গণভোটে হেরে গেলেন মোরালেস

চতুর্থ মেয়াদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংবিধান সংশোধনীর জন্য আয়োজিত গণভোটে হেরে গেলেন বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস।

মোরালেস (৫৬) বর্তমানে তৃতীয় মেয়াদে দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সংবিধান অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি টানা তিনবার প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবেন। ২০১৯ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ লক্ষ্যে চতুর্থবারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সংবিধান সংশোধনীর জন্য গণভোটের আয়োজন করেন মোরালেস। প্রাক্তন এই কোকা-কৃষক ও বলিভিয়ার প্রথম আদিবাসী প্রেসিডেন্ট মোরালেস ২০২৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার জন্য এ সংবিধান সংশোধনীর আয়োজন করেন।

ইপসোস ভোটে ‘না’ এর পক্ষে রায় পড়েছে ৫২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়েছে ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ। একই সঙ্গে মরি ভোটে ৫১ থেকে ৪৯ শতাংশ ভোটার ‘না’ এর পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

দক্ষিণ আমেরিকার দরিদ্রতম দেশ বলিভিয়ায় ২০০৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইভো মোরালেস। তিনি ছিলেন দেশটির প্রথম আদিবাসী প্রেসিডেন্ট। ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যাপক সংস্কারকাজ হাতে নেন তিনি। দেশটির প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে আয়ের সিংহভাগ অর্থ জনকল্যাণমূলক কাজ এবং অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করেন। সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার এই প্রেসিডেন্ট ২০১৪ সালে তৃতীয়বারের মতো ৬১ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনর্নির্বাচিত হন।

বিপুল ভোটে প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর মোরালেসের আত্মবিশ্বাস ছিল চতুর্থবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য গণভোটে জনগণ তার পক্ষে রায় দেবে। ২০২৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থেকে দেশটির দারিদ্র্য পুরোপুরি নির্মূলের এজেন্ডা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। কিন্তু জনগণ হয়তো চায়নি দীর্ঘ মেয়াদে কেউ ক্ষমতায় থাকুক। ফলে মোরালেসের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তারা।
মোরালেসের এক কট্টর সমর্থক ১০ সন্তানের জননী লুরদেস অ্যালারকন বলেন, ‘গত কয়েক বছরের মধ্যে রাজধানী লা পাজের বাইরে দরিদ্র অধ্যুষিত গ্রামাঞ্চল আচোকালায় আমি নতুন নতুন স্কল দেখেছি; সেখানকার স্বাস্থ্যসেবা ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এই কারণে আমি “হ্যাঁ” এর পক্ষে ভোট দিয়েছি। আমি মনে করি অস্থিতিশীলতা একটি দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আমরা চাই আরো ভালো বছর ও ভালো কিছু কর্মপরিকল্পনার এবং এর জন্য মোরালেসই উপযুক্ত।’

অন্যদিকে মোরালেসের বিরুদ্ধে রয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। তার বিরোধীপক্ষরা মোরালেস প্রশাসনের দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে সাধারণ মানুষকে কাছে টানতে পেরেছেন। মধ্যবিত্ত পরিবারের ৩৭ বছর বয়সি সুসানা ম্যাকিয়াস ‘না’ ভোট দেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, এটা বর্তমান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে তার একধরনের বিদ্রোহ। ‘আমরা অনুভব করি, আমরা একটি গ্যাঁড়াকলে আটকা পড়েছি। সঠিক বা উপযুক্ত লোকটি আমাদের নেতৃত্ব দিতে পারছে না।’

তথ্যসূত্র : রয়টার্স অনলাইন।



মন্তব্য চালু নেই