জুতো তো পরেন, কিন্তু জানেন কবে থেকে মানুষ জুতো পরা শুরু করেছে?

জুতো ছাড়া মানুষ কি এখন আর চলতে পারে? ঘরে বাইরে, পার্টি বা কর্মস্থলে জুতো পরতেই হবে। এছাড়া একজন মানুষের রুচি-পছন্দ-জীবনযাপন এবং মানসিক গড়নও অনেকটাই বোঝা যায় তার জুতো দেখে।

মানব সভ্যতার বিবর্তনে অন্যতম প্রধান ভূমিকায় রয়েছে জুতো। তবে এই জুতো ঠিক কবে থেকে মানুষ পরতে শুরু করেছে? আর প্রথম দিককার জুতোর ধরণই বা কেমন ছিল? সাম্প্রতিককালের একটি নৃতাত্ত্বিক গবেষণা দাবী করেছে, মোটামুটিভাবে প্রায় ৪০ হাজার বছর আগে মানুষ ‘পাদুকা’ পরতে শুরু করে।

গবেষকরা দাবী করেছেন, এখন পর্যন্ত পাওয়া প্রাচীনতম জুতোটির বয়স প্রায় ১০ হাজার বছর অর্থাৎ কৃষি আবিষ্কারের সময়। কিন্তু অ্যানথ্রোপলজিস্ট এরিক ট্রিঙ্কোসের বক্তব্য তার কয়েক হাজার বছর আগে থেকেই জুতো পরার প্রচলন শুরু হয়।

২০০৫ সালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন এরিক এবং সেখানে তিনি বলেন যে ৪০ হাজার বছর আগে মানুষের পায়ের এবং শরীরের হাড়ের গঠনে যে যে পরিবর্তনগুলি ঘটতে শুরু করে তার পিছনে ছিল জুতোর অবদান।

এই পরিবর্তনগুলি নিয়ান্ডারথাল এবং হোমো সাপিয়েন্স, দুই প্রজাতির মধ্যেই ঘটেছিল বলে তিনি তার গবেষণায় দাবী করেন। তিনি তার গবেষণায় জানিয়েছেন যে এই সময় থেকেই মানুষের পায়ের পাতা উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট হতে শুরু করে অথচ পায়ের হাড় যথেষ্ট বড়ই থাকে। এর থেকেই এরিক সিদ্ধান্তে আসেন যে এই বিবর্তনের পিছনে ছিল জুতোর ব্যবহার।

এরিকের এই তত্ত্বের অবশ্য বিরোধিতা করেছেন বেশ কয়েকজন নৃতত্ত্ববিদ। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী পায়ের পাতার গড়নের পরিবর্তন সম্ভবত শ্রম বিভাজনের ফলে ঘটে। সেক্ষেত্রে যদি এরিকের গবেষণা ভুল হয়েও থাকে, তা হলে জুতো আবিষ্কারের সময়কাল দাঁড়াবে ১০ হাজার বছর।

তবে আদিম মানবের জুতোর সঙ্গে অবশ্যই আধুনিক জুতোর কোনও মিল নেই। উনবিংশ শতাব্দীর আগে অবধি জুতো তৈরির মেশিনই আবিষ্কৃত হয়নি। অর্থাৎ সভ্যতার উন্মেষ যখন থেকে হতে শুরু করেছে, সেই মধ্যযুগ থেকে শুরু করে আধুনিক যুগের এক শতক কেটে যাওয়ার পরেও হাতে তৈরি জুতোই শুধুমাত্র পাওয়া যেত বাজারে।

প্রথম জুতো তৈরির স্টিচিং মেশিন উদ্ভাবন হয় ১৮৪৬ সালে শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে। ওই সময়েই চামড়া কাটাই করার মেশিনও তৈরি হয়। ওই সময় থেকেই ইংল্যান্ড এবং আমেরিকায় একাধিক শ্যু ব্র্যান্ডও বাজারে আসে।



মন্তব্য চালু নেই