চবিতে সন্ধ্যার পর মেয়েদের চিকিৎসা নয়!

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) মেডিক্যাল সেন্টারে সন্ধ্যার পর ছাত্রীদের চিকিৎসাসেবা প্রধান দাপ্তরিকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ছাত্রীদের চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে গতকাল সোমবার থেকে নতুন করে শিডিউল ঠিক করা হয়েছে।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী একান্ত জরুরি প্রয়োজনে প্রভোস্টের অনুমতি এবং আবাসিক শিক্ষকের সঙ্গ ছাড়া সন্ধ্যা ৬টার পর কোনো ছাত্রী মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা নিতে যেতে পারবেন না।

গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. কামরুল হুদা স্বাক্ষরিত চিকিৎসা সংক্রান্ত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে নতুন এই নিয়ম জারি করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক ঘোষণায় জানানো হয়, উপাচার্যের মৌখিক নির্দেশে চবি মেডিক্যাল সেন্টারে কর্মরত মহিলা ডাক্তারগণ সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ছাত্রী রোগী দেখবেন। এই সময়ের পরে কোনো ছাত্রীর চিকিৎসার প্রয়োজন হলে ওই হলের প্রভোস্টের অনুমতি সাপেক্ষে আবাসিক শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে চিকিৎসাকেন্দ্রে যেতে হবে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান মেডিক্যাল অফিসার মো. আবু তৈয়ব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের নির্দেশে রোগী দেখার এমন নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে সোমবার থেকে। যদি কোনো নারী শিক্ষার্থী প্রয়োজনে চিকিৎসা নিতে চায় সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট হলের আবাসিক শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে।

জানা যায়, গত ১০ মার্চ চবি মেডিক্যাল সেন্টারের কর্তব্যরত চিকিৎসক মোস্তফা কামালের হাতে এক ছাত্রীর যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। তবে ওই শিক্ষক দাবি করেন, পেট ব্যথার অসুস্থতার কথা জানানোর পর কর্তব্যরত চিকিৎসক শুধু চিকিৎসার প্রয়োজনেই ওই ছাত্রীর পেটে হাত দিয়ে পরীক্ষা করেন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলের ওই শিক্ষার্থীর করা অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত চিকিৎসককে এর আগে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় কর্তৃপক্ষ। ঘটনা তদন্তে কাজ করছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রণীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নীতিমালা ২০০৮ অনুসারে ‘যৌন হয়রানি’ ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্র পরিচালনা কমিটি।

এই কমিটির প্রধান করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীন আক্তারকে। একই সঙ্গে অভিযুক্ত চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায়ও গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি।

এ দিকে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন হলের আবাসিক ছাত্রীরা। এই ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হলের আবাসিক শিক্ষকরা সন্ধ্যার পর থেকে হলে এসে বসে থাকেন না। সে ক্ষেত্রে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হলে আমাদের চিকিৎসা না নিয়ে আবাসিক শিক্ষক কখন আসবেন সে অপেক্ষায় বসে থাকতে হবে।



মন্তব্য চালু নেই