খুচরা বাজারে মসলার দাম চড়া

পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গরম হয়ে উঠেছে মসলার বাজার। পাইকারিতে সামান্য বাড়লেও খুচরায় দেড় থেকে দুইগুন দাম বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা। প্রতিবারের মতো এবারো ঈদে মসলার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের পকেট কাটছে অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। আর হঠাৎ দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, মসলার চাহিদা বেশি হয় কোরবানির ঈদে। তবে চাহিদা বাড়লেও দেশের পাইকারি বাজারে মসলার সংকট নেই। ফলে দাম বাড়ার কোনো যুক্তি নেই। বরং আগের চেয়ে মসলার দাম অনেকটা কম বলে জানান তারা।

রোববার রাজধানীর মালিবাগ, মুগদা, মতিঝিল, শান্তিনগর, যাত্রাবাড়ি এলাকায় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি জিরা ৪৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকায়, তেঁজপাতা ২০০ টাকা থেকে ২২০ টাকায়, দারুচিনি ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায়, লবঙ্গ ১২০০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকায়, এলাচি ১২০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকায়, কালো গোল মরিচ ১০০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকায়, সাদা গোল মরিচ ১৩০০ টাকা থেকে ১৪০০ টাকায়, জয়ফল ৯০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায়, যত্রীক ১৫০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা, কিসমিস ৩০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকায়, আলু বোখারা ৬৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকায়, কাঠবাদাম ৬৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকায়, পোস্তাদানা ৮৫০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায় টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া খুচরা বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছে প্রতি কেজি ৩৮-৪২ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৪-৩২ টাকায়। প্রকারভেদে কেজি প্রতি দেশি রসুন কেজি প্রতি ১৭০-১৯০ টাকা, আদা ১০০-১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এবার পাইকারি বাজারে মসলার দাম বাড়েনি দাবি করে পাইকারি মসলা বিক্রেতা আরিফ হোসেন জানান, শুনেছি খুচরা বাজারে ব্যবসায়ীরা বেশি দামে মসলা বিক্রি করছে। আর এতে দোষ হচ্ছে পাইকারি ব্যবসায়ীদের। ক্রেতারা মনে করছে পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে সরকারে মনিটরিং কমিটি যদি সরেজমিনে মসলার বাজার পরিদর্শন না করে তাহলে তো অসৎ ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বিক্রি করবে। এটাই স্বাভাবিক।

মতিঝিলের মসলা ব্যবসায়ী শাহজাহান জানান, রোজায় মসলার দাম বাড়তি ছিল। তা আর কমেনি। এছাড়াও গত সপ্তাহে এলাচ, জিরা, আলু বোখারাসহ বেশ কয়েকটি মসলার দাম বেড়েছে। তাই আমাদের বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

তবে পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, বাজারে মসলার দাম এখনো স্থিতিশীল। সরবারহ বেশি থাকায় ঈদে দাম বাড়ার কারণ নেই বলে জানিয়েছেন তারা।

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আদা, জিরা ও এলাচের দাম বেড়েছে। আর এক মাসের ব্যবধানে আদার দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। এলাচের দাম বেড়েছে ১২ শতাংশ।

যাত্রাবাড়ি বাজারের মসলা কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী ফারুক আহমেদ জানান, জিরা কিনতে এসেছি; ২৫০ গ্রাম ইরানি জিরা ১৪০ টাকা চাচ্ছে। এক মাস আগেও ৮০ টাকায় কিনেছি। এছাড়াও আদার দামও কেজিতে ৪০ টাকা বেশি নিচ্ছে। আর এলাচের দাম আকাশ ছোঁয়া।

তিনি বলেন, ঈদের আগে সব সময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়- বাজারের ভোগ্যপণ্য নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। কিন্তু তার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যায় না। ফলে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ায়।

ফারুক আরো বলেন, আমাদের আয় সীমিত। বাজেট করে খরচ করতে হয়। কোনো পণ্যের দাম বেড়ে গেলে বাড়তি টাকা খরচ হয়। যার কারণে বিপাকে পড়তে হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের।



মন্তব্য চালু নেই