জানুন অসাধারণ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বেগুনের স্বাস্থ্য উপকারিতা

নাম বে-গুণ অর্থাৎ গুণহীন হলেও বেগুন আসলে খুবই পুষ্টিকর একটি সবজি। এটি ভারতীয় উপমহাদেশের স্থানীয় হলেও বর্তমানে সারা বিশ্বেই পাওয়া যায় এর বিভিন্ন প্রজাতি। ইংল্যান্ডে বেগুন অবারজিন নামে পরিচিত, এছাড়াও বেগুনের আরো কিছু নাম হচ্ছে ব্রিঞ্জাল, এগপ্লান্ট, মেলঞ্জিন, গিনি স্কোয়াশ। এগপ্লান্ট বা বেগুনে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি ৬, থায়ামিন, নায়াসিন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, কপার, ডায়েটারি ফাইবার, ফলিক এসিড, পটাসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ থাকে। এতে কোলেস্টেরল বা স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকেনা। অসাধারণ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বেগুনের স্বাস্থ্য উপকারিতার বিষয়ে জানবো আজ।

১। হৃদপিন্ডের জন্য স্বাস্থ্যকর

ফাইবার, ভিটামিন বি ১, বি ৬, বি ৩, সি, কে তে ভরপুর থাকে বেগুন। এছাড়াও এতে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট থাকে বলে বেগুন হৃদস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী খাবার। হৃদস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে বেগুনে। তাই নিয়মিত বেগুন খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

২। ক্যান্সার প্রতিহত করে

বেগুনে পলিফেনল যেমন- ডেলফিনিডিন থাকে যা ফ্রি র‍্যাডিকেলের ক্ষতির হাত থেকে কোষকে রক্ষা করে, টিউমারের বৃদ্ধি প্রতিহত করে এবং ক্যান্সার কোষের বিস্তার বন্ধ করে। অন্য উপাদান যেমন- এন্থোসায়ানিন ও ক্লোরোজেনিক এসিড শরীরে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্লামেটরি প্রভাব ফেলে। ক্লোরোজেনিক এসিড কোষের ভেতরের এনজাইম পরিষ্কার করে, যা ক্যান্সার কোষের মৃত্যুকে উৎসাহিত করে এবং ভাইরাস জনিত রোগ তাড়ায়।

৩। খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়

আপনার শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর শক্তি আছে বেগুনের। অবশ্য তেলে ভাঁজা বেগুন থেকে আপনি খুব বেশি উপকৃত হতে পারবেন না। ৪০০ ডিগ্রী তাপে বেগুনকে বেক করলে এর পুষ্টিগুণ বজায় থাকে এবং সুগন্ধও পাওয়া যায়।

৪। মস্তিষ্কের কাজের উন্নতি ঘটায়

বেগুনের ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট জ্ঞানীয় দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং সার্বিক মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী। ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ছাড়াও এই উপাদানটি মস্তিষ্ককে রোগ ও টক্সিন থেকে মুক্ত থাকতে এবং মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কে বেশি রক্ত প্রবাহিত হলে অক্সিজেন ও বেশি পৌঁছে। যার ফলে স্মৃতি শক্তি ও বিশ্লেষণ মূলক চিন্তার উন্নতি ঘটে।

৫। হজম শক্তি বৃদ্ধি করে

ফাইবারে সমৃদ্ধ বেগুন প্ররিপাক প্রক্রিয়ার জন্য উপকারী সবজি। এর ফাইবার শরীরের খাদ্য প্রক্রিয়াজাৎকরণে সাহায্য করে এবং পাকস্থলীতে পরিপাক রসের উৎপাদন বৃদ্ধি করার মাধ্যমে পুষ্টি উপাদান শোষণে সাহায্য করে।

৬। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে

বেগুনে উচ্চ মাত্রার ফাইবার ও কম দ্রবণীয় কার্বোহাইড্রেট থাকে বলে রক্তের গ্লুকোজ ও ইনসুলিনের মাত্রার সমস্যা আছে যাদের তাদের জন্য উপকারী খাবার। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনার খাদ্যতালিকায় রাখুন বেগুন।

এছাড়াও হাড়কে শক্তিশালী করতে ও অষ্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে কাজ করে বেগুন, অ্যানেমিয়ার উপসর্গ কমায়, ওজন কমাতে সাহায্য করে, স্ট্রেস কমায় এবং শিশুর জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধেও সাহায্য করে বেগুন।



মন্তব্য চালু নেই