গ্যাসের জ্বালা, কী করবেন?

বুক জ্বালা করলেই অনেকে টুক করে একটা অ্যান্টাসিড খেয়ে ফেলেন৷ খুব কষ্ট বাড়লে তবে হয়তো ডাক্তারের কাছে যান৷ সেখানে গিয়ে ডাক্তারকে গ্যাস, অম্বলের সমস্যার কথাই জানান৷ চিকিৎসকও উপশমের জন্য নানাবিধ ওষুধ দিয়ে তাদের কষ্ট কমিয়ে দেন৷ কিন্তু আসলে হয়তো রোগীর হার্টের সমস্যা বা ডায়াবেটিস আছে কিংবা পাকস্থলিতে গণ্ডগোল৷ সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় পরবর্তীকালে ফের বদহজম দেখা দেয়৷ গ্যাস্ট্রিক আলসার, হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া পেট জ্বালার অন্যতম কারণ৷

যারা রাস্তার খাবার বেশি খান তাদেরই এই সমস্যায় ভুগতে হয় বেশি৷ অনেক সময় খাবারের মান ভালো হলেও যে পাত্রে কাপ-ডিশ ধোয়া হয়, তা থেকে হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি শরীরে প্রবেশ করে৷ খাবারের দোকানের পাশে নোংরা ফেলার জায়গা থেকে কীভাবে যে ব্যাকটেরিয়া শরীরে ঢুকে পড়ে কেউ টেরও পায় না৷ থালা-বাটি পরিষ্কার না থাকলে আমাশাও হয়৷

খাদ্যাভ্যাসই দায়ী?

মূলত বেশি ভাজাভুজি, মশলাদার খাবার খেলে হজমের সমস্যা দেখা দেয়৷ অপরিচ্ছন্ন জায়গা থেকে খাবার খাওয়ার ফলেও তা হতে পারে৷ দেখা যায়, একশজন শিঙাড়া, কচুরি খেলে ৩০ জনই অম্বলে ভোগেন৷ আসলে তাদের খাদ্যনালি, পাকস্থলীতে কোনো সমস্যা থাকে৷ গ্যাস্ট্রোএসোফাগেল রিফ্লাক্স ডিজিজ বা গলব্লাডারে স্টোন থাকাও সম্ভব৷ এছাড়া একটু হাঁটা-চলা না করলেও খাদ্য হজমে সমস্যা হয়৷ বাড়ির মহিলাদের সেভাবে হাঁটাহাঁটি করা হয় না৷ তাই নিয়মিত হাঁটা, যেমন জরুরি তেমনই প্রযোজন ব্যায়ামও৷

সুস্থ থাকতে কী করবেন?

অম্বলের সমস্যা দূর করতে রোজ প্রচুর শাক-সবজি, স্যালাড খেতে হবে৷ ভাজাভুজি এড়িয়ে চলুন৷ অম্বলে ভুগলে প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে ব্যায়াম করুন৷ রাতে খাওয়ার পর অন্তত ১০-১৫ মিনিট হাঁটুন৷ সিগারেট, মদ এড়িয়ে চলুন৷ খাওয়ার পর দু-তিন ঘণ্টা ঘুমাবেন না৷ একবারে অনেকটা না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খান৷ মোটা হলে ওজন কমান৷

পরীক্ষা ও চিকিৎসা

ঘন ঘন গ্যাস, অম্বলে ভুগলে অন্ত্র ও পাকস্থলি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজিস্টকে দেখান৷ শুধু অম্বলের কষ্টের কথা না বলে ডাক্তারকে বলুন আর কী কী সমস্যায় ভোগেন৷ পারিবারিক ইতিহাস জেনেও চিকিৎসক অনেক সময় অম্বলের কারণ অনুসন্ধান করে সেই মতো চিকিৎসা শুরু করেন৷ রোগী কেন এই সমস্যায় ভুগছেন তা জানতে সাধারণত পেটের আল্টাসোনোগ্রাফি করা হয়৷ লিভারের অবস্থা জানতে এন্ডোস্কপি করা হয়৷ কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে কোলনস্কপি বা পেটের এক্স-রে করে দেখা হয়৷ অন্ত্র, পাকস্থলী, খাদ্যনালীতে ব্লিডিং হচ্ছে কি না দেখতে স্টুল-ব্লাড টেস্ট করা হয়৷

বুক জ্বালা-অম্বল হলে কী করবেন?

পানি খান৷ প্রাথমিকভাবে অ্যান্টাসিড, জেলোসিল খাওয়া যায়৷ তবে পানি খেয়ে বমি করে অম্বল থেকে মুক্তি পেতে চান অনেকে৷ এটা ঠিক নয়৷ অম্বল, গ্যাসে যারা প্রায় ভোগেন তারা এই টোটকাটি মেনে চলতে পারেন৷ এক চামচ জোয়ান, এক চিমটে বিট নুন ও গোল মরিচের গুঁড়ো এক গ্লাস গরম পানিতে সকালে ভিজিয়ে রাখতে হবে৷ দুপুরে খাওয়ার এক ঘণ্টা পর ওই পানি ছেঁকে পান করুন, উপকার মিলবে৷



মন্তব্য চালু নেই