জাতিসংঘের পানি নিয়ে যুদ্ধ শুরু

আগামী বিশ্বে লড়াই হবে পানি নিয়ে। কথাটা, গত ২০০৩ সালে বিশ্ব ধরিত্রী সম্মেলনে বলা হয়েছিল। কিন্তু এতো দ্রুত যে পানি নিয়ে লড়াই শুরু হয়ে যাবে তা কে ভাবতে পেরেছিল। ব্রাজিলের সাও পাওলোসহ বেশ কয়েকটি শহর ইতোমধ্যে পানির অভাবে রীতিমতো লড়াই করছে। একদিকে সরকারের পক্ষ থেকে পানির বিকল্প উৎসের সন্ধান করা হচ্ছে, অন্যদিকে জীবন বাঁচানোর তাগিদে শহর ছেড়ে মানুষ অন্যত্র চলে যাচ্ছে।

শুধু ব্রাজিল নয় আরও অনেক দেশেই এখন পানির সংকট শুরু হয়েছে। সম্প্রতি পানিশূণ্যতা দেখা দিয়েছে পশ্চিমের উন্নত দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েট রাজ্যে। আর এই পানিশূণ্যতা নিয়ে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে গণঅসন্তোষ। ডেট্রয়েট বাসিন্দা র‌্যাচেল ম্যাকক্যাসকিল বলেন, ‘যারা পানির বিল দিতে পারে না তাদের জন্য কর্তৃপক্ষের উচিত আলাদা ব্যবস্থা নেয়া। ৬০০ ডলার বাসা ভাড়া দেবার পর ৬৭২ ডলার পানির বিল দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। গরমের সময়ে পানি না হলে জীবন বাঁচানো মুশকিল। এই শহরে হাজারো বাসিন্দা আছে যারা পানির অভাবে দিন কাটাচ্ছে।’

গত সোমবার জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ক্রাটরিনা ডি বুকারকুয়ের উপস্থিতিতে একটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ক্যাটরিনা বলেন, ‘এই শহরে পানির লাইন সংযোগহীন বাড়ি দেখে আমি অবাক। পানি ছাড়া মানুষ এখানে বেঁচে থাকার লড়াই করছে। যারা দরিদ্র অথবা যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়, তারা কি তাহলে পানি ছাড়া থাকবে। আমি জাপানের মতো ধনী দেশগুলোতে দেখেছি সেখানকার ৯৯ শতাংশ মানুষ পর্যাপ্ত পানি পায়। আবার অনেক দরিদ্র দেশেও দেখেছি প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যাকে পানির অভাবে থাকতে। কিন্তু ডেট্রয়েটে পানি এখন হিসেব করে খরচ করতে হচ্ছে। যে কারণে স্থানীয়দের ভেতর গভীর অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে।’

জাতিসংঘের একাধিক সংস্থা বিভিন্ন দেশে পানির সংকট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতিগত ভাবেই ধীরে ধীরে পানির স্তর কোথাও শুকিয়ে গেছে, আবার কোথাও তা নিচে নেমে গেছে। যে কারণে সাধারণ জনগোষ্ঠির পক্ষে বিপুল অর্থ খরচ করে পানি কেনা সম্ভব হচ্ছে না। উন্নত দেশগুলোকে এই সমস্যা নিরসনে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন।



মন্তব্য চালু নেই