জনতা ব্যাংকের আরো ৪ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ
হলমার্ক কেলেঙ্কারির নন-ফান্ডেড অংশের প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জনতা ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজারসহ (জিএম) আরো চার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল সোয়া ১০টা থেকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। দুদকের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বাধীন একটি টিম তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। জিজ্ঞাসাবাদ বিকেল পর্যন্ত চলবে দুদক সূত্র জানিয়েছে।
যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তারা হলেন— জনতা ব্যাংক কর্পোরেট শাখার জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আব্দুছ ছালাম আজাদ, ডিজিএম এস এম আবু হেনা মোস্তফা কামাল, ডিজিএম আজমুল হক ও এজিএম মো. ফায়েজুর রহমান ভূঁইয়া।
এর আগে গতকাল (রোববার) এজিএমসহ ৫ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
বিদায়ী বছরের ২২ ডিসেম্বর প্রায় পৌনে দুই বছর পর হলমার্ক কেলেঙ্কারির নন-ফান্ডেড অংশের (দ্বিতীয় অংশ) প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে অনুসন্ধান টিম পুণর্গঠন করা হয়।
সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন শাখা থেকে হলমার্ক গ্রুপসহ ৬টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ইস্যুকৃত ব্যাংক-টু-ব্যাক এলসির এক্সেপ্টেন্সের বিপরীতে নন-ফান্ডেড দায়সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধানে টিম পুনর্গঠন করে কমিশন।
হলমার্কের নন-ফান্ডেড অংশের এ অভিযোগ কমিশনের ‘সিডিউলভুক্ত অপরাধের’ তালিকায় থাকা সত্ত্বেও অজ্ঞাত কারণে দীর্ঘদিন এ অনুসন্ধান কার্যক্রম বন্ধ ছিল। প্রায় দেড় বছর অনুসন্ধান বন্ধ থাকার পর গেল বছরের আগষ্ট মাসে এ অনুসন্ধান পুনরায় শুরু হলেও নানা জটিলতায় অনুসন্ধানের কাজে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
হলমার্ক ও তার পাঁচ সহযোগী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফান্ডেড, নন-ফান্ডেডসহ মোট তিন হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ছিল। এর মধ্যে ফান্ডেড অংশের তদন্ত শেষ করেছে কমিশন। এ অংশে দায়ের করা মোট ৩৮টি মামলার বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মামলাগুলোর চার্জশিট ইতিমধ্যে আদালতে দাখিল করে কমিশন। কিন্তু নন-ফান্ডেড অংশের অনুসন্ধান কাজ অজ্ঞাত কারণে বন্ধ ছিল।
পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত রিপোর্টের সূত্র ধরে ২০১৪ সালের ১৩ মে পুনরায় অনুসন্ধানের ঘোষণা দেয় কমিশন।
সূত্র আরো জানায়, ৩৭টি ব্যাংকের ১২০টি শাখায় হলমার্কের নন-ফান্ডেড অংশের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে। এ সব ব্যাংক থেকে হলমার্ক নগদ হাতিয়ে নিয়েছে এক হাজার ৫৩৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা। নন-ফান্ডেড অংশের জালিয়াতিতে আক্রান্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে সরকারি সাতটি, বেসরকারি ২৫টি ও বিদেশি পাঁচটি ব্যাংক রয়েছে। এসব ব্যাংকর সঙ্গে হলমার্ক সুতা, তুলা, ফেব্রিক্স এবং এক্সেসরিস সরবরাহ করেছে মর্মে জালিয়াতি করা হয়েছে।
দুদকের পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বাধীন ৬ সদস্য টিমের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- দুদকের উপ-পরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূঁঞা, সহকারী পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত, সেলিনা আখতার মনি, উপ-সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ও রাফী মো. নাজমুস্ সাদাৎ।
মন্তব্য চালু নেই