জঙ্গি হুমকি : আলোর সঙ্গে অন্ধকারের লড়াই

জঙ্গিদের হত্যার হুমকিতে ভীত নন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলছেন, ‘এটি আলোর সঙ্গে অন্ধকারের লড়াই। এ লড়াই চলবে। এখান থেকে পিছিয়ে আসার সুযোগ নেই। বরং জঙ্গিদের দমনে রাষ্ট্রকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে’।

বুধবার ‘আল কায়েদা-আনসারুল্লাহ বাংলাটিম-১৩’ এর নামে আসা চিঠিতে যে ১০ জনকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে আছে আরেফিন সিদ্দিকের নাম। তবে তিনি বলেন, হুমকিতে দমে যেতে রাজি নন তিনি। আরেফির সিদ্দিক বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বা উদ্বিগ্ন নই। তবে সমাজে এ ধরনের ঘটনায় অস্থিরতা তৈরি হয়। মানুষের মধ্যে অজানা শঙ্কা কাজ করে। সেই জন্য আমি উদ্বিগ্ন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলবো তারা যেন অতিসত্ত্বর দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে। যাতে সমাজ থেকে অস্থিরতা আর উদ্বেগ দূর হতে পারে।’

গতকাল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, তারানা হালিম, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারসহ ১০জনকে হত্যার হুমকি দেয় আল কায়েদা-আনসারুল্লাহ বাংলাটিম-১৩।

ডাকযোগে পাঠানো ইংরেজিতে লেখা একটি চিঠিতে এ হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। আল কায়েদা-আনসারুল্লাহ বাংলাটিম:১৩’এর নামে পাঠানো ওই চিঠিতে ১০ জনের নামের একটি তালিকা রয়েছে, যার সবার উপরে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের নাম রয়েছে। চিঠিতে লেখা রয়েছে ‘মাস্ট উইল প্রিপেয়ার ফর ডেড’।

এ হুমকির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘১০ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হত্যার হুমকিতে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। এই ঘটনার নিন্দা জানানোর মতো ভাষা আমাদের নেই। তাদের নিরাপত্তায় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাই। দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জঙ্গিদের হত্যার হুমকি নতুন কিছু নয়। এটির জন্য সরকার দায়ী। সরকার জঙ্গি দমনে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে বার বার জঙ্গিরা মাথা চারা দিয়ে উঠছে। অতীতে জঙ্গি হামলার ঘটনার যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতো তাহলে আর জঙ্গিরা হুমকি দেয়ার সাহস দেখাতো না।’

আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সমাজে আলো এবং অন্ধকারের দ্বন্দ্ব সব সময়ই ছিল। আর এটার জন্যই বিভিন্ন সময়ে দ্বন্দ্ব এবং সংঘাত হয়। দিন শেষে আলোই টিকে থাকে। আর আলোকেই আমরা বরণ করে নেই।’



মন্তব্য চালু নেই