‘গোস্যায়’ পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন এরশাদ

সোমবার দুপুর থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়েজাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ পদত্যাগ করেছেন’। প্রতিটি মিডিয়ার সংবাদ কর্মীরা বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেন। কেউ বা ছোটেন তার কাকরাইলের পার্টি কার্যালয়ে। আবার কেউ কেউ তার সঙ্গে ফোনেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন।

খবরটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে মিডিয়া কর্মীদের কাছ থেকে অনলাইন মিডিয়ার বদৌলতে সাধারণ মানুষের কাছে।

জানা গেছে, রোববার দলের মিটিংয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে এরশাদ নাকি গোস্যা করেছেন। আর সেই গোস্যার কারণেই পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন।

এ ব্যাপারে এরশাদের একান্ত সহকারী মেজর (অব.) খালেদ বলেন, ‘এসব গুজব। দলের মাঝে অনেক কিছু হতেই পারে। তাই বলে কি পদত্যাগ করতে হবে নাকি। আর পদত্যাগ করলেও তো সবাইকে জানিয়েই করবেন। আসলে কেউ কেউ দলের মাঝে ছিদ্র অন্বেষণ করার চেষ্টা করছেন।’

অপরদিকে এরশাদ একটি গণমাধ্যমের কাছে তার পদত্যাগ সম্পর্কে বলেছেন, ‘এসব গুজব। আমি  পদত্যাগ করব কেন? আমি পার্টির সুপ্রিম অথরিটি।’

এরশাদ বলেন, ‘আমি যদি পদত্যাগ করতে চাই, তাহলে পার্টির প্রেসিডিয়াম কমিটির মিটিং আহ্বান করতে হবে, সেখানে আলোচনা করে আমি অব্যাহতি নিতে পারি।’

এরশাদের একজন ঘনিষ্টজন জানান, এরশাদ নাকি সকালে ঘুম থেকে উঠেই বলেন তিনি পদত্যাগ করবেন আর পার্টির চেয়ারম্যান পদে থাকবেন না। অবশ্য তখনই তিনি বনানী কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন। কিন্তু আর যাননি। পরে তিনি অবশ্য দুপুর ১২টার দিকে বনানীর পার্টি কার্যালয়ে যান এবং সেখানে ঘণ্টা খানেক অবস্থান করেন।

হঠাৎ করেই কেন পার্টির চেয়ারম্যান এমন সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলেন এমন বিষয়টি নিয়ে পার্টির একাধিক সিনিয়র নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের কেউই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সূত্র জানায়, রোববার দুপুরে গুলশানের একটি সেন্টারে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এমপিদের নিয়ে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তিনি স্ত্রীরেওশন ও পার্টির অন্য নেতাদের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। অবশ্যই এ সময় তাকে অনেকেই অনেক প্রশ্নবানে জর্জরিত করলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি। পুরো মিটিংয়ে তিনি চুপচাপ ছিলেন। তারপরও খুশি ছিলেন নেতাদের উপস্থিতি দেখে।

কিন্তু হঠাত করেই তিনি কেন সকাল বেলা উঠেই বেঁকে বসলেন এবং পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েও আবার পদত্যাগ করলেন না তা অনেকেই বুঝতে পারছেন না।

পার্টির অনেক সিনিয়র নেতা মনে করছেন, রোববার তিনি স্ত্রী ও অন্য নেতাদের সমালোচনার মুখে পড়েন। হয়তো এতেই রাগ করে এমন কথা বলতে পারেন। আবার অনেকে এরশাদের এমন কথাকে তার ‘গোস্যা’ বলেই ধরে নিচ্ছেন। এছাড়া রোববারে মিটিং নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় যে ধরনের নেতিবাচক খবর প্রকাশ হয়েছে তাতেও হয়তো তিনি মনোক্ষুণ্ন হতে পারেন। আর এসব বিষয় ভেবে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

কিন্তু গণমাধ্যমে খবরটি দ্রুত প্রকাশ হওয়ায় এবং নেতাকর্মীদের জোরাজুরি ও পার্টির ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করেই পদত্যাগ করেননি।

আরও জানা গেছে, এরশাদ বনানী কার্যালয়ে গেলে এ খবরে অনেক নেতাই ছুটে যান সেখানে। তারপর তারা তাকে নানাভাবে বোঝাতে থাকেন। বেলা দুটার দিকে এরশাদ বারিধারার নিজ বাসায় ফিরে যান। ততক্ষণে ছড়িয়ে পড়ে এরশাদের পদত্যাগের গুঞ্জন।



মন্তব্য চালু নেই