চাটমোহরে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা ও মেলা শেষ

পাবনার চাটমোহরে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূর্জা ও মেলা আনুষ্ঠানিক ভাবে গতকাল বুধবার শেষ হয়েছে। গত ১৩ এপ্রিল সোমবার বড়াল নদীর তীরে বোঁথড় গ্রামে শুরু হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী বিখ্যাত ‘চড়ক মেলা’।

হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে এই চড়ক মেলা চলে আসছে হাজার বছর ধরে। একটি চড়ক গাছকে কেন্দ্র করে চৈত্রের শেষ সপ্তাহে এই মেলা বসে। চৈত্র মাসের শেষ দিন থেকে শুরু হয়ে চলে তিনদিন ব্যাপী। আগে মেলা চলত পুরো বৈশাখ মাসব্যাপী।

পাবনার চাটমোহরের ঐতিহ্যবাহী বোঁথড় চড়ক মেলার সেই জৌলুস আজ আর নেই। তবুও আছে চড়ক গাছ, পাঠ ঠাকুর, বিগ্রহ মন্দির। তাই বছর শেষের এ মাসটিতে এখনো মেলা বসে, টিমটিম করে হলেও চলে তিনদিন ব্যাপী। বোঁথড়ের চড়ক মেলা দারিদ্র্যে জর্জরিত পশ্চাৎপদ বিল পাড়ের গ্রামীণ মানুষের এক ঘেঁয়ে নিরানন্দ জীবনে সাময়িকভাবে হলেও আনে কিছুটা বৈচিত্র্যের স্বাদ।

এমন এক সময় ছিল, যখন মেলার দেড়-দু’মাস আগেই বড়াল নদীর পাড়ের চাটমোহর উপজেলার বোঁথর গ্রামটিতে পড়ে যেত সাজসাজ রব। দূর-দূরান্ত থেকে দোকানিরা এসে তাদের পসরা সাজিয়ে বসত। দুঃসাহসিক আর গা শিউরানো নানান খেলাসহ যাত্রা, নাগরদোলা, জাদু প্রদর্শন, ঘোড়দৌড় ও পুতুল নাচের এক দীর্ঘমেয়াদি উৎসব আমেজে ভরে উঠত গোটা অঞ্চল। এখন ঘর-বাড়ি আর স্থাপনায় সংকুচিত হয়েছে মেলার জায়গা। মেলার বুক চিঁরে মহাদেব মন্দিরের সামনে দিয়ে বয়ে গেছে পাকা সড়ক।

বোঁথড় চড়ক মেলার জৌলুস কমলেও এখনো ঐতিহ্যবাহী আনুষ্ঠানিকতা আছে। বাঙ্গালী লোক সংস্কৃতির এই বৃহৎ উৎসবটি এখন মহাকালের সাক্ষী হয়ে কোনোমতে টিকে আছে মাত্র। মন্দির চত্বরেই বিখ্যাত চড়ক মেলা। মহাদেব মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক অশোক চক্রবর্তী ও সম্পাদক কিংকর সাহা জানান, সবার সহযোগিতা পেয়ে চড়ক পূজা অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই