ঘনীভূত সুনন্দা মৃত্যুরহস্য, মেহেরকে জেরার উদ্যোগ দিল্লি পুলিশের

সুনন্দা পুস্করের মৃত্যুরহস্য উন্মোচনে খুনের মামলা দায়ের করে এবার পাকিস্তানি সাংবাদিক মেহর তারারকে জেরা করতে চলেছে দিল্লি পুলিশ।গত বছর রহসযজনক মৃত্যুর আগে স্বামী শশী তারুরের সঙ্গে মেহেরকে নিয়েই তীব্র বিবাদ হয়েছিল সুনন্দার।তারার ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এ ব্যাপারে যাবতীয় প্রশ্নের জবাব দিতে তৈরি।দিল্লি পুলিশ মেহেরকে ই মেলে পাঠানোর জন্য প্রশ্নমালা তৈরি করছে।সেগুলি পাঠিয়ে মেহরের জবাব চাওয়া হবে।

এদিকে তারুর এদিন গুরুবায়ুরে দাবি করেছেন, কোনওরকম রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ।যেন না হয় সুনন্দা মৃত্যুরহস্যের তদন্তে আগে থেকে কোনও সিদ্ধান্ত না নিয়েই পেশাদারি পুলিশি তদন্ত হোক, এমন কথাও বলেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, শীঘ্রই সময়, সুযোগ পেলে তিনি দিল্লি পুলিশের যাবতীয় প্রশ্নের মুখোমুখি হবেন দিল্লি পুলিশ সুনন্দার মৃত্যুর ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করার দিনকয়েক বাদেই আজ মিডিয়ার সামনে আসেন তারুর, দুসপ্তাহের  আয়ুর্বেদ চিকিত্সার কোর্স শেষ হওয়ার পর।এদিন তিনি বলেন, যেভাবে তদন্ত এযাবত্ এগিয়েছে, তাতে আমার মনে নানা প্রশ্ন, একরাশ উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।গতকালই পুলিস কমিশনারকে আমি লিখিতভাবে এটা জানিয়েছি।আশা করি তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গে এ নিয়ে তিনি কথা বলবেন।

দিল্লি পুলিশের দাবি, ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, সুনন্দার দেহে ১৫টি আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। পাওয়া গিয়েছে দাঁতের কামড়, ইঞ্জেকশনের দাগও। এদিকে, শশী তারুরের এক পরিচারককে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশের দাবি, কেটি নামে এক মহিলাকে কেন্দ্র করে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকত দিল্লি পুলিশের দাবি, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শশী তারুরের স্ত্রীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। মৃত্যুর নেপথ্যে উঠে এসেছে বিষক্রিয়ার তত্ত্ব। শুরু হয়েছে খুনের মামলাও। এফআইআরে পুলিশের দাবি, ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, সুনন্দার শরীরে ১৫টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। যা দেহ উদ্ধারের অন্তত ১২ ঘণ্টা থেকে ৪ দিন আগের। সুনন্দার শরীরে মিলেছে দাঁতের কামড় ও ইঞ্জেকশনের সূচের দাগও। পুলিশ সূত্রে খবর, আঘাতের চিহ্ন দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, কারও সঙ্গে ঝগড়ার সময় তাঁর সঙ্গে সুনন্দার ধস্তাধস্তি হয়েছিল। দিল্লি পুলিশের দাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, সুনন্দাকে বিষ খাওয়ানো হয়েছিল। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে বিষপ্রয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি চিকিৎসকরা।

পুলিশের এই দাবি ঘিরে রহস্য আরও দানা বেঁধেছে। গোটা পরিস্থিতিতে নয়া মাত্রা যোগ করেছে শশী তারুরের এক পরিচারকের বয়ান। পুলিশ সূত্রে খবর, নারায়ণ সিংহ নামে ওই পরিচারক তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, কেটি নামে এক মহিলাকে কেন্দ্র করে প্রায়শই শশী তারুর ও সুনন্দার ঝগড়া হত। ঝগড়া হলে সঞ্জয় দিওয়ান নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে চলে যেতেন সুনন্দা। সুনন্দার বাড়িতেও সঞ্জয়ের যাতায়াত ছিল।

পুলিশের দাবি, ওই পরিচারককে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও জানা গিয়েছে,

২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারি তিরুবনন্তপুরম থেকে দিল্লি ফেরেন সুনন্দা। এরপর সুনীল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে লীলা হোটেলের ৩০৭ নম্বর ঘরে ওঠেন।

সুনন্দার ২ বন্ধুও হোটেলে যান। পুলিশের দাবি, পরদিন অর্থাৎ

১৬ জানুয়ারি হোটেলের ৩০৭ নম্বর ঘর থেকে ৩৪৫ নম্বর ঘরে যান সুনন্দা। ১৭ জানুয়ারি তিনি হোটেলে গিয়ে দেখেন, সুনন্দা ঘুমোচ্ছেন। সেইসময় সঞ্জয় ফোন করে সুনন্দার শরীর কেমন আছে জানতে চান। ওই দিন বিকেলে সঞ্জয় হোটেলে এসেছিলেন বলে দাবি পরিচারকের।

এরইমধ্যে সুনন্দার ফোনে শশী তারুরের দু’টি মেসেজ আসে।

সন্ধেয় হোটেলে যান তারুর। রাত ৮.২০-তে বেরোনোর সময় সুনন্দাকে ঘুম থেকে ওঠাতে যান তিনি। কিন্তু, স্ত্রীর গায়ে হাত দেওয়ামাত্র শশী তারুর বলেন, সুনন্দা আর নেই! হোটেল ম্যানেজারকে চিকিৎসক ডাকতে বলেন সঞ্জয় দিওয়ান। চিকিৎসক গিয়ে সুনন্দাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এর কিছুক্ষণ পরই হোটেলের ৩৪৫ নম্বর ঘর থেকে সুনন্দার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

 



মন্তব্য চালু নেই