বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক

গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত

গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। বৃহষ্পতিবার (২৬নভেম্বর) ভোর ৫টার দিকে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কেঁড়াগাছি সীমান্তের বিপরীতে ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত দুই বাংলাদেশি হলেন- কলারোয়া উপজেলার কাকডাঙ্গা গ্রামের লোকমান সরদারের ছেলে খালেক সরদার (৪০) ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাশদহার পাঁচরখি গ্রামের শের আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম (৩৫)।

এ ঘটনায় বৃহষ্পতিবার দুপুরের দিকে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেঁড়াগাছির চারাবাড়ি সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ৩৮ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল আরমান হোসেন এবং ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিএসএফের ৭৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল রাকেশ কুমার।
বৈঠক শেষে আরমান হোসেন জানান, বিএসএফ বাংলাদেশী গরু রাখালদের মরদেহ হস্তান্তরের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

এদিকে, বেঁচে ফিরে আসা অন্য গরু রাখালদের বরাত দিয়ে স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই সীমান্তের বেশ কয়েক জন গরু রাখাল অন্যদিনের মতো বুধবার দিবাগত রাতেও গরু আনতে অবৈধপথে ভারতে যায়। বৃহষ্পতিবার ভোর রাতে গরু নিয়ে বাংলাদেশে ফেরার পথে কেঁড়াগাছির চারাবাড়ি সীমান্তের বিপরীতে ভারতের নেত্রোনকাটি নামক এলাকায় ব্রিজের পাশে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

কলারোয়া সীমান্তে বিজিবিভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪পরগণা জেলার স্বরূপনগর থানার তারালী ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা এ গুলি বর্ষণ করে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদহা ইউনিয়নের তলুইগাছা ওয়ার্ডের মেম্বর শাহজান আলী জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে কয়েকজন রাখাল ভারত থেকে গরু নিয়ে বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করছিল। এসময় তারালি ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা তাদের চ্যালেঞ্জ করে গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলে ওই দুই বাংলাদেশির মৃত্যু হয়।

বাঁশদহা ইউপি চেয়ারম্যান নাসিমুল হক বৃহষ্পতিবার সকালেই দুই বাংলাদেশি মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, নিহতদের সঙ্গে আরো যারা ছিলেন তারা পালিয়ে এসেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফিরে আসা ব্যক্তিরাই নজরুল ও খালেকের লাশ দেখে এসে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এদিকে, নজরুল ও খালেক নিহত হওয়ার খবর শুনে পরিবারের সদস্যদের আহাজারীতে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। অতিদরিদ্র পরিবারের কর্তা নজরুল ও খালেককে হারিয়ে সদস্যরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। তারা পৃথক ওই দু’টি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন পরিবারের সদস্যরা।

উল্লেখ, এর আগেও বিগত কয়েক বছরে কলারোয়া উপজেলা বেশ কয়েকজন গরু রাখাল অবৈধপথে ভারতে গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই