ছাত্রলীগকে লেখাপড়া করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রগতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ২৮তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ছাত্রলীগকে লেখাপড়া করতে হবে।’

ছাত্রলীগকে উপমহাদেশের প্রাচীনতম ছাত্র সংগঠন বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু পরিবেশ ধরে রাখতে চেষ্টা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার যে চেষ্টা করা হয়েছিল সে চেষ্টাকে নস্যাৎ করে দিয়ে দেশ এগিয়ে নিতে ছাত্রলীগকে কাজ করার কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘ পৃথিবী যেমন চলমান, মানুষের জীবন অগ্রগামী, আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চাই। জাতির পিতাকে হত্যার পর বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়েছিল। তবে এখন ছাত্রলীগকে প্রগতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে।’

মুক্তিযুদ্ধ থেকে শিক্ষা নিতে আগামী দিনের নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

এ সময় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দেন শেখ হাসিনা। সমগ্র বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। এ ছাড়া বেসরকারি ব্যাংক, বিমাকে উন্মুক্ত করে দিয়ে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে যুবসমাজকে মুক্তির পদক্ষেপের কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা পল্লীসঞ্চয় ব্যাংক করেছি, প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক করে দিয়েছি, সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। আমরা ব্লু ইকোনমি গ্রহণ করেছি, মাতৃমৃত্যুর হার রোধ করেছি।’

শিক্ষার বিস্তারের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছি,অন্যদিকে আধুনিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’

এ সময় দেশের প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে বলে আবারও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশের গৃহহারা মানুষকে অন্তত একটা টিনের ঘর যেন দিতে পারেন সেই আশাবাদও ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা। এ সময় বাংলাদেশে কোনো বেকার থাকবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ছাত্রলীগের সম্মেলনের বিলম্ব সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন বানচালের উদ্দেশে ২০১৩ সালে যে তাণ্ডব শুরু হলো, ওই অবস্থার মধ্যে সম্মেলন করা কঠিন ছিল। তাই ছাত্রলীগের ২৮তম সম্মেলন হতে কিছুটা দেরি হয়ে গেল। তবে এর আগে ছাত্র রাজনীতি করার জন্য সর্বোচ্চ বয়স ২৭ বছর করতে চেয়েছিলেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু দুই বছর সম্মেলন না হওয়ায় এই বয়স বাড়িয়ে ২৯ বছর করার ঘোষণাও দেন তিনি।

এ ছাড়া নির্বাচনের মাধ্যমেই ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচন করা হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

নিজের বক্তব্যে জাতির পিতার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পড়তে প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে নির্দেশ দেন তিনি।

অভিশপ্ত বাংলাদেশ আজ অভিশাপমুক্ত হচ্ছে

আল্লাহর দয়ায় বাংলার মানুষের সহযোগিতায় সরকার গঠন করেছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু করেছে। আর এ বিচার বন্ধ করতে যেসব ষড়যন্ত্র হয়েছে তা নিজের সততার কারণে মোকাবিলা করার সাহস পেয়েছেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর শুরু হয়ে গেছে। অভিশপ্ত বাংলাদেশ আজ অভিশাপমুক্ত হচ্ছে।’

সবশষে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় ছাত্রলীগ বলে নিজের বক্তব্য শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী।



মন্তব্য চালু নেই