জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ’র গণমাধ্যম শাখার প্রধান গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে

উগ্রপন্থী সংগঠন ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’র গণমাধ্যম শাখার প্রধান মো. মোরশেদ আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম হাসিবুল হক বৃহস্পতিবার তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক নিবারণ চন্ত্র বর্মন মোরশেদকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের হেফাজতে চান। রিমান্ড আবেদন বাতিলে আসামিপক্ষে আইনজীবী মির্জা মো. জামাল হোসেন শুনানি করেন। শুনানি শেষে বিচারক মোরশেদকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে পরিদর্শক নিবারণ জানান।
আগের রাতে রাজধানীর কল্যাণপুর এলাকা থেকে মোরশেদকে (২৮) গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর মিরপুর থানায় তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করা হয়।
মোরশেদ ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’র গণমাধ্যম শাখার প্রধান বলে জানান গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান।
দুপুরে মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, “মোরশেদ জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, ২০১১ সালে বেসরকারি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে সে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে। এরপর বাংলা লিংক মোবাইল কোম্পানিতে মোবিসার্ভে অ্যান্ড মেইনটেনেন্স বিভাগে নক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিল।
“সেখানে কাজের পাশাপাশি আনসারউল্লাহ বাংলাটিমের প্রচার শাখার দায়িত্ব পালন করত। তারা বর্তমান সরকারকে উৎখাতের জন্য ইন্টারনেটে প্রচারণা চালাতে চেয়েছিল। সেখানে নিজেদের মতাদর্শ প্রচার করে সংগঠনের সদস্যও বাড়াতে চেষ্টা করেছিল তারা।”
ফেইসবুকে ‘বালাকোট মিডিয়া’, তিতুমীর মিডিয়া’, ‘আনসারউল্লাহ বাংলা মিডিয়া, ‘আল কাদিসিয়া মিডিয়া’ নামে বিভিন্ন গ্রুপ খুলে প্রচারণা চালানোর চেষ্টা ছিল বলেও জানান তিনি।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনিরুল বলেন, “ফেইসবুকে মোরশেদের ১১৭টি অ্যাকাউন্ট ছিল, যেগুলো সে একা ব্যবহার করত। ওই সব অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড মেইলে সেভ করে রাখত।”
গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, একটি নকিয়া এন ৭৫ মোবাইল ফোন ও ডিভিডি প্লেয়ারসহ বিভিন্ন ধরনের উগ্রপন্থী বই উদ্ধার করা হয় বলে জানান তিনি।
উগ্রপন্থী সংগঠন ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’র নাম প্রথম আলোচনায় আসে গত বছর শেষ দিকে। অগাস্টে বরগুনা থেকে এ সংগঠনের প্রধান মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীসহ ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ঢাকার মোহাম্মদপুরে জসীমের বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সিডিসহ উসকানিমূলক বই উদ্ধার করা হয়।
সে সময় গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘জিহাদের’ মাধ্যমে সরকার হটানোর লক্ষ্যে ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ থানা থেকে অস্ত্র লুট ও বিভিন্ন স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করেছিল।
জসীমসহ এ সংগঠনের ১০ সদস্যের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্রও দিয়েছে পুলিশ।



মন্তব্য চালু নেই