জাতীয় সম্মেলনের আগেই নগর কমিটি দেবে আ.লীগ

আগামী ২৮ মার্চ অনুষ্ঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগেই ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ নামে দু’টি কমিটি হচ্ছে। দলের সংকটকালীন সময়ে রাজপথে সক্রিয় নেতারা ওই কমিটিতে স্থান পাবে।

ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রয়াত এম এ আজিজের স্মরণসভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, এক-এগারোর প্রেক্ষাপটে ও সিটি নির্বাচনে যারা দলের পক্ষে কাজ করেছেন, দুর্যোগ মোকাবেলা করেছেন, কমিটিতে তাদের সম্মান দিতে হবে। প্রায় সাড়ে চার শ নেতাকর্মীর নাম আমার কাছে এসেছে। এই নামের তালিকা নিয়ে আমি এক দিন বসেছি।

এদিকে ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পুরনো কমিটিই কাজ করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি ঝুলে আছে। তবে কমিটি নিয়ে আমাদের পদ্ধতি শেষ হয়ে গেছে। মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের নেতৃত্ব কারা দেবেন সেগুলো চিহ্নিত করেছি। তালিকা সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু পৌরসভা নির্বাচনকে গুরুত্ব দেয়ার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে এই কমিটি দেয়া সম্ভব হয়নি। এরপরে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ আজিজ মারা যাওয়ার কারণে কমিটি দেয়ার সময় আর একটু পিছিয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উত্তর-দক্ষিণের কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর উত্তরে কে এম রহমতউল্লাহ সভাপতি ও মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাদেক খানের নাম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের খসড়া তালিকায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রয়াত এমএ আজিজ ও সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের নাম ছিলো। এমএ আজিজের মৃত্যুর সভাপতির পদ নিয়ে নতুন করে ভাবনায় পড়েছে দলটি। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রয়াত এম এ আজিজের ছেলে ওমর বিন আজিজকে দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক করা হচ্ছে।

বিষয়টি উঠে এসেছে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যেও। প্রয়াত এমএ আজিজের স্মরণসভায় তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের জন্য আমরা দু’টি কমিটির খসড়া করেছিলাম। এটা নিয়ে আমরা এক দিন বসেছিলাম। সেখানে আমরা তাকে (এম এ আজিজ) সভাপতি করেছিলাম। এটা নিয়ে আরেক দিন বসার কথা ছিল। কিন্তু আমি এত ব্যস্ত ছিলাম, আর বসা হয়ে ওঠেনি। এরমধ্যে তিনি মারা গেলেন। আমরা এই কমিটিগুলো দেব।’

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র বলছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি পদে ‘ঢাকাইয়া’ একজন যোগ্য ও পরিক্ষিত নেতাকে খুঁজছে দলটি। দলের নীতিনির্ধারকরা চান এ পদে যেন একজন ঢাকার স্থানীয় নেতা দায়িত্বপালন করেন। তবে সেক্ষেত্রে কোন যোগ্য ব্যক্তি না তাহলে বর্তমান নেতৃত্ব থেকে যে কেউ এ পদে আসতে পারেন।

দক্ষিণে মেয়র সাঈদ খোকন, সাবেক এমপি মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী সেলিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের মধ্যে যেকোন দুজনকে বেছে নেয়া হচ্ছে।

তবে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার নগরের রাজনীতিতে থাকার আকাঙ্ক্ষার কথা দলীয় সভাপতির কাছে জ্যেষ্ঠ নেতারা বলেছেন। তাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হচ্ছে। নগর থেকে ছিটকে পড়লে মায়া আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হতে পারেন।

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ঢাকা মহানগরের অন্তর্গত আওয়ামী লীগের বেশীরভাগ ওয়ার্ড ও থানার সম্মেলন হলেও কমিটি হয়নি।

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তরের সমন্বয়ক কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ‘প্রস্তাবিত কমিটি দলীয় সভাপতির কাছে জমা দিয়েছি। এখন তিনি তা বিবেচনা করে ঘোষণা করবেন।’

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ‘জাতীয় সম্মেলনের আগেই আমাদের সকল সাংগঠনিক জেলার সম্মেলন হয়ে যাবে এবং এ জেলাগুলোর কমিটিও ঘোষণা করা হবে।’



মন্তব্য চালু নেই