জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে অপু বিশ্বাসের ক্ষোভ

দেশের চলচ্চিত্র শিল্পে গৌরবোজ্জল ও অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২৫টি ক্ষেত্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৩ প্রদানের ঘোষণা করেছে সরকার। এর মধ্যে ১৭টি পুরস্কারই পেয়েছে `মৃত্তিকা মায়া` শিরোনামের সিনেমাটি। মঙ্গলবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র অধিশাখা থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। পুরস্কার ঘোষণার পরে এ নিয়ে ক্ষুদ্ধ চলচ্চিত্র অভিনয় শিল্পী অপু বিশ্বাস।

প্রধান চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী (দেবদাস)। এ সিনেমায় মৌসুমী চন্দ্রমূখী চরিত্রে অভিনয় করেছেন। অপরদিকে পার্বতী চরিত্রে অভিনয় করেন অপু বিশ্বাস।

এ প্রসঙ্গে অপু বিশ্বাস  বলেন, ‘আমি পুরস্কার পাইনি এজন্য আমার কোন ক্ষোভ নেই। মৌসুমী আপু তিনি আমার বড় বোনের মতো। তিনি অনেক ভালো অভিনয় করেন। তিনি পুরস্কার পেয়েছেন এতে আমার কোন ক্ষোভ নেই। আমি বলতে চেয়েছি এখানে পার্বতীকে ছোট করা হয়েছে। এ সিনেমার প্রধান চরিত্র পার্বতীই। পার্বতীকে অসন্মান করা হয়েছে। আমি সেটাই বলতে চেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘চাষী আঙ্কেল বেঁচে থাকলে আজ আমার কথাটা তিনিই বলতেন। তিনি আমাকে পার্বতী বলে ডাকতেন। সর্বশেষ আঙ্কেল যখন অসুস্থ তখন আমি আন্টিকে ফোন করি তখন আঙ্কেল পাশ থেকে বলে আমার পার্বতী ফোন দিয়েছে? এই কষ্টের কথাটাই আমি বলতে চেয়েছি। তিনি থাকলে আজ প্রতিবাদ করতেন।’

এ নিয়ে সম্প্রতি অপু বিশ্বাস ফেসবুকে কয়েকটি স্ট্যাটাস দেন। চিত্রনায়িকা মৌসুমী তার এ স্ট্যাটাস দেখে তিনিও একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে মৌসুমী লেখেন, ‘অপু এ ধরণের স্ট্যাটাস দিতে পারেন না। হয়তো কেউ ওর আইডিতে এসব লেখছে। আর এ নিয়ে তাকে জড়িয়ে মিথ্যে অপপ্রচার করছে।’

এ প্রসঙ্গে অপু বলেন, ‘আপু ইমোশনাল হয়ে এ কথা বলছে। আপু পুরস্কার পেয়েছে এটা নিয়ে আমি কিছুই বলিনি। আমি পার্বতী নিয়ে বলেছি। আর একটি সিনেমায় ১৭ টি পুরস্কার পেয়েছে সে প্রসঙ্গে আমার ক্ষোভের কথা বলেছি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে আপুকে শ্রদ্ধা করি।’

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৩ এর জন্য আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হচ্ছেন চিত্রনায়িকা সারাহ্ বেগম কবরী। এবার তালিকায় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কার পাচ্ছে মৃত্তিকা মায়া। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ছবিটি পরিচালনা করেছেন গাজী রাকায়েত। একই ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন গাজী রাকায়েত।

প্রধান চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পাচ্ছেন তিতাস জিয়া (মৃত্তিকা মায়া), শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী প্রধান চরিত্রে যৌথভাবে মৌসুমী (দেবদাস) ও শর্মিমালা (মৃত্তিকা মায়া)।

পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ (মৃত্তিকা মায়া) ও পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন অপর্ণা (মৃত্তিকা মায়া)।

শ্রেষ্ঠ অভিনেতা খল চরিত্রে মামুনুর রশীদ (মৃত্তিকা মায়া)। শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী স্বচ্ছ (একই বৃত্তে)। শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার সৈয়দা অহিদা সাবরিনা (অন্তর্ধান)।

শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক যৌথভাবে একে আজাদ (মৃত্তিকা মায়া) ও শওকত আলী ইমন (পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী)।

শ্রেষ্ঠ গায়িকা যৌথভাবে রুনা লায়লা ও সাবিনা ইয়াসমিন (দেবদাস)। শ্রেষ্ঠ গীতিকার কবির বকুল (পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী)। শ্রেষ্ঠ সুরকার কৌশিক হোসেন তাপস (পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী)।

শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার ও সংলাপ রচয়িতা গাজী রাকায়েত (মৃত্তিকা মায়া), শ্রেষ্ট সম্পাদক মো.শরিফুল ইসলাম রাসেল (মৃত্তিকা মায়া)। শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক উত্তম গুহ (মৃত্তিকা মায়া)। শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক সাইফুল ইসলাম বাদল (মৃত্তিকা মায়া)। শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক কাজী সেলিম (মৃত্তিকা মায়া)। শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজ-সজ্জা ওয়াহিদা মল্লিক জলি (মৃত্তিকা মায়া) এবং শ্রেষ্ঠ মেকআপ ম্যান মো. আলী বাবুল (মৃত্তিকা মায়া)।



মন্তব্য চালু নেই