গরমে শিশুর ত্বকের যত্ন নেবেন যেভাবে

পূর্ণবয়স্ক একজন মানুষের ত্বকের চেয়ে শিশুদের ত্বক ভিন্ন রকমের হয়। শিশুর ত্বক কেবল নরম ও কোমলই নয়, বরং অনেক বেশি সংবেদনশীল ও দুর্বল হয়। বড়দের ত্বকের চেয়ে শিশুদের ত্বক ২০-৩০% পাতলা হয়। তাই গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে শিশুর ত্বক সুরক্ষিত রাখার জন্য বিশেষ যত্ন নেয়া প্রয়োজন। গ্রীষ্মের তাপমাত্রা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেলে শিশুর মারাত্মক ঘুমের ব্যাধি “সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম” (SIDS) দেখা দিতে পারে। “গরমের দিনে শিশু গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকে, তাদেরকে জাগিয়ে তোলা কঠিন হয়ে পরে, যা SIDS এর ঝুঁকি বৃদ্ধি করে”- এমনটাই বলেন ফ্লোরিডার পিনেলাস পার্ক এর শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ব্রুস এপস্টেইন। আপনার শিশু সন্তানটি যাতে প্রচন্ড গরমেও শীতল ও সুরক্ষিত থাকতে পারে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করুন। চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই, গরমের দিনে শিশুর যত্ন নেয়ার কিছু টিপস জেনে নিই চলুন।

১। খাদ্য

শিশুর যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রে খাদ্য প্রধান ভূমিকা পালন করে। যেহেতু গরমে ঘামের সাথে দেহের তরল বাহির হয়ে যায় সেহেতু শিশুকে জলপূর্ণ রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। যদি শিশু শুধুমাত্র বুকের দুধ খায় তাহলে তাকে ঘন ঘন বুকের দুধ দিন হাইড্রেটেড থাকার জন্য। যদি আপনার শিশু শক্ত খাবার খাওয়া শুরু করে তাহলে তাকে খাদ্যের পাশাপাশি দুধ পান করান।

২। পানি

গ্রীষ্মের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা হচ্ছে স্বাস্থ্যকর পানি গ্রহণ করা। ৬ মাসের কম বয়সী শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নয়নশীল অবস্থায় থাকে। যার ফলে তারা সংক্রমণ প্রবণ হয়। তাই আপনার সন্তানকে সব সময় সিদ্ধ বা ফিল্টার করা পানি পান করান। পানিকে গরম করলে এর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়। মিনারেল ওয়াটার পান করানোর ক্ষেত্রে বোতলের মুখটি ভালোভাবে সিল করা আছে কিনা দেখে নিন। গরমে শিশুর পানিশূন্যতা রোধ করার জন্য দৈনিক ১২ আউন্স পানি পান করানো উচিৎ। শিশুর মধ্যে ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ দেখা যায় কিনা সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে। তাই শিশুর ইউরিন চেক করতে হবে।

৩। হিট র‍্যাশ

গরমের সময় হিট র‍্যাশ হওয়া খুবই স্বাভাবিক। হিট র‍্যাশ হলে শিশুর চেহারা, ঘাড়, বাহু ইত্যাদি স্থানে লাল হয়ে ফুলে যায়। তারা খুব অস্বস্তিতে ভোগে এবং চুলকানিও থাকতে পারে। উষ্ণ পানি দিয়ে আপনার শিশুকে গোসল করান। হালকা সাবান ব্যবহার করুন। ঢিলেঢালা জামা পড়ান। গরমের সময় ডায়াপার র‍্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সব সময় ডায়াপার না পড়িয়ে রেখে যখন প্রয়োজন হবে (যেমন- বাহিরে যাওয়ার সময়) ডায়াপার পড়ান। শিশুর চারপাশের পরিবেশ শীতল রাখা বাঞ্ছনীয়। সিলিং এ কোন কিছু ঝুলিয়ে না রাখাই ভালো। এয়ারকন্ডিশন শিশুর কোন ক্ষতি করেনা। ২৫ ডিগ্রী তাপমাত্রা শিশুর জন্য স্বাস্থ্যকর।

৪। মশা এবং ছারপোকা থেকে রক্ষা করুন

গরমের সময় পোকামাকড়ের উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। তাই আপনার শিশুকে

পতঙ্গের হাত থেকে রক্ষা করুন। প্রাকৃতিক উপাদানের স্প্রে ব্যবহার করুন। এয়ারকুলার থাকলে নিয়মিত পরিষ্কার করা উচিৎ। না হলে মশা ও অন্যান্য পতঙ্গের প্রজনন ক্ষেত্র হতে পারে এয়ার কুলারে জমে থাকা পানি।

৫। পরিধেয় বস্র

গরমে শিশুর ত্বকের সঠিক যত্ন নেয়ার জন্য সঠিক কাপড় নির্বাচন করাটা গুরুত্বপূর্ণ। গরমে শিশুকে বেশি জামা কাপড় পড়িয়ে রাখা ঠিক নয়। সুতির তৈরি ও ঢিলেঢালা পোশাক শিশুর জন্য আদর্শ। বাহিরে যাওয়ার সময় শিশুর জন্য হালকা রঙের কাপড় নির্বাচন করুন। ৬ মাসের কম বয়সি শিশুর ত্বক খুব বেশি দুর্বল থাকে। সানস্ক্রিন খোলসের মত কাজ করে। কিন্তু সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহারের পূর্বে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে নিন।

উপরের উল্লেখিত নিয়মগুলো অনুসরণের চেষ্টা করুন এবং গরমের সময়েও আপনার শিশুকে সুস্থ রাখুন।



মন্তব্য চালু নেই