‘খুনির সঙ্গে কিসের সংলাপ’

নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সংলাপের দাবি নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খুনি, ধর্ষক, লুটেরাদের সঙ্গে’ সংলাপ করার মতো ‘দৈন্য দশায়’ তার সরকার পড়েনি।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির ‘কঠোর’ আন্দোলনের হুমকির জবাবে তিনি বলেছেন, সেই আন্দোলন মোকাবিলা করার ক্ষমতা সরকারের আছে।

শুক্রবার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, “কার সঙ্গে সংলাপ করব? কেউ যদি আপনাকে খুন করার চেষ্টা করে, তাহলে আপনি তার সঙ্গে সংলাপ করতে পারবেন?

গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার সংলাপের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “তাও দেশের স্বার্থে সেই চেষ্টা করেছি।”

এখন বিএনপি নতুন করে সংলাপের যে দাবি তুলেছে তা নাকচ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কার সঙ্গে আলোচনায় বসতে বলেন? যারা দুর্নীতি করেছে, যারা বোমাবাজি করেছে, যারা গ্রেনেড হামলা করেছে, সংসদ সদস্যদের হত্যা করেছে, যারা আইভি রহমানের হত্যাকারী, আমার দলের নেতাকর্মীদের হত্যাকারী, সংখ্যালঘুদের ওপর যারা আক্রমণ করেছে, শত শত মানুষ ও কোরআন শরীফ যারা পুড়িয়েছে; তাদের সাথেই আমার বৈঠকে বসতে হবে? কেন?

“এতোটা রাজনৈতিক দৈন্যতায় আমরা পড়িনি, এতোটা রাজনৈতিক দৈন্যতায় বাংলাদেশের মানুষ পড়েনি।”

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনের অভিজ্ঞতা জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন প্রধানমন্ত্রী।

ওই সফরে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন।

গত নির্বাচনের আগে জাতিসংঘের সংলাপের আহ্বান এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক চাপের কথা মনে করিয়ে দিয়ে এক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান এবার জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে তেমন কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এবার কিন্তু আর কিছু বলেন টলেন নাই। বোধ হয় কোনো সমস্যা দেখতে পাচ্ছে না। এখন আর রাজনৈতিক সমস্যা দেখতে পাচ্ছেন না।”

৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি-জামায়াত জোট টানা হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচি দিলে সারা দেশে সহিংসতায় বহু লোক হতাহত হন।

মাঝখানে প্রায় নয় মাস দেশের পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও বিএনপির নতুন করে কঠোর আন্দোলনে নামার হুমকির প্রসঙ্গে টেনে এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চান এক সাংবাদিক।

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “আন্দোলনের হুমকি তো আমরা শুনেই যাচ্ছি। আর উনার আন্দোলন মানে হলো মানুষ খুন করা। তারা যদি আবারো আন্দোলনের নামে মানুষ খুন করে, তাহলে জনগণকে বলব, শুধু সরকার কেন, দেশবাসীসহ সকলকে মিলে সেটা প্রতিহত করতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই ভেবেছিলেন যে বিএনপির বর্জনের মধ্যে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন হয়ে গেলে দেশে গৃহযুদ্ধ বেঁধে যাবে।

“কোনো কিছু হয়েছে? হয়নি। কারণ বিএনপির মানুষ খুন করা আন্দোলন কেউ গ্রহণ করে নাই। জামায়াতের ওই মানুষ খুন করার আন্দোলন দেশবাসী গ্রহণ করে নাই।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মানুষের অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে যে তারা কী করতে পারে। … কঠোর আন্দোলন কতো কঠোর হতে পারে সেই কঠোরতা দেখার ক্ষমতা সরকারের আছে এই কথাটা বলতে পারি।”

প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশের মানুষকে আরো সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আরো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে যে আমরা এটা গ্রহণ করব না, আর সরকার যা করার তা ঠিকই করবে। ”

বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার প্রতি ইংগিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, “তিনি আরো কঠোর আন্দোলন নিয়ে নামুক না, আসুক… তারপর দেখা যাবে।”



মন্তব্য চালু নেই