জনকণ্ঠের সম্পাদকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা চলবে

এক নারী ভিকটিমের ছবি নাম এবং ঠিকানা দিয়ে খবর প্রকাশের অভিযোগে জনকণ্ঠ সম্পাদক আতিকুল্লাহ খান মাসুদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলা চলবে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আতিকুল্লাহ খানসহ বাকিরা হলেন- তোয়াব খান উপদেষ্টা সম্পাদক, (মরহুম) বোরহান উদ্দিন, নির্বাহী সম্পাদক, আলী আসগর স্বপন, শংকর কুমার দে এবং বর্তমানে প্রথম আলোর প্রতিনিধি কামরুল ইসলাম।

এ সংক্রান্ত মামলা বাতিলের বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে সম্পাদকসহ ৬ জনের করা আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন।

আদালতের আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন মোল্লা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনুর রহমান টিকু। এই রায়ের ফলে এক যুগ পর নিম্ন আদালতে মামলার কার্যক্রম চলতে আর কোন আইনগত বাধা নেই বলে জানান আইনজীবীরা।

ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা ও এমপি কামাল আহমেদ মজুমদারের বিরুদ্ধে ২০০১ সালে মিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন ওই নারী। এই মামলার বাদি নিজেই শ্লীলতাহানীর শিকার। ওই নারী ভিকটিমকে নিয়ে ২০০২ সালের ৪ ও ৫ জানুয়ারি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক জনকণ্ঠ।

৪ জানুয়ারির প্রতিবেদনে শিরোনাম ছিল,‘তরুপের তাস : ইয়াসমিন মামলার কলকাঠি এক কর্মকর্তার হাতে’। পরের দিন ৫ জানুয়ারি একই পত্রিকায় ‘ ইয়াসমিনের মামলা নিয়ে পুলিশ বিপাকে ঘটনার কোনও প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।`

এই প্রতিবেদন প্রকাশের করার কারণে ২০০২ সালে জানুয়ারি মাসে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারায় এই মামলা করেন নির্যাতনের স্বীকার ওই নারী ভিকটিম। মামলায় ৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে ২০০২ সালের ১৯ জুন চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ এবং একই দিন অভিযোগ আমলে নেয় বিচারিক আদালত। অভিযোগ আমলে নেয়ার সময় বাদীর না রাজি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫ জন আসামির সঙ্গে আরও একজন সংযুক্ত করে ৬ জনকে আসামি করা হয়। পরে ২০০৩ সালে তারা মামলা বাতিল চেয়ে হাইকের্টে আবেদন করেন। ওই আবেদন শুনানি করে রুল জারি করেন এবং একই বছর ১০ জুলাই তাদেরকে জামিন দেয় হাইকোর্ট।

আইনের ১৪ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইনে বর্ণিত অপরাধের শিকার হইয়াছেন এই রূপ নারী বা শিশুর ব্যাপারে সংগঠিত অপরাধ বা তত সম্পর্কিত আইনগত কার্য ধারার সংবাদ বা তথ্য বা নাম ঠিকানা বা অন্যবিধ তথ্য কোন সংবাদপত্রে বা অন্য কোন সংবাদ মাধ্যমে এমন ভাবে প্রকাশ বা পরিবেশন করা যাইবে যাহাতে উক্ত নারী বা শিশুর পরিচয় প্রকাশ না পায়’। আইনের এই বিধান লংঘন করার কারণে জনকণ্ঠ পত্রিকায় ভিকটিমের ছবি নাম ও ঠিকানাসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করায় এই মামলা দায়ের করা হয় বলে জানান আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা।

পরে এই মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জনকণ্ঠ কর্তৃপক্ষ। ২০০৩ সালে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন।

সোমবার জারি করা ওই রুলের শুনানি শেষে তা খারিজ করে চূড়ান্ত রায় দেন। ফলে তাদের জনকণ্ঠ সম্পাদকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা চলতে বাধা নেই।



মন্তব্য চালু নেই