‘গরু দুধ দেয়, ভোট নয়’

গরু দুধ দেয়, ভোট নয়। সম্প্রতি গরু নিয়ে সারা ভারতে সাম্প্রাদয়িক উন্মাদনার পরও বিহারে বিজেপির ভরাডুবির প্রেক্ষিতে সোস্যাল মিডিয়ায় এমন একটি মন্তব্য করেছে বসেছেন ইমরান খান নামের এক অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট। গরুর মাংস খাওয়া না খাওয়া নিয়ে দ্ব্ন্দ্ব, গুরুর মাংস নিষিদ্ধকরণ- ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছিল।

বিশেষ করে কট্টর হিন্দুবাদী দল ক্ষমতাসীন বিজেপির ‘পলিটিক্যাল গেম’, তার সমমনা দল ও সংঘগুলোর কট্টর অবস্থান, এ নিয়ে অহেতুক উন্মাদনা ভারতের অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। একইসঙ্গে আসন্ন নির্বাচনে বিজেপির অবস্থান কি হবে, তা নিয়েও চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তবে অনেকের মতে, বিজেপি ও তার সংঘগুলো সাম্প্রদায়িকতার জিগির তুলে আগামী নির্বাচনের বৈতরণীও পার হওয়ার ফন্দি আঁটছে। কিন্তু বিহারের নির্বাচন প্রমাণ করে দিয়েছে বিজেপির সস্তা সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা ও পলিটিক্যাল গেমকে পাত্তাই দিচ্ছে না ভারতের জনগণ।

ডয়চে ভেলেতে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের বিহার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির কারণে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি দল। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রশ্নের বাইরেও দেশের আদর্শগত ভবিষ্যতের বিষয়টিও বার বার উঠে আসছে সামনে।

নির্বাচন মাত্রই হারজিতের প্রশ্ন। কিন্তু ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি দল ও তাকে কেন্দ্র করে উগ্র হিন্দুত্ববাদী ‘সংঘ পরিবার’ সম্প্রতি অসহিষ্ণুতা, সাম্প্রদায়িক বিভাজনের মতো বিষয়কে বার বার হাতিয়ার করেছে, তা দলীয় রাজনীতির সংঘর্ষের সীমারেখা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ উঠছে। ফলে অনেকে বিহারে বিজেপির পরাজয়কে সেই বিভাজনের রাজনীতির পরাজয় হিসেবে দেখছেন। প্রজ্ঞা শ্রীবাস্তব কলকাতার দৈনিক ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এ একটি শ্লেষাত্মক বিশ্লেষণ শেয়ার করেছেন। তাতে তিনি সোস্যাল মিডিয়ায় আসা বিভিন্ন কমেন্ট ও স্ট্যাটাস জুড়ে দিয়েছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে- ভারতের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম মনে করেন, মোদীর সামনে দুটি পথ খোলা রয়েছে। তিনি আবার পুরো সময়ের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন এবং পুরো সময় তার উন্নয়নের অ্যাজেন্ডার প্রতি মনোযোগ দিতে পারেন।

বিশাল মেহরা মনে করেন, বিহার নির্বাচনের ফল দেখিয়ে দিচ্ছে যে গরুর মাংস নিষিদ্ধ করার মতো ফালতু বিষয় তাদের মোটেই সাহায্য করে না। তাই উন্নয়নের প্রতি মনোযোগ দেয়া উচিত।

ইমরান খান নামরে এক অ্যাক্টিভিস্ট সবচেয়ে মজার ও চমকপ্রদ মন্তব্যটি করেছেন তার টুইটার অ্যাকাউন্টে। তিনি লিখেছেন, ‘একটি বিষয়ের প্রমাণ হয়ে গেছে যে গরু শুধু দুধ দেয়, ভোট দেয় না।’

বিজেপির একের পর এক পরাজয়ের প্রেক্ষিতে দলের ‘সুদিন আসছে’ স্লোগানকে কটাক্ষ করে মহেশ মূর্তি টুইট করেছেন।

বিহারে বিজেপির পরাজয় ঘটলে পাকিস্তানে উল্লাস দেখা যাবে ও আতসবাজি পোড়ানো হবে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। ফলাফল জানার পর দুই দেশেই এ বিষয়ে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

ভারতের সংঘ পরিবার এমনই অসহিষ্ণু অবস্থায় পৌঁছেছে যে, বলিউড স্টার শাহরুখ খানকেও তারা পাকিস্তানের দালাল বলতে ছাড়েনি। এমনকি তাকে পাকিস্তানে চলে যেতেও বলেছে হিন্দু কট্টরপন্থিরা।



মন্তব্য চালু নেই