গির্জা বানাচ্ছে মুসলিমরা

দরিদ্র কৃষকদের বাস পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের গোজরা অঞ্চলের একটি গ্রামে। কৃষকরা তাদের আয়ের একটা অংশ জমাচ্ছে প্রতিবেশী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের প্রার্থনার জন্য গির্জা নির্মাণের জন্য। দেশটিতে ধর্মীয় সহিংসতা ও সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের মধ্যে এ খবরটি মানুষকে নাড়া দিয়েছে।

খ্রিস্টান প্রতিবেশীরা যেন একসাথে প্রার্থনা করতে পারেন এ লক্ষ্যেই গির্জা নির্মাণ শুরু করেন মুসলিম কৃষকরা।

ইজাজ ফারুক ওই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি প্রতিদিন মসজিদে নামাজ পড়ার পর গির্জায় যান।

তার খ্রিস্টান প্রতিবেশীদের জন্য গির্জা নির্মাণের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে তিনিও একজন। তাদের আশা, এই গির্জা নির্মাণের পর খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষরা একসাথে শান্তিতে থাকতে পারবে, একসাথেই প্রার্থনা করতে পারবে।

ইজাজ ফারুক বলেন, ‘গোজরা দাঙ্গার পর আমরা সবাইকে আরো বেশি কাছাকাছি আনার চেষ্টা করছি। এই গির্জা নির্মাণের মাধ্যমে আমরা দেখাতে চাই যে, একটা সম্প্রদায়ের মতো আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।’

ফারুকের প্রতিবেশী খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ফারইয়াল মসিহ বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই দেখছি ধর্মের উপরেও আছে বন্ধুত্ব। এ গ্রামের খ্রিস্টান অধিবাসীদের জন্য আলাদা কোনো বাড়ি নেই, তারা মুসলিমদের সাথেই বাস করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার জন্মের পর থেকেই দেখছি, সবাই একসাথে বাস করছি ভালোবাসা নিয়েই। একে অপরের বিয়ে উৎসবে যোগ দিচ্ছি। আমরা সুখ-দুঃখ একে অপরের সাথে ভাগ করে নিচ্ছি। গোজরায় যা ঘটেছিল তার যেন পুনারবৃত্তি না হয় আমি সেই প্রার্থনাই করি।’

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে গোজরায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ওপর ধর্মীয় হামলার ঘটনা ঘটে। তখন আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয় তাদের গির্জা ও ঘরবাড়ি। ওই হামলায় ১০ জন নিহতও হয়। আজও ওই গ্রামের মানুষেরা সেই সহিংসতার কথা ভুলেনি। কিন্তু তারা দেখিয়ে দিতে চায় ব্যক্তিগত ভালোবাসা সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে হারিয়ে দিতে পারে।



মন্তব্য চালু নেই