‘জুতার নীচে ইসলামিক স্টেট’

মানুষ মেরে উল্লাস করে আইএস৷ এভাবে একদিন খেলাফত কায়েমের স্বপ্ন দেখে তারা৷ ইরাকের এক মুসলিম তরুণ মনে করেন, আইএস জঙ্গিরা লাথি খাওয়ার যোগ্য৷ লাথি মারতে পারছেন না বলে তিনি পুরোনো জুতোর তলায় স্থান দিয়েছেন জঙ্গিদের!

বৃহস্পতিবার সুন্নি মুসলমানদের জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) মিশরে আক্রমণ চালিয়ে কমপক্ষে ৪০ জন মানুষকে হত্যা করেছে৷ বৃহস্পতিবার রাতের এই খবর আন্তর্জাতিক সব সংবাদমাধ্যমই পরিবেশন করেছে৷

ইরাক আর সিরিয়ায় আইএস-এর তৎপরতার খবরও এসেছে সংবাদমাধ্যমে৷ সেগুলোতেও ছিল রক্তপাত, মৃত্যু, আহতদের আর্তনাদ আর শত শত গৃহহারা মানুষের কষ্টের কথা৷ সহিংসতা, সশস্ত্র, হামলা এমন বিপর্যয়ই ডেকে আনে মানুষের জীবনে৷ খেলাফত কায়েমের কথা বলে মধ্যপ্রাচ্যে অসংখ্য মানুষের জীবনে এ বিপর্যয় ডেকে আনছে আইএস৷ এর বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইরাকের এক শিল্পী৷ হাতে কোনো অস্ত্র তুলে নেননি৷ কারো গায়ে সামান্য আঁচড়ও কাটেননি৷ শুধু পুরোনো জুতো এবং জুতোর পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করে এমন কাণ্ড করেছেন, যার খবর পেলে ইসলামিক স্টেট-এর সব জঙ্গি এবং তাদের ভাবশিষ্যরা ভীষণ ক্ষেপে যাবেন৷

শিল্পীর নাম আকীল খ্রীফ৷ পেশায় স্থপতি৷ ২০১৪ সালের জুন মাসে আইএস ইরাকের বড় একটা অংশ দখল করে নেয়ার পর থেকে তিনি মন দিয়েছেন অন্য কাজে৷ এখন তাঁর প্রথম কাজ প্রতিদিন মুচিদের কাছে গিয়ে জুতোর পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করা এবং ছোট ছোট জুতোর দোকান থেকে ফেলে দেয়ার উপযোগী জুতো কিনে আনা৷ তারপর জুতোর তলায় মানুষের অবয়ব ফুটিয়ে তোলা৷ জুতো নিয়ে কাজ করার সময় সব মানুষের কথা ভাবেন না আকীল৷ ভাবেন শুধু আইএস জঙ্গিদের নিয়ে৷ নির্মমভাবে মানুষ হত্যা, মানুষকে গৃহহীন করার কথা ঘৃণাভরে ভাবতে ভাবতে জুতোর তলায় ফুটিয়ে তোলেন আইএস যোদ্ধাদের অবয়ব৷ তাঁর হাতের ছোঁয়ায় প্রতিটি পুরেনো জুতোর তলা হয়ে ওঠে আইএস জঙ্গিদের পোস্টার৷ ঘৃণা জানানোর পোস্টার৷

বার্তা সংস্থা এএফপির টুইটার অ্যাকাউন্টেও আছে আকীল খ্রীফের এভাবে আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ শুরুর খবর৷

a1 a2 a3 a4

এ যু্দ্ধে আকীলের অস্ত্র পুরোনো জুতো আর অনিঃশেষ ঘৃণা৷ এভাবে ঘৃণা প্রকাশ করে আকিল আইএস-এর হামলায় গৃহহীন ইরাকিদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন৷ জুতোর তলায় আইএস জঙ্গিদের কুৎসিত চেহারার আদল ফুটিয়ে তোলার কারণ জানাতে গিয়ে আকীল বললেন, ‘‘সংগঠনটির কর্মীরা যে মাত্রায় অপরাধকর্ম করছে, তাদের ভেতরকার কদর্যতার যে সার্বিক রূপ তা তুলে ধরতে চাই আমি৷” এভাবে আইএস জঙ্গিদের প্রতি ঘৃণা জানাতে গিয়ে যে নিজের জীবনকেও ঝুঁকির মুখে ঠেলছেন আকীল সেটা জানেন৷ এ কারণে মরতে হলে মরবেন – জানিয়ে আকীল খ্রীফ অকপটে বললেন, ‘‘সব জায়গাতেই তো মানুষ মরছে৷ তাছাড়া যাঁরা নিজের দেশকে রক্ষা করতে অস্ত্র হাতে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়ছে, আমি তো তাঁদের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নই৷ আমাকে যদি মরতেও হয়, এ কথা জেনেই মরবো যে মৃত্যুটা কোনো ভালো কাজ করতে গিয়ে হয়েছে!”

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ



মন্তব্য চালু নেই