গরুর শোকে হৃদয় কাঁদে সাজু লালের

৮টি গরু নিয়ে ঢাকায় পা দিয়ে খুশিই হয়েছিলেন সাজু লাল মোল্লা। আশা ছিল, কোরবানির হাটে বিক্রি করে ভালোই মুনাফা হবে। সে অাশায় গুড়ে বালি। প্রচণ্ড গরম আর যাত্রার ধকলে তিনটি গরুই মরে গেছে। গরুর শোকে এখন কেঁদেকেটে চোখ লাল সাজু লালের।

রাজধানীতে শনিবার থেকে পশুর হাট শুরু। এর মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় গরু, ছাগল, মহিষ আসতে শুরু করেছে। সিরাজগঞ্জের সাজু লাল মোল্লা ১৮টি গরু নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে দুই কিলোমিটার দুরে বসিলা গরুর হাটে এসে পৌঁছান। আশা ছিল, এবার গরুর ভালো দাম পাবেন। কিন্তু শুরুতেই হোঁচট খেলেন তিনি। ১৮টি গরুর মধ্যে তিনটি গরু মরে গেছে। যাত্রাপথের ধকল আর প্রচণ্ড গরমে গরুগুলো মারা গেছে বলে জানিয়েছেন সাজু মোল্লা ও হাটের অন্য ব্যবসায়ীরা।

হাটের ইজারাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স আর এম ইন্টারন্যাশনালের এক তদারককারী বাদল বললেন, প্রথম গরুটি মারা যাওয়ার পর আরও দুটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওই দুটি গরুর চিকিৎসা করানোর জন্য পশু চিকিৎসক আনা হয়। কিন্তু বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

বাদল বলেন, চিকিৎসক বলেছেন গরমের কারণে রাজধানীর হাটগুলোতে পশুদের নাকাল অবস্থা। পশুগুলোকে স্বস্তি দিতে ভেজা কাপড় গায়ে জড়িয়ে রাখা হচ্ছে। গোসল করানো হচ্ছে। প্রচুর পানিও পান করানো হচ্ছে। মোহাম্মদপুরের ওই গরুর হাটের পাশেই একটি ছোট ডোবা রয়েছে। বিক্রেতারা গরুগুলোকে সেখানে গোসল করাচ্ছেন।

তিনটি গরুর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন সাজু মোল্লা। বললেন, গরু মারা যাওয়ায় তাঁর সোয়া লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিক্রি করতে পারলে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ পেতেন। তিনি বলেন, ‘বাকি ১৫টি গরু বিক্রি করে এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া কঠিন হবে। এবারের ঈদের আনন্দ আর আমার ঘরে আসবে না।’

হাটের অন্য ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রচণ্ড গরমে প্রথমে একটি গরু বসে পড়ে। কিছুক্ষণ পরে এটি মারা যায়। এরপর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্য দুটি গরু বসে পড়ে। এ অবস্থায় দুটি গরু জবাই করা হয়।

সাজু মোল্লা বললেন, প্রথমে মারা যাওয়া গরুটি একজন কিনে নিয়েছেন। তিনি এই গরু খামারের মাগুর মাছকে খাওয়াবেন। একই কারণে বাকি দুটি গরুও অন্য দুজন নিয়েছেন।

সরেজমিন বসিলা গরুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটে গরু রাখার জায়গা তৈরি করতে গিয়ে বালু ফেলা হয়েছে। ওপরে শামিয়ানা টাঙানো হয়েছে। সকাল থেকে বালুর ওপর রোদ পড়ে গরমের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। যেসব ব্যবসায়ী ভারী শামিয়ানা ও গাছের নিচে গরু রাখতে পেরেছেন, তাঁরা অন্যদের চেয়ে স্বস্তিতে আছেন।



মন্তব্য চালু নেই