গাছে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে মাদক ব্যবসা!

বগুড়ার ধুনটে ইউসুফ আলী নামের এক ব্যক্তির বাড়ির গাছ থেকে তিনটি সিসি ক্যামেরা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এলাকাবাসীর ভাষ্য, নিরাপদে মাদক ব্যবসার জন্যই এই ক্যামেরাগুলো লাগানো হয়েছিল। অবশ্য ইউসুফ আলী বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

মাদক সেবনের দায়ে গতকাল রোববার রাতে ইউসুফ আলী (২৫) ও মনোয়ার হোসেন (২২) নামের দুই ব্যক্তিকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে আজ সোমবার ইউসুফের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। তিনি এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। বেশ কয়েকবার তিনি মাদকসহ গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিনে ছাড়া পান।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, ধুনট উপজেলার মাঠপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলী ও পৌর এলাকার অফিসারপাড়ার মনোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক বিক্রির সঙ্গে যুক্ত। গতকাল রাত ১০টার দিকে মাদক সেবন করার সময় শেরপুর-ধুনট বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাতেই তাঁদের ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাফিজুর রহমানের সামনে হাজির করা হয়। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ সকাল ১০টার দিকে ইউসুফ আলীর বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় গাছের সঙ্গে বাঁধা তিনটি সিসি ক্যামেরা পাওয়া যায়।

ম্যাজিস্ট্রেট হাফিজুর রহমান জানান, আদালতের সামনে মাদক সেবনের কথা স্বীকার করায় তাঁদের এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার ভাষ্য, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে নিরাপদে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যেতে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছেন ইউসুফ। এতে পুলিশ তাঁর বাড়ির কাছে এলে তা আগেই জানতে পারতেন তিনি। এর ফলে মাদকদ্রব্যসহ পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেতেন তিনি। প্রায় মাস খানেক আগে ক্যামেরাগুলো বসানো হয়। এলাকার মানুষ ভয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না।

তবে বাড়িকে কে যাওয়া-আসা করে, তা দেখার জন্যই ক্যামেরাগুলো বসানো হয়েছিল বলে দাবি করেন থানা হাজতে আটক ইউসুফ আলী। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়িতে কে আসে বা যায়, সেটা দেখার জন্যই সিসি ক্যামেরাগুলো লাগানো হয়েছে। কারও বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগানো কি অপরাধ? আমার নিকট কোনো মাদক ছিল না। পুলিশ সন্দেহ করে আমাকে গ্রেপ্তার করে আর ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দিয়েছে।’

ধুনট সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম মাসুদ রানা বলেন, ‘ইউসুফ এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। শুধু আমি কেন, এলাকার সবাই বিষয়টি জানে। অনেকবার পুলিশকে দিয়ে তাঁকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করানো হয়েছিল। জামিনে বের হয়ে ইউসুফ আবারও মাদক ব্যবসা শুরু করে।’

পরিদর্শক পঞ্চনন্দন সরকার আরও জানান, ইউসুফের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সিসি ক্যামেরা, একটি টিভি, একটি মনিটর, ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ও মাদক সেবনের আলামত উদ্ধার করে পুলিশ। আজ বেলা তিনটার দিকে তাঁদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই