ছাত্রলীগ নেতাকে না পেয়ে পোষা বিড়ালছানা ‘হত্যা’

‘আমার অপরাধ ছিল, আমার শাস্তি হয়েছে। আমার রুম লুটপাট করা হয়েছে, সেটাও মেনে নিলাম। কিন্তু আমার ছোট্ট বিড়ালছানাগুলো কী অপরাধ করেছিল। তাদের মা ছিল না। জবাই করে রাখলি?’ আক্ষেপ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি মিজানুর রহমান রানা।

তার অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে যাওয়ার পর প্রতিপক্ষরা তাকে না পেয়ে তার পোষা বিড়ালের বাচ্চাগুলোকে হত্যা করেছে।

এর আগে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গত ১৬ জানুয়ারি রাত ৯টায় মিজানুর রহমান রানাকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। ওই রাতেই রানা ও তার অনুসারীরা হল ত্যাগ করেন। হল ত্যাগ করার পরপরই প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা রুমের তালা ভেঙে কিছু আসবাবপত্র ভাঙচুর করে বলে হল সূত্রে জানা যায়। পরদিন সকালে হল প্রাধ্যক্ষ ভাঙচুর করা কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।

রাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ক্যাম্পাসের যায়যায়দিন পত্রিকার সাংবাদিক জাকির হোসেন তমাল তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি মিজানুর রহমান রানা তার বঙ্গবন্ধু হলের রুমে কয়েকটি বিড়ালের বাচ্চা পুষতেন। মা হারা এই বিড়াল ছানাদের তিনি নিয়মিত দুধ খাওয়াতেন। তাদের দেখাশোনা করতেন। গত ১৬ জানুয়ারি সভাপতির পদ হারাবার পর তিনি নিজের সমর্থকদের সাথে নিয়ে ওইদিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেন। কিন্তু যাবার সময় কর্মীদের সাথে নিয়ে গেলেও বিড়ালের বাচ্চাগুলোকে সাথে নিতে পারেননি। বাচ্চাগুলো তার রুমের সামনেই ছিল। রানার অনুপস্থিতিতে তার নিজ দলের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ প্রতিশোধ নিতে তার রুমে হামলা চালায় এবং গতকাল রানাকে না পেয়ে তার পরম মমতায় বেড়ে ওঠা বিড়ালের বাচ্চাগুলোকে জবাই করে (গলা কেটে) মেরে ফেলে!!!

রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মিজানুর রহমান রানার ব্যক্তিগত দোষ থাকতে পারে, রাজনৈতিক ভুল থাকতে পারে; তার জন্যে তিনি নিজের পদও হারিয়েছেন। তার ওপরে অনেকের রাজনৈতিক আক্রোশ থাকতে পারে, ব্যক্তিগত রাগ থাকতে পারে; তাই বলে এভাবে তার পালিত বিড়ালছানাগুলোকে মেরে ফেলতে হবে? এ কেমন প্রতিহিংসা? এ কেমন জিঘাংসা?’

বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদুর রহমান ‘এ কেমন প্রতিহিংসা?’ শিরোনামে এ স্ট্যাটাসটি পোস্ট করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এ বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন এটা শুধুই রাজনীতি। কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘রাজনীতিতে পক্ষ-বিপক্ষ থাকবে। কিন্তু শত্রুতা করে নিরীহ প্রাণীকে মেরে ফেলতে হবে ? এটা কোনো বিবেকবান মানুষের কাজ হতে পারে না।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ জানুয়ারি বেলা ৩টায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মিজানুর রহমান রানার অনুসারীরা ছাত্রলীগের কর্মী বনিকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনার পর রাত ৯টার দিকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানাকে বহিষ্কার করা হয়।-বাংলামেইল



মন্তব্য চালু নেই