চবিতে ছাত্রলীগ-শিবির সংর্ঘষ, ব্যাপক ভাঙচুর

ক্রিকেট খেলা নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগ-শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগের কর্মীরা শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হলের মাঠে ক্রিকেট খেলতে গেলে শিবিরকর্মীদের সঙ্গে কথাকাটাকটি হয়। এ সময় শিবিরকর্মীরা ছাত্রলীগের কর্মীদের হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়ার হুমকি দিলে তারা নীরবে মাঠত্যাগ করেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে ছাত্রলীগের কর্মীরা জড়ো হয়ে আলাওল ও এ এফ রহমান হলে শটগান, পিস্তলসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় উভয় হল থেকে শিবিরকর্মীরা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। ছাত্রলীগকর্মীরাও তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। আহত হন— জিমেল, ফাহিম, জেমস, মাসুম, মিজান, রাসেল, ইকরাম, লিটন, তুহিন, মুক্তার, সামিসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন।

ছাত্রলীগকর্মীরা হলের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালালে শিবিরকর্মীরা বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। এ সময় ছাত্রলীগকর্মীরাও পাল্টা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। পরে ছাত্রলীগকর্মীরা আলাওল ও এ এফ রহমান হলের গেটের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে শিবিরকর্মীরা পালিয়ে যান।

ছাত্রলীগকর্মীরা হলের ভেতরে প্রবেশ করে উভয় হলের প্রায় দুই শতাধিক রুম ভাঙচুর করেন এবং বিভিন্ন রুম থেকে ল্যাপটপসহ বিভিন্ন জিনিস লুট করে নিয়ে যায়। এ এফ রহমান হলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাছে অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগকর্মীরা হলের ভেতরে প্রবেশ করে রুম ভাঙচুর করেন। তারা ল্যাপটপসহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যান।

ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন জুয়েল এ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের ছেলেরা আলাওল হলের মাঠে ক্রিকেট খেলতে গেলে শিবিরকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালান। পরে ছাত্রলীগের সবাই একত্রিত হয়ে তাদের প্রতিহত করেন। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হন।

ছাত্রলীগের সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মো. জমির উদ্দিন বলেন, শিবিরকর্মীরা ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগকর্মীদের ওপর হামলা চালান।

ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরী বলেন, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করতে শিবিরকর্মীরা আমাদের কর্মীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালান। পরে ছাত্রলীগকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের প্রতিহত করেন।

তবে ছাত্রলীগ নেতারা লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এ ব্যাপারে শিবিরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।

এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট এস এম মনিরুল হাসান বলেন, হলের বেশ কয়েকটি রুম ভাঙচুর করা হয়েছে। কিন্তু এর সংখ্যা তিনি বলতে পারেননি। হলের ভেতরে লুটপাটের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, হলে ছাত্রদের কিছু জিনিস খোয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মো. সালাউদ্দিন বলেন, ক্রিকেট খেলা নিয়ে ছাত্রলীগ-শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, তদন্ত সাপেক্ষ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে পরিস্থতি শান্ত আছে।



মন্তব্য চালু নেই