ঘুমের সমস্যা? এজন্য দায়ী কে? জানুন…

আমাদের শরীরের বায়োলজিক্যাল ঘড়ি মূলত বিছানায় যাওয়ার সময়টি নির্ধারণ করে দেয় না। কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার সময়টি নির্ধারণ করতে হয় প্রয়োজনীয়তার নিরিখেই। এ কারণে অনেকেই ঘুমের মারাত্মক সমস্যায় পড়ে থাকেন। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হাফিংটন পোস্ট।

গবেষকরা জানিয়েছেন, আমাদের ঘুমাতে যাওয়ার সময়টি সামাজিক অবস্থার কারণে প্রভাবিত হয়। কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার বিষয়টি প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে হয়। এ কারণে উভয়ের মাঝে একটি পার্থক্য তৈরি হয়ে থাকে, যা ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করে। এ সামজিক অবস্থার কারণে আপনার যত সকালেই কাজে যেতে হোক না কেন, আপনি তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যেতে পারবেন না। নানা কারণে আপনার প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যেতে হবে। আর এতে পরদিন ঘুম থেকে ওঠার সময়টি পরিবর্তিত হওয়া যাবে না। ফলে শরীরের ওপর প্রায়ই মারাত্মক চাপ সৃষ্টি হয়।

গবেষকরা বলছেন, সকালে আমাদের ঘুম থেকে ওঠার বিষয়টি নির্ভর করে বায়োলজিক্যাল ঘড়ির ওপর। এছাড়া সকালের নানা দায়িত্ব ও কাজ যেমন স্কুলে বা কর্মক্ষেত্রে যাওয়া ইত্যাদির জন্য দেহের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে হয়।এ বিষয়ে গবেষকদের একজন অলিভিয়া ওয়ালচ। তিনি ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের গবেষক। তিনি বলেন, ‘ঘুমাতে যাওয়ার বিষয়টি সামাজিকতার অংশ হলেও ঘুম থেকে ওঠার বিষয়টি মূলত নিয়ন্ত্রিত একটি বিষয়।’
এ গবেষণার জন্য ১০০টি দেশের আট হাজার অংশগ্রহণকারীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে তারা স্মার্টফোন অ্যাপ ব্যবহার করে প্রত্যেক এলাকার মানুষের ঘুমের সময়টি নির্ধারণ করেন। এছাড়া তাদের আলোতে যাওয়া, ঘুমের ওপর প্রভাব ও অন্যান্য বিষয়ও অনুসন্ধান করা হয়।

এতে দেখা যায়, সিঙ্গাপুর ও জাপানের অধিবাসীরা সবচেয়ে কম সময় ঘুমান। প্রতি রাতে তাদের গড় ঘুম সাত ঘণ্টা ২৪ মিনিট। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসের অধিবাসীরা সবচেয়ে বেশি সময় ঘুমায়। তাদের গড় ঘুম হয় আট ঘণ্টা ১২ মিনিট। তবে এ ঘুমের মাত্রা হিসাব করলে দেখা যায়, নির্দিষ্ট অঞ্চলের অধিবাসীদের মিল রয়েছে। যেমন কিছু অঞ্চলের অধিবাসীরা দেরি করে ঘুমাতে যায় আবার কিছু অঞ্চলের অধিবাসীরা অপেক্ষাকৃত তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যায়।

এছাড়া নারীদের পুরুষের তুলনায় গড়ে আধ ঘণ্টা বেশি ঘুমাতে দেখা যায়। গবেষকরা জানিয়েছেন, নারীরা সাধারণত পুরুষের তুলনায় কিছুটা সময় আগে ঘুমাতে যায় এবং ঘুম থেকে কিছুটা সময় পরে ওঠে।দিনের বেলা যাদের ঘুম ঘুম ভাব বা এ ধরনের সমস্যা হয় তাদের অনেকেরই রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হয় না। এ সমস্যার মূল কারণ হিসেবে দেখা যায় রাতে তারা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যেতে পারে না। মূলত নানা সামাজিক কারণে তাদের মাঝে এ অভ্যাস গড়ে ওঠে। এতে ঘুমাতে দেরি হলেও সকালে ঠিকই তাড়াতাড়ি উঠতে হয়। ফলে ঘুমের সমস্যা তৈরি হয়। এ বিষয়ে গবেষকদের গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে।



মন্তব্য চালু নেই