গরু পাচারে ঝিমিয়ে পড়েছে নওগাঁর সীমাস্ত এলাকা

আর কয়েক সপ্তাহ পরেই পবিত্র ঈদুল আযহা (কোরবানীর ঈদ) অন্যান্য বছরের তুলনায় কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে এবার নওগাঁর সকল সীমান্তে গরু পাচারে অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে এখানকার গরু চোরা কারবারীর সদস্যরা। গতবছর কোরবাণীর ঈদে সীমান্ত দিয়ে পালে পালে গরু দেশে প্রবেশ করলেও এবছর একই সময়ে চোখে পড়ছে ভিন্ন চিত্র, ভারতীয় সীমাস্ত বাহিনী বিএসএফ’র কঠোর পাহারা ও নজরদারীতে বর্তমানে সীমাস্ত দিয়ে গরু আসা অনেকটাই বন্ধের উপক্রম হয়ে পড়েছে। এর পরেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চোরাই পথে ভারত থেকে গরু আনতে গিয়ে গত ৩ মাসে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ৪-৫জনকে বিএসএফ’র গুলি ও নির্যাতনে জীবন দিতে হয়েছে।

কোরবানীর ঈদে পশুর ব্যাবস্যায় অধিক লাভের আসায় বিএসএফ, বিজিবির চোখকে ফাঁকি দিয়ে অনেকেই কঠোর গোপনীয়তা অবল্বন করে এখনও সীমাস্ত দিয়ে দু’চারটি গরু চোরাই পথে আমদানী করে চলেছে। ভারত সরকার এই ঈদে বাংলাদেশে গরু রপ্তানীতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ’রাও সীমান্ত এলাকায় কঠোর নজরদারী ও তাদের টহল বৃদ্ধি করেছে বলে একাধিক গরু ব্যাবসায়ী জানিয়েছেন। গত এক সপ্তাহে পোরশা, সাপাহার, পত্মীতলা ও ধামুর হাট উপজেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে আসা মোট ৮৭টি গরু ও ৫টি মহিষ এর করিডোর হয়েছে বলে সাপাহার শুল্ক করিডোর অফিস সূত্রে জানা গেছে। তবে বিজিবির চোখকে ফাঁকি দিয়ে চোরাই পথে ভারত থেকে আসা অধিকাংশ গরু মহিষের করিডোর না করিয়ে চোরাকারবারীরা চোরাই ভাবে দেশের অভ্যন্তরে বিক্রি করছে বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চোরাকারবারী দলের সদস্যরা জানিয়েছেন।

বর্তমানে পোরশা উপজেলার নিতপুর, সাপাহার উপজেলার হাপানিয়া, কলমুডাঙ্গা, আদাতলা, পাতাড়ী, বামনপাড়া, সুন্দরইল, সোনাডাঙ্গা ও খঞ্জনপুর। পতœীতলা উপজেলার হাটশাওলী, রাধানগর, শীতলমাঠ এবং ধামুইর হাট উপজেলার শিমুল তলী, আগ্রাদ্বিগুন, বস্তাবর, কালুপাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চোরাকারবারীরা ভারত থেকে গরু আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

বিজিবি ও বিএসএফ’র কঠোর নজর দারীতে সহজে গরু আনতে না পারায় অনেক সময় তারা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ভারত থেকে মরণ নেশা হিরোইন, ইয়াবা ট্যাবলেট, গাঁজা সহ বিভিন্ন ধরনের মাদক দ্রব্য আমদানী করে দেশের যুব সমাজকে ধ্বংস করছে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।

এ বিষয়ে ১৪বিজিবি ব্যাটালিয়ান অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল রফিকুল হাসান পিএসসির সাথে কথা হলে তিনি জানান যে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে যে হেতু তারা সহজে গরু আনতে কোন ছাড় দিচ্ছেনা এজন্য বাংলাদেশী কোন লোককে ভারত অভ্যস্তরে গিয়ে গরু না আনার জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তবে ভারতীয় কোন লোক সীমান্ত পেরিয়ে জিরো লাইনে তাদের গরু আনলে কেবল তাদের গরু গুলিই গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি বিভিন্ন সীসন্ত রক্ষী বাহিনীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

এছাড়া তিনি বাংলাদেশী কোন লোককে ভারতে অবৈধ অনু প্রবেশে করার উপর কঠোর বিধি আরোপ করেছেন। অপর দিকে মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা (কোরবাণীর ঈদ) এ ভারত সরকার গরু রপ্তানীতে নিষেধাজ্ঞা জারী করায় দেশে কোরবানীর ঈদে পশু সংকট পুশিয়ে নিতে সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে অনেক আগে থেকেই পশুপালনকারী ব্যক্তিগণ গরু মোটা-তাজা করণ ব্যাবসায় অসংখ্য গরু পালন করেছেন বলে একাধিক ক্ষুদ্র ডেইরী ফার্মের মালিকগণ জানিয়েছে। তবে ভারত থেকে পর্যাপ্ত গরু, মহিষ না আসায় বর্তমান বাজারে মূল্য বৃদ্ধিতে অনেকটায় প্রভাব পড়তে পারে বলে এলাকার অভিজ্ঞ মহল ও গরু ব্যাবসায়ীগণ মনে করছেন।



মন্তব্য চালু নেই