চীনে ২০৩০ সালে ধূমপানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০ লাখে দাঁড়াবে : গবেষণা

চীনে ২০৩০ সালে ধূমপানে কমপক্ষে ২০ লাখ লোকের মৃত্যু হবে, যা ২০১০ সালের তুলনায় দ্বিগুণ। এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষকরা বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশে ‘অকাল মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান বিস্তারের’ হুঁশিয়ারিও জানিয়েছেন।

গবেষকরা শুক্রবার ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে লিখেছেন, চলমান প্রবণতা অনুযায়ী চীনে প্রতি তিনজন তরুণ নাগরিকের একজনের তামাকের কারণে মৃত্যু হবে। নারীদের মধ্যে ধূমপায়ীর সংখ্যা কম হওয়ায় তাদের মৃত্যুহারও কম হবে।

নিবন্ধের সহকারি লেখক অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জেংমিং চেন বলেন, ‘চীনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ নাগরিক ধূমপান করে এবং তাদের বেশিরভাগ ২০ বছর বয়সের আগেই ধূমপান শুরু করে। যদি তারা ধূমপান বন্ধ না করে তাহলে তাদের অর্ধেকের এ কারণে মৃত্যু হবে।’

বিশ্বে মোট উৎপাদিত সিগারেটের এক-তৃতীয়াংশ চীনের লোকজন সেবন করে এবং ধূমপানে বিশ্বে মৃত্যুর হারের দিক থেকে ৬ষ্ঠ দেশ হল চীন।

গবেষকরা বলেন, ‘চীনে তামাকের কারণে বছরে মৃত্যুর সংখ্যা ২০১০ সালে ছিল ১০ লাখ। যদি চীনের লোকজন ব্যাপকভাবে ধূমপান বন্ধ না করে তাহলে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০৩০ সালে হবে ২০ লাখ ও ২০৫০ সালে হবে ৩০ লাখ।’

তারা উল্লেখ করেন, চীনে ব্যাপকভাবে ধূমপান বন্ধ হলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে শারীরিক অক্ষমতা ও অকাল মৃত্যু এড়াতে আরো অধিক কার্যকর দেশে পরিণত হবে এবং সাশ্রয়ী কৌশল গ্রহণ করতে পারবে।

তামাকের কারণে ২০১০ সালে কমপক্ষে ৮ লাখ ৪০ হাজার পুরষ ও এক লাখ ৩০ হাজার নারীর মৃত্যু হয়। দেশটিতে মোট জনসংখ্যা ১৪০ কোটি।

যারা ধূমপান করেনা তাদের চেয়ে ধূমপায়ীদের মৃত্যুহার প্রায় দ্বিগুণ এবং তাদের ফুসফুস ক্যান্সার, স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি খুবই বেশি।

গবেষকরা বলেন, ৪০ থেকে ৭৯ বছর বয়সী ধূূমপায়ী চীনা নাগরিকদের মধ্যে মৃত্যুহার ছিল ১৯৯০ এর দশকে ছিল ১০ শতাংশ। এটি বেড়ে বর্তমানে হয়েছে ২০ শতাংশ।

নগরে বসবাসকারী ধূমপায়ীদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি। চীনে ধূমপানে যত পুরুষের মৃত্যু হয় তার এক-তৃতীয়াংশ নগরে বসবাস করে।

ল্যানসেটের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনে বয়স্ক প্রজন্মের চেয়ে কর্মজীবী নারীরা অনেক কম ধূমপায়ী। ১৯৩০ এর দশকে জন্ম নেয়া নারীদের ১০ শতাংশ ধূমপায়ী। তবে ১৯৬০ এর দশকে জন্ম নেয়া নারীদের মাত্র ১ শতাংশ ধূমপায়ী।’

গবেষণায় দেখা গেছে, তামাকের কারণে ১৯৬০ থেকে জন্ম নেয়া নারীদের এক শতাংশেরও কম মৃত্যু হয়েছে।
চীনের প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার লোকের ওপর পরিচালিত দুটি গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রথম গবেষণাটি ১৯৯০ এর দশকে শুরু হয়ে বেশ কয়েক বছর চলে। আর দ্বিতীয় গবেষণাটি ২০০৬ সালে শুরু হয়ে এখনও চলছে।

সূত্র: বাসস



মন্তব্য চালু নেই