গাইনি ডাক্তার দেখাতে গেলে করবেন না যে কাজগুলো

নিজের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে যে কথাগুলো কাউকে বলা যায় না, এমনকি নিজের সবচাইতে কাছের বান্ধবীকেও না, সেসব সমস্যা নিয়েই মেয়েরা যান গাইনি ডাক্তারের কাছে। লজ্জায় অনেকে বছরে একবার করেও গাইনি ডাক্তারের কাছে যেতে চান না। ডাক্তারের কাছে যাবার পরেও তারা করে থাকেন এমন কিছু কাজ যা আসল অদরকারী এমনকি যাতে তার নিজেরই হয় ক্ষতি। জেনে নিন গাইনি ডাক্তারের সেবা নেওয়ার ব্যাপারে এমন কিছু কাজ।

১) অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেবার ক্ষেত্রে অস্বস্তি

সাধারণ কোন ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতেও আপনার একটু চিন্তা হতে পারে। কিন্তু লজ্জিত হবার কিছু নেই। দরকার হলে নিজের পরিবার ও বান্ধবীদের পরিচিত কোন ডাক্তারকে দেখান, তাতে আপনার সংকোচ কম হবে। আর এটাই যদি গাইনি ডাক্তারের কাছে আপনার প্রথম ভিজিট হয় তাহলে সেটা তাকে জানান। তিনি আপনার সাথে নরম ব্যবহার করবেন।
২) ডাক্তারের সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে সংকোচ

আপনি ভাবছেন আপনার সমস্যাটা খুব অদ্ভুত বা লজ্জাজনক। আসলে কিন্তু তা নয়, গাইনি ডাক্তারের কাছে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ চেকআপের জন্য আসেন, তিনি আপনার যে কোন সমস্যায় সাহায্য করতে পারবেন। আপনার অস্বস্তি লাগলেও নিজের সমস্যা খুলে বলুন। সমস্যার কথা বলতে লজ্জা লাগলে অন্তত লিখে নিয়ে যান।

৩) নিজের স্বাস্থ্য সমস্যার ব্যাপারে গুগল করা

যে কোন সমস্যার সমাধান গুগল করে বের করা যেতে পারে সত্যি, কিন্তু স্বাস্থ্য সমস্যার ক্ষেত্রে তা অবশ্যই করবেন না। খুব সাধারণ সমস্যা নিয়ে গুগল করলেও আপনার মনে হবে আপনার ভীষণ খারাপ অসুখ হয়েছে, আপনি মারা যাচ্ছেন! স্বাস্থ্যগত ব্যাপারে জলজ্যান্ত ডাক্তারের পরামর্শের কোন বিকল্প নেই। কারণ তিনি আপনাকে সামনাসামনি দেখবেন, আপনার মেডিকেল হিস্ট্রি সম্পর্কে অবগত থাকবেন। গুগল যদি করতেই চান, তাহলে বিশ্বাসযোগ্য কিছু সাইটে যেতে পারেন। কিন্তু এরপরেও ডাক্তার আপনাকে দেখাতেই হবে।

৪) পিরিয়ডের কারণে চেকআপ ক্যান্সেল করা

অ্যাপয়েন্টমেন্ট ঠিক করে বসে আছেন অথচ সেদিনই আপনার পিরিয়ড শুরু হয়ে গেছে। এ কারণে অযথাই অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাদ দেবেন না। ডাক্তারের সাথে অন্তত কথা বলতে পারবেন নিজের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে। সংকোচ লাগলে আপনি ওই ডাক্তারের কাছে ফোন করে জেনে নিতে পারেন পিরিয়ডের সময়েও ডাক্তারের কাছে যেতে সমস্যা আছে কিনা।

৫) UTI এর সমস্যা নিয়ে সময়মত ডাক্তারের কাছে না যাওয়া

নারীদের মাঝে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা UTI এর সমস্যাটা খুব সচরাচর দেখা যায় এবং একে আমলে আনেন না অনেকেই। এমনকি অনেকেই ভাবেন এটা এমনিই ঠিক হয়ে যাবে, কেউ কেউ ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারে সমস্যার সমাধান করতে চেষ্টা করেন। কিন্তু এই সমস্যাটা খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি কিডনিতেও ক্ষতি করতে পারে। এ কারণ খুব দ্রুত ডাক্তার দেখানোটা জরুরী। গাইনি ডাক্তার এমনকি সাধারণ কোন ডাক্তারকে জানিয়ে দ্রুত ওষুধ খাওয়া দরকার এক্ষেত্রে।

৬) যন্ত্রণাদায়ক পিরিয়ড মুখ বুজে সহ্য করা

অনিয়মিত পিরিয়ড, পিরিয়ডের সময়ে প্রচন্ড ব্যাথা, হেভি ফ্লো, অতিরিক্ত মেজাজ খারাপ- এসব সমস্যা কারো কারো হয় প্রতি মাসে এবং তারা মুখ বুজে সহ্য করেন। কিন্তু এই সমস্যাগুলোরও আসলে সমাধান আছে। আপনার গাইনি ডাক্তার এগুলোর সমাধান দিতে পারবেন। সুতরাং তাকে খুলে বলাই ভালো।

৭) অনিরাপদ যৌনজীবন

বার্থ কন্ট্রোল, যৌনরোগ এসব ব্যাপারে ডাক্তারের সাথে কথা বলা তো দূরের কথা, চিন্তাও করতে পারেন না অনেক সাবেকি ধ্যান-ধারণার নারী। কিন্তু এসব ব্যাপারে জেনে রাখাটা আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্যই জরুরী।
নিজেকে সুস্থ রাখার জন্যই আপনার উচিৎ গাইনি ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা। নিয়মিত চেকআপ করানো গেলে ভালো। কিন্তু তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে অন্তত কোন সমস্যা দেখা দিলে তা নিয়ে বসে থাকবেন না, ডাক্তারের কাছে যাবেন যতো দ্রুত সম্ভব। লজ্জার চাইতে আপনার জীবন এবং সুস্থতা অনেক বেশি জরুরী।



মন্তব্য চালু নেই