জনগণ চাইলেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন- তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন চান। যদি আপনার চাওয়া-পাওয়ার সঙ্গে যদি জনগণের কোনো সম্পর্ক থাকে এবং দেশের মানুষ মনে করলে অবশ্যই এ দেশে তাদের রায় বাস্তবায়ন হবে।’

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযোদ্ধা পেশাজীবী ঐক্য মঞ্চ আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আশরাফ বলেন, ‘খালেদা জিয়া গণতন্ত্র চান না, তত্ত্বাবধায়ক চান না, মধ্যবর্তী নির্বাচনও চান না। তিনি বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে চান। যে কারণে এই দেশকে পোড়া মাটি বানাতে চান। একাত্তরের প্রতিশোধ চান উনি।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনি নির্বাচন চান, গণতন্ত্র চান? দেখে তো মনে হয় না। আপনার আচরণে মনে হয় না। আসলে আপনি ছলে-বলে কৌশলে অবৈধভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করতে চান।’

তিনি বলেন, ‘মধ্যবর্তী নির্বাচন চাইলে জ্বালাও-পোড়াও করতেন না। খালেদা জিয়া ভোট-নির্বাচন কিছুই চান না। নির্বাচন চাইলে ভোটারদের পুড়িয়ে মারতেন না। এ দেশে অনেক আন্দোলন হয়েছে। খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্য যে জিনিসটার জন্য, যার জন্য উনি রাজনীতি করেন সেটা হলো- উনার সাধের পাকিস্তান ঐক্যবদ্ধ করতে চান। এ দেশের মানুষ এটা মেনে নেবে না।’

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘কিসের জন্য জ্বালাও-পোড়াও? কিসের জন্য মানুষ পুড়িয়ে মারা হচ্ছে? পরীক্ষার সঙ্গে রাজনীতির কী সম্পর্ক? শ্রমিক-কৃষক তাদের কথা তো একবারও বলেননি। যতো মানুষ পুড়িয়ে মারা হচ্ছে তারা সবাই কী আওয়ামী লীগের? সেখানে কী বিএনপির লোক নেই?’

খালেদাকে উদ্দেশ করে আশরাফ বলেন, ‘শিশু পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। আপনি দেখেন না? আপনি জানেন না একজন সন্তানকে যখন পুড়িয়ে মারা হয় তখন মায়ের কী কষ্ট? অথচ নিজেকে মা বলে দাবি করেন।’

সমাবেশে উপস্থিতদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় দেশ অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করা যাবে না। আমাদের ভয়ের কারণ নেই। আমাদের বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে সোনার বাংলা করবো।’

নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ‘খালেদা জিয়া ঘরে বসে হরতাল দিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি নেতাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গাড়ি চলছে। তার রাজনীতি এখন লাইফ সাপোর্টে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে এসে জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। জনপ্রিয়তা থাকলে মানুষ ভোট দেবে। ভোটে হেরে গেলে আবার বলবেন- সরকার জোর করে বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। আমরা জোর করে ক্ষমতায় আসিনি, জিয়াউর রহমান জোর করে ক্ষমতায় এসেছিলেন।’

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘জামায়াতের অঘোষিত আমির খালেদা জিয়া তিন মাস ধরে হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি ও তার প্রভুরাও জানেন হরতাল-অবরোধ দিয়ে কোনো কাজ হবে না। তারপরও সকল হত্যাকাণ্ডের রাজনৈতিক রূপ দেয়ার জন্য কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।’

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মে. জে. (অব.) হেলাল মোর্শেদ খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জামান, ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সভাপতি এ কেএম হামিদ, মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ডের মহাসচিব আবদুল মতিন প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই