গ্রিকদের ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’, ইউরোজোনে শঙ্কা

অর্থনীতি পুনরুদ্ধার (বেইলআউট) প্রশ্নে আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের শর্তে সম্মত কিনা— এ বিষয়ে অনুষ্ঠিত গণভোটে এর বিপক্ষে মত দিয়েছেন বেশিরভাগ গ্রিক। গ্রিকদের এ রায়কে ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী এ্যালেক্সিস সিপ্রাস। অপরদিকে গ্রিসের ভবিষ্যত নিয়ে ‘শঙ্কা’ প্রকাশ করেছেন ইউরোজোনের নেতারা। খবর বিবিসির।

গ্রিসের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রশ্নে গত রবিবার অনুষ্ঠিত গণভোটে ৬১ দশমিক ৩১ শতাংশ গ্রিক ‘না’ ভোট দেন। ‘হ্যাঁ’ ভোট দেন ৩৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ গ্রিক। মোট এক কোটি ভোটারের ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর রবিবার রাতেই রাজপথে নেমে বিজয়োল্লাস করেন হাজার হাজার গ্রিক। ‘ঋণদাতাদের চাপে গ্রিস মাথা নত করবে না’ বলে উল্লেখ করেন তারা।

এদিকে ফলাফল প্রকাশের পর সোমবার টেলিভিশনে বক্তব্য দিয়েছেন গ্রিক প্রধানমন্ত্রী এ্যালেক্সিস সিপ্রাস। বক্তব্যে গ্রিকদের এ সিদ্ধান্তকে ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি ওয়াকিবহাল যে, আপনারা আমাকে যে ম্যান্ডেট দিয়েছেন তা বিচ্ছেদের ম্যান্ডেট নয়।’ একই সঙ্গে সোমবারই ঋণদাতাদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসবেন বলেও জানিয়েছেন সিপ্রাস।

এদিকে গ্রিকদের এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশটি আরও সঙ্কটের মুখে পড়বে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইউরোজোনের নেতারা। গ্রিসের জন্য ঋণ সংক্রান্ত আলোচনা ‘ভাবনার চেয়েও কঠিন’ হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেছেন জার্মান ডেপুটি চ্যান্সেলর সিগমার গ্যাব্রিয়েল।

ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রীদের নেতা জোরেন ডিজসেলব্লোয়েম গণভোটের ফলাফলকে ‘খুবই দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট মার্টিন স্কুলজ বলেছেন, ‘এর ফলে খুবই কঠিন ও নাটকীয় সময়ে পৌঁছেছে ইউরোপ।’

তবে গণভোটের এ রায়ের ফলে আলোচনার নতুন দুয়ার খুলেছে বলে উল্লেখ করেছেন ইতালী ও বেলজিয়ামের মন্ত্রীরা।

ইউরোপজুড়ে বৈঠক

গ্রিসের গণভোটের পর পরই সোমবার জরুরী বৈঠকে বসছেন জার্মান চ্যান্সেলর এঞ্জেলা ম্যার্কেল ও ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। গ্রিসকে সর্বোচ্চ ঋণদানকারী দেশ দুটির সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

একই দিন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) কর্মকর্তাদের নিয়ে সম্মেলন ডেকেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যাঁ ক্লদ জাঙ্কার।

ইউরোজোনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে আগামী মঙ্গলবার একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এর মাঝে বা এর পর গ্রিসের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ইউরোজোনের নেতারা।



মন্তব্য চালু নেই