গণশুনানি : যাত্রী হয়রানি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি

অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। যাত্রীদের জিম্মি করে নানা অপকৌশল বন্ধেরও দাবি জানানো হয়।

সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপ-কমিটি’র উদ্যোগে ভুক্তভোগী যাত্রী সাধারণের অভিযোগ গ্রহণের গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর আয়োজন করে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রধান উপদেষ্টা বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মাকসুদ বলেন, সরকারের এখতিয়ার রয়েছে ভাড়া বাড়ানোর। তাই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানি বন্ধে সরকারকেই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের দায় স্বীকার করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এতে অনিয়ম জেঁকে বসে নৈরাজ্য বেড়ে যাবে।

তিনি বলেন, গণপরিবহণ বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের সব মহলের মতামত উপেক্ষা করে সরকার কোনো প্রকার গণশুনানি না করে একতরফাভাবে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে।

আবুল মকসুদ বলেন, সরকার বাস-মিনিবাসের ভাড়া যাত্রী প্রতি কিলোমিটারে ১০ পয়সা বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু মালিকরা চিরাচরিত কায়দায় কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে। এতে করে নিম্ন আয়ের প্রতিটি নাগরিকের যাতায়াত ব্যয় ১৫শ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এতে করে মধ্যম আয়ের দেশে যাত্রার পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে; দুর্নীতি বেড়ে যাবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আনু মোহাম্মদ বলেন, যাত্রীদের জিম্মি করে অধিকার আদায়ের অপকৌশল বন্ধ করতে হবে। তা নাহলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ। গণপরিবহণের সংকট নিরসনের পাশাপাশি যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে মনোযোগী হওয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও যাত্রী কল্যাণ সমিতির কাছে দেশের যাত্রী সাধারণ নানাভাবে এই নৈরাজ্যের অভিযোগ জানাচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি দেশের বিশিষ্টজনদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয়ভিত্তিক ‘ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপ-কমিটি’ গঠন করেছে।নৈরাজ্যকর ভাড়া পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী যাত্রী সাধারণের মতামত গ্রহণের জন্য এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে শুনানি গ্রহণ করেন সৈয়দ আবুল মকসুদ, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান ও কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি ড. গোলাম রহমান, আনু মোহাম্মদ, সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী, গ্রিন ভয়েস-এর সমন্বয়ক মো. আলমগীর কবির।

শুনানিকালে যাত্রী কল্যাণ সমিতির নেতারা বলেন, ইতিমধ্যে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ঢাকা শহরে ৪০ ভাগ যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হচ্ছে দাবি করে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন। এছাড়াও দূরপাল্লার বিআরটিসি বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে বিআরটিসির চেয়ারম্যানকে শোকজ করেছেন। এতে প্রমাণ হয় যানবাহনে কীভাবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হচ্ছে। সরকার যেহেতু দায় স্বীকার করেছে, এখন সরকারকেই এই নৈরাজ্য বন্ধ করতে হবে।



মন্তব্য চালু নেই