গ্রিসে গণভোট শুরু

গ্রিসে ইউরোপীয় উইনিয়নের শর্তসাপেক্ষ ঋণ প্রস্তাবের(বেলআইট) ওপর গণভোট শুরু হয়েছে। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই জানা যাবে এই বেলআউটের সম্পর্কে দেশটির জনগণের মনোভাব।

রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাতটায় (জিএমটি ৪টা) ভোটকেন্দ্রগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত চলবে ভোট। রাত ৯টার মধ্যে ভোটের প্রাথমিক ফল জানা যাবে বলে আশাকরা হচ্ছে।

১১ বছর আগে এই একই দিনে (৫জুলাই, ২০১৪) গ্রিসের রাস্তায় নেমে এসছিল লাখ লাখ মানুষ। সেদিন তারা রাস্তায় নেমেছিল ইউরোপীয় কাপ ফুটবল জেতার আনন্দে। কিন্তু আজকের এই গণভোট নিয়ে কার্যত দ্বিধা বিভক্ত দেশের এক কোটি দশ লাখ মানুষ। এর আগে দেশের কোনো বিষয়ে তাদের এতটা দোলাচলে থাকতে দেখা যায়নি। উভয় সংকটে পতিত গ্রিকরা এখনও বুঝে উঠতে পারছে না কোনটি তাদের জন্য ভালো হবে।

এ সম্পর্কে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত অথেন্সের বাসিন্দা ৬০ বছরের গিয়রগোস সারাফিয়ানোস রয়টার্সকে বলেছেন,‘দেশে আজ যে আতঙ্ক বিরাজ করছে আপনি সহজেই তা অনুভব করতে পারবেন।’ এই আতঙ্ক থেকেই হয়তবা তিনি রোববার ‘হ্যা’ ভোট দিতে চলেছেন।

এর আগে শুক্রবার যে চারটি জনমত জরিপ প্রকাশিত হয় তাতে কিছুটা এগিয়ে ছিল ‘হ্যা’ ভোট।

তবে প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস শুরু থেকেই না ভোটের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি তার দেশের লোকজনকেও এ বিষয়ে উৎসাহীত করার চেষ্টা করেছেন। তার দাবি, না ভোট জয়ী হলে আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের সঙ্গে দর কষাকষিতে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে তার বামপন্থি সরকার। এর আগে শনিবার আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর তীব্র সমালোচনা করেছেন গ্রিসের অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভারোফাকিস।

শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর ‘না’ ভোটের পক্ষে প্রচারণা চালাতে এথেন্সে সমবেত হয়েছিলেন ২৫ হাজার বেশি মানুষ। তারা না ভোট দেয়ার শপথ পাঠ করার সময় জানিয়েছে,‘আমরা আগামী রোববার বিশ্ববাসীকে গণতন্ত্র এবং মর্যাদার বার্তা পাঠাবো।’

কাছাকাছি একটি স্থানে সমাবেশ করেছেন বেলআউটের পক্ষে থাকা ‘হ্যা’ ভেটের সমর্থকরা। তারা আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের প্রস্তাবের বিরোধীদের হুঁশিয়ার করে বলেছেন, না ভোট জয়ী হলে ইউরোজোন থেকে গ্রিসকে বেরিয়ে যেতে হবে। হ্যাঁ ভোটের সমর্থকরা মনে করছেন, ইউরো থেকে বেরিয়ে গেলে গ্রিসের দুর্দশার অন্ত থাকবে না।

রোববারের এ ভোটের ওপরই নির্ভর করছে ঋণখেলাপি গ্রিসের ভবিষ্যৎ। তারা কঠোর কৃচ্ছতার শর্তে আর কোনো ঋণ নেবে কি না এবং ইউরোজোনে থাকতে পারবে কি না এসবই নির্ধারিত হবে এ ভোটের মাধ্যমে। তাই ভোটকে ঘিরে জনগণের আগ্রহের কমতি নেই। তবে ভোটারদের অনেকেই আছেন দোলাচলের মধ্যে। উভয় সংকটে পতিত গ্রিকরা এখনও বুঝে উঠতে পারছে না কোনটি তাদের জন্য ভালো হবে।



মন্তব্য চালু নেই