জার্মানির কার্গো নিষেধাজ্ঞা: কী এমন করে ফেলেছি যে এতো রিস্কি হয়ে গেলো?

সরাসরি কার্গো পরিবহনে জার্মানির নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বাংলাদেশে কী এমন করে ফেলেছি যে আমাদের বিমানবন্দর এতো রিস্কি (ঝুঁকিপূর্ণ) হয়ে গেলো?

মঙ্গলবার (২৮ জুন) বিকেলে সচিবালয়ে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

গত রোববার (২৬ জুন) জার্মানির বিমান পরিবহন সংস্থা লুফথানসা এয়ারলাইনস ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে জানায়, বার্লিন কর্তৃপক্ষ ঢাকা থেকে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত সিভিল এভিয়েশন বা আমাদের সরকার কেউই এ ধরনের কোনো চিঠি পাইনি বা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। আমরা কেবল একটি জিনিস দেখেছি, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে ওদের (জার্মানি) সংস্থা চিঠি পাঠিয়ে বলেছে ‘রিস্কি কান্ট্রি’। সুতরাং এখন বাংলাদেশ থেকে যদি কার্গো নিতে হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট কমিশনের কিছু সুপারিশের ধারা মানতে হবে। তার মধ্যে বেশ কিছু স্কিলিং করতে হবে। একটা ইটিডি (এক্সপ্লোসিভ ট্রেসিং ডিটেক্টর) এবং অপরটি ইডিএস (এক্সপ্লোসিভ ডিটেকটিং সিস্টেম)। আমাদের ইডিএস আছে। তবে ইটিডি ম্যানুয়ালি করতে হয়।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের তরফ থেকে তাদের বলা হয়েছে, আমরা এই কৌশলগুলো অনুসরণ করেছি। অডিট সংস্থা আরএ-৩ এপ্রিল মাসের শেষে এসে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে গেছে। লুফথানসা, ইতিহাদ এয়ারওয়েজ ও বিমান বাংলাদেশকে ক্লিয়ারেন্স দিয়ে গেছে। আমাদের তরফ থেকে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বলেছি, আমাদের তরফ থেকে কার্গো পাঠানোর কোনো অসুবিধে নেই, এখন তোমরা নেবে কিনা, সেটা তোমাদের ব্যাপার।

বিমান পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ওরা (জার্মানির বিমান সংস্থা লুফথানসার কার্গো) কাল (সোমবার) এসেছিলো, মালও নামিয়েছিলো। কোনো অসুবিধা হয়নি। মাল নামিয়ে চলে গেছে। এখন পর্যন্ত মাল নেওয়া বা না নেওয়ার ব্যাপারে তারা আমাদের কাছে আসেনি। তারা জানিয়েছে, তাদের সিঙ্গাপুরের নিরাপত্তা অফিসার টিম নিয়ে কাল (বুধবার) ঢাকায় আসবে এবং পার্সোনালি বিষয়টা দেখবেন। এই পর্যন্ত আমরা জানি, এর বেশি জানা নেই।

বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় বিভিন্ন রকম উদ্যোগ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আমাদের তরফ থেকে খুব বেশি কিছু করার আছে বলে মনে করি না। কারণ অলরেডি ইইউ (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) জোটভুক্ত দেশের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা ঘিরে রেখেছি। বিভিন্ন নিরাপত্তা বাধা পার হয়ে কার্গো নিতে হয়। আরএ-৩’র অধীনে এটা করেছি।

নিষেধাজ্ঞার কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সোজা কথা আমি যেটা বলি, এখানে রাজনীতির বাইরে অন্য কিছু নেই। জিএসপির ক্ষেত্রে যেমন হচ্ছে, সবই আমরা দিচ্ছি তারপরও সন্তুষ্ট হচ্ছে না। এখানেও সবই করছি। তারপরও… এটা রাজনৈতিক, আমাদের তরফ থেকে কোনো ঘাটতি নেই।

‘আমি আশা করি, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। যদি ঘটে থাকে তাহলে আমাদের জানানো উচিত ছিল। তাদের তালিকায় বলেনি যে আমাদের দেশ ‘হাইরিস্কে’ আছে, বলেছে যে ‘ইক্যুয়াভেলেন্ট’ হতে পারে। সেটা বিমান এয়ারলাইন্সের কাছে চিঠিতে বলেছে।’

বাংলাদেশে কী এমন করে ফেলেছি যে এতো রিস্কি হয়ে গেল- প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, এয়ারলাইন্স টু এয়ারলাইন্স যোগাযোগ করছে। ওদের প্রতিনিধি দল এলে আমরা যোগাযোগ করবো।

তবে, সিঙ্গাপুর থেকে যে প্রতিনিধি দল আসবে তাদের সঙ্গে তার বৈঠক নেই বলেও জানান মন্ত্রী।

নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এবং পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে উল্লেখ করে রাশেদ খান মেনন বলেন, আমরা আশা করি এসব জায়গা থেকে তারা একটা উদ্যোগ নেবে।



মন্তব্য চালু নেই