সব শর্ত পূরণ করতে পারে নি বাংলাদেশ

জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে আশাবাদী বাণিজ্যমন্ত্রী

কারখানা ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও সময় চাইবে সরকার বাংলাদেশ সরকার বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রে ১৬টি শর্তের মধ্যে দশটিই পূরণ করা হয়েছে।

এর মধ্যে কারখানার পরিদর্শক নিয়োগ এবং ইপিজেডে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দেওয়ার কথা উল্লেখ করে অগ্রগতি প্রতিবেদন আগামীকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হচ্ছে।

তবে জানা গেছে প্রতিবেদনে বলা হবে কারাখানার ভবন সর্ম্পকিত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও সময় প্রয়োজন।

মূলত পোশাক খাতে শ্রমিক নিরাপত্তার ইস্যুতে গত দশ মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য বিশেষ এই রপ্তানি সুবিধা বন্ধ রেখেছে।

বিশ্লেষকদের অনেকে বলেছেন, এখন কারখানা ভবনের নিরাপত্তার বিষয়েই সরকারের বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে ১৬টি শর্তের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছিল গত বছরের নভেম্বর মাসে। তখনই শর্তগুলো পূরণের জন্য ৩১শে মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল এবং অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল ১৫ই এপ্রিলের মধ্যে।

“যেহেতু এই মুহুর্তে বিষয়টি সেখানে একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, ফলে বাংলাদেশ সরকার বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করার ব্যাপারে আরও কিছুটা সময় পাচ্ছে।”

গোলাম মোয়াজ্জেম, সিপিডি

বাংলাদেশ সরকার এখন নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ মঙ্গলবার তাদের অগ্রগতি প্রতিবেদন পাঠাচ্ছে। তবে সবক’টি শর্ত এখনও পূরণ হয়নি।

সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, দশটি শর্ত পুরোপুরি পূরণ করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের বক্তব্য হচ্ছে, কারখানার পরিদর্শক নিয়োগ এবং ইপিজেডে ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার দেওয়ার মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিয়ে পূরণ করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, দীর্ঘ মেয়াদের কিছু বিষয় রয়েছে। তার মধ্যে কারখানা ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে অনেকটা সময় প্রয়োজন। সে বিষয়টি প্রতিবেদনে তুলে ধরা হবে।

একইসাথে এই শর্ত পূরণের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও সরকার দেবে।

বিদেশী ক্রেতাদের দু’টি ফোরাম অ্যাকোর্ড এবং এ্যালায়েন্সের কারখানা পরিদর্শনের যে কার্যক্রম চালাচ্ছে, তারও উল্লেখ থাকবে প্রতিবেদনে।

“আমি এও মনে করি, রাজনৈতিক কোন বিষয় আনা না হলে ,জিএসপি সুবিধা আমরা ফিরে পাব।”

তোফায়েল আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রী

তবে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, যে সব শর্ত পূরণের কথা সরকার বলছে, সেগুলোর ক্ষেত্রেও আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। এছাড়া এখন কারখানায় কাজের পরিবেশের নিরাপত্তার বিষয়ই সামনে আসবে। ফলে এ বিষয় জোর দেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।

“যেহেতু এই মুহুর্তে যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধার বিষয়টি আসছে না এবং বিষয়টি সেখানে একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, ফলে বাংলাদেশ সরকার বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করার ব্যাপারে আরও কিছুটা সময় পাচ্ছে।” বলছেন গোলাম মোয়াজ্জেম।

বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আরও মনে করেন, শর্তের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার এখনও পর্যন্ত যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তাতে রাজনৈতিক কোন বিষয় আনা না হলে জিএসপি সুবিধা ফেরত পাওয়া উচিত।

মন্ত্রী বলছেন, “জিএসপির আওতায় মাত্র ত্রিশ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেনিফিট পেয়ে থাকি, যেটা খুবই সামান্য। যাইহোক, আমরা এখন আশা করি, জিএসপি সুবিধ ফিরে পাব। বিষয়টা তারা আর বাধাগ্রস্ত করবে না। আমি এও মনে করি, রাজনৈতিক কোন বিষয় আনা না হলে ,জিএসপি সুবিধা আমরা ফিরে পাব।”

যদিও তৈরি পোশাক খাতের বাইরে বাংলাদেশের কম সংখ্যক পণ্যই জিএসপি সুবিধা পেতো। কিন্তু ইউরোপে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাত জিএসপি সুবিধা পায়।

যুক্তরাষ্ট্র্রের সিদ্ধান্তের কোন প্রভাব ইউরোপের বাজারে পড়ে কীনা,এমন একটা আশংকার কথা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময়ই তুলে ধরেছেন।



মন্তব্য চালু নেই