময় বাসার বাইরের খাবার খাবেন না।’

অতিরিক্ত বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরানো, চোখে ঝাপসা দেখা, দুর্বল লাগা, বুকের মধ্যে বা পেটে জ্বালাপোড়া ভাব বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যাঁরা রোজা রাখবেন, তাঁরা ইফতারের সময় তেলে ভাজা খাবার বাদ দিয়ে ফল, সবজি-জাতীয় খাবার, ফলের রস খাবেন।

এ সময় অনেক মাকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেতে হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে সেসব ওষুধ রোজা রাখার জন্য অন্য সময়ে খেলে অসুবিধা হয় কিনা অবশ্যই জেনে নিতে হবে। ইফতারের পরে এক থেকে দেড় লিটার পানি অবশ্যই খাবেন। সেহরির সময়ে খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমাবেন না। কারণ, এ সময়ে অনেক মায়েদের হজম শক্তি কমে যায়। আর হঠাৎ করে এত সময় না খেয়ে থাকার জন্য অনেকের নানা রকম জটিলতার সৃষ্টি হয়।

ইফতারের পরে রাতের খাবারে ডাল, স্যুপ, অল্প মসলা দিয়ে তরকারি, তরকারির ঝোল খান। কাবাব, গরু খাসির মাংস, বোরহানি, রেজালা, এই ধরনের অতিরিক্ত তেল-জাতীয় খাবার বাদ দেবেন। রোজা থেকে হঠাৎ অতিরিক্ত ঘামছেন কি না, পা হাত ও মুখ ফুলে ওঠা, বুকের মধ্যে ব্যথা, চোখে দুটো দেখতে পাওয়া, এ ধরনের সমস্যা থাকলে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লেখক: চিকিৎসক



মন্তব্য চালু নেই