চরম গরম !

বৃষ্টির দেখা নাই কয়েক দিন থেকে। পড়ছে প্রচন্ড গরম। জৈষ্ঠ্যের গরমে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। দিনে সূর্যের প্রখর তাপে একটু ছায়াযুক্ত স্থানের সন্ধানের জন্য হন্য হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে মানুষ।

সাড়া বাংলাদেশর তাপমাত্রা থেকে আজ রাজশাহীতে সবচেয়ে বেশি। গরমে মনে হচ্ছে যেন নেমে এসেছে অগ্নিকু-! কোথাও এতটুকু স্বস্তি নেই, শান্তি নেই। এর মধ্যেই চলছে দৈনন্দিন জীবন যাপন। বেঁচে থাকার লড়াই সংগ্রাম। শ্রমজীবী মানুষরা একটু অন্নের সংস্থানের জন্য প্রখর সূর্যাতাপকে উপেক্ষা করে কাজে নামতে হচ্ছে।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক দেবল কুমার মৈত্র অওয়ার নিউজকে জানান, আজ শুক্রবার (২২ মে) রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন ২৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল সকাল ৬টায় ৯৫ শতাংশ এবং বেলা ৩টায় ৫৫ শতাংশ, সন্ধ্যা ৬টায় ৬৪ শতাংশ।

তিনি জানান, গত ১৯ মে নগরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বৃহস্পতিবার ২১ মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৮ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০ মে রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে প্রতিদিনই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাড়ছে রাজশাহী অঞ্চলে।

এদিকে, দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করলেও আজ তা ৩৯ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। এর ওপর দুপুরে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় তাপমাত্রা আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে। ফলে তীব্র গরমে কাহিল হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।

অত্যধিক গরমে প্রায় প্রত্যেকের দৈনন্দিন জীবনের কর্মসূচিতে পড়ে ছেদ। দিনের কর্মসূচি শুরু হয় অনেকটা দেরি করে। অনেকের গরমের কারণে রাতে খুব একটা ভালো ঘুম হয় নি। কাজ করতে গিয়ে অল্পতে হাঁপিয়ে উঠছে সবাই। প্রকৃতির বাতাসের সঙ্গে সঙ্গে ফ্যানের বাতাসও আগুন।

প্রাণ বাঁচাতে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা পর্যন্ত পানির সন্ধান করছেন। পদ্মানদীর তীরের আশেপাশে এলাকায় গড়ে উঠা এলাকায় শিশু কিশোরা পানিতে দাপাদাপি করতে নেমে পড়ে। অসহায় প্রাণীরাও পিপাসার্ত হয়ে পানির সন্ধানে ছুটে বেড়ায়। অনেক জায়গায় গরু মহিষকে নদীতে গোসল করানো হয়।

দেবিসিংপাড়া এলাকার এইচএসসি শিক্ষার্থী নুসরাত নিশা বলেন, ‘উফ! এতো গরম কেন? গরমে মনে হচ্ছে মারা যাব! শরীরে কোনো জোর পাচ্ছি না। অনেক দুর্বল লাগছে।’যেমন রোদের তাপ, তেমন গরম! ঘরের বিছানা পর্যন্ত উত্তপ্ত হয়ে আছে। ঘরে গেলে আরো বেশি গরম লাগছে। এতো গরম হলে তো পড়ালেখার বারোটা বেজে যাবে!’

রিকশাচালক রহমান আলী বলেন, গরমে ভাড়া কম হচ্ছে। একটানা বেশিক্ষণ রিকশা টানা যাচ্ছে না। একটু পরপর বিশ্রাম নিতে হচ্ছে। একটা ভাড়া নিয়ে যাবার পর খানিক বিশ্রাম না নিলে আরেকটা ভাড়া টানতে পারছি না। খুব কষ্ট লাগছে তখন। কিন্তু উপায় তো নাই, কাজ করতেই হবে।



মন্তব্য চালু নেই