জলাবদ্ধতা বড় কোন সমস্যা নয়!

টানা বৃষ্টিপাতে চট্টগ্রাম বন্দরনগরীর অধিকাংশ এলাকা যখন পানির নীচে। ঠিক সেই সময়ে এসে নগর পিতার চেয়ারে বসেছেন চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। পানিবন্দি নগরবাসী এ জন্য সিটি করপোরেশনকে দুষলেও এক সময়ে সিটি করপোরেশনকে দোষারোপকারী আ জ ম নাছিরের কাছে এখন জলাবদ্ধতা বড় কোন সমস্যা নয়! তার কাছে করপোরেশনের প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাটাই বড় কাজ।

রোববার আনুষ্ঠানিভাবে দায়িত্ব গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের এক মাত্র সমস্যা জলাবদ্ধতা নয়। আমার কাছে মনে হয়েছে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। আমি যাদেরকে দিয়ে নাগরিক সেবা নিশ্চিত, উন্নত ও বিস্তৃত করতে যাবো, তাদের অবস্থা যদি বেহাল থাকে তাহলে কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব হবে না। গ্রহণ করলেও বাস্তবায়ন করা যাবে না। তাই প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হচ্ছে প্রধান কাজ।’

নগরীর জলাবদ্ধতাকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া উল্লেখ করে নাছির বলেন, ‘তুমুল বৃষ্টিপাত প্রকৃতির আচরণ। বৃষ্টিপাত বন্ধের ক্ষমতা আমার কেন, কারো নেই। উত্তরাধিকার সূত্রে এ জলাবদ্ধতা সমস্যা আমি পেয়েছি। শপথ গ্রহণ করার পর দায়িত্ব না নিলেও কিছু বাস্তব সম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি বলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি নেমে যাচ্ছে। এটা আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি।’

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনে পর্যায়ক্রমে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা জলাবদ্ধতা নিরসন করা হবে বলে জানান মেয়র। একই সঙ্গে স্যুয়ারেজ ও ড্রেনেজ সিস্টেমেরও আধুনিকায়ন করা হবে বলে জানান তিনি। এজন্য সিডিএ ও ওয়াসাকে সহযোগিতার আহ্বান জানান মেয়র।

গত এক বছরে স্বাস্থ্য খাতে ৯ কোটি ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ও শিক্ষা খাতে গত জুন মাসে ১ কোটি ৬২ লাখ ৬ হাজার ৪৩৮ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়। প্রতি বছর দুইটি খাতে এ বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়ার সামর্থ্য সিটি করপোরেশনের নেই বলে জানান নতুন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

তিনি বলেন,‘নতুন বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন দেওয়া হলে শিক্ষাখাতে প্রতি বছর ৩২ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। শিক্ষা খাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনতে শিক্ষার্থীদের বেতন বৃদ্ধি করা হবে। স্বাস্থ্য বিভাগ নিয়ে আরো চিন্তাভাবনা করা হবে। এ বিভাগ নাগরিক সেবা কতটা নিশ্চিত করতে পারে সেটা দেখা হবে। যদি ইতিবাচক হয় তাহলে স্বাস্থ্য বিভাগের হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনা হবে। বছর বছর ভর্তুকি দিয়ে যদি নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা না যায় তাহলে এ বিভাগ বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

প্রতি তিনমাস পরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কার্যক্রম ও পরিকল্পনা তুলে ধরা হবে বলেও জানান তিনি। করপোরেশনের গঠনমূলক কার্যক্রম ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান নতুন মেয়র।

তিনি বলেন,‘কোন কাজে ভুল-ভ্রান্তি হলে তা নির্দ্বিধায় আমার কাছে উপস্থাপন করবেন। আমি শুধরিয়ে নিব।’

নির্বাচনের আগে ‘দলমত নির্বিশেষে উপদেষ্টা কমিটি করে’ তাদের পরামর্শ নিয়ে সিটি করপোরশন পরিচালনা করবেন বলে অঙ্গীকার করেছিলেন আ জ ম নাছির।



মন্তব্য চালু নেই